Logo
Logo
×

জাতীয়

অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানকে সিএমএইচে স্থানান্তর

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২০, ১০:৪৩ এএম

অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানকে সিএমএইচে স্থানান্তর

অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। ফাইল ছবি

জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান রাজধানীর ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতাল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়েছে।

শনিবার (৯ মে) দুপুরে তাকে সিএমএইচ হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের ছেলে আনন্দ জামান সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমার বাবা দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। এখন আরও একটু উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে তাকে সিএমএইচে নিয়ে আসা হয়েছে। এখানে আসার পর বাবার শারীরিক অবস্থা আগের তুলনায় একটু ভালো আছে। তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল।

এর আগে বার্ধক্যজনিত সমস্যার কারণে গত ২৭ এপ্রিল রাজধানীর ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি হন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সেখানে চিফ কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক ডা. খন্দকার কামরুল ইসলামের অধীনে চিকিৎসা নেন তিনি। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতাল বদলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেও একই ধরনের সমস্যার কারণে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল একবার।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘পদ্মভূষণ’ পেয়েছেন দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।  নিজের বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে নানা সফলতা পেয়েছেন এ গুণী শিক্ষক।

বাংলা একাডেমীর বৃত্তি ছেড়ে দিয়ে আনিসুজ্জামান যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেন তখন তার বয়স মাত্র ২২ বছর। প্রথমে অ্যাডহক ভিত্তিতে চাকরি হলো তিন মাসের। তারপর পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের গবেষণা বৃত্তি পেলেন। এর কয়েক মাস পর অক্টোবর মাসে আবার যোগ দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায়। ১৯৬২ সালে তার পিএইচডি হয়ে গেল। তার পিএইচডির অভিসন্দর্ভের বিষয় ছিল 'ইংরেজ আমলের বাংলা সাহিত্যে বাঙালি মুসলমানের চিন্তাধারা (১৭৫৭-১৯১৮)'।

আনিসুজ্জামান ১৯৬৪ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন ডক্টরাল ফেলো হিসেবে বৃত্তি পেয়ে। ১৯৬৯ সালের জুন মাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের রিডার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই অবস্থান করেছিলেন। পরে ভারতে গিয়ে প্রথমে শরণার্থী শিক্ষকদের সংগঠন 'বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি'র সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তারপর বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে যোগ দেন।

১৯৭৪-৭৫ সালে কমনওয়েলথ অ্যাকাডেমি স্টাফ ফেলো হিসেবে আনিসুজ্জামান লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে গবেষণা করেন। জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা-প্রকল্পে অংশ নেন ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত। ১৯৮৫ সালে তিনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেন ২০০৩ সালে। পরে সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক হিসেবে আবার যুক্ত হন।

মওলানা আবুল কালাম আজাদ ইন্সটিটিউট অব এশিয়ান স্টাডিজ (কলকাতা), প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং ফেলো ছিলেন আনিসুজ্জামান এ কৃতি শিক্ষক। এছাড়াও তিনি নজরুল ইনস্টিটিউট ও বাংলা একাডেমীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি শিল্পকলা বিষয়ক ত্রৈমাসিক পত্রিকা যামিনী এবং বাংলা মাসিকপত্র কালি ও কলম-এর সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

আনিসুজ্জামান প্রত্যক্ষভাবে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে ১৯৫০ সাল থেকে তার পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা। মুজিবনগরে তিনি তাজউদ্দীনের বিচক্ষণ কর্মকাণ্ড সরেজমিনে কাছ থেকে দেখেছেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেও তার ছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। ভাষা আন্দোলন, রবীন্দ্র উচ্ছেদবিরোধী আন্দোলন, রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী আন্দোলন এবং ঐতিহাসিক অসহযোগ আন্দোলনে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন।

অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান সিএমএইচ

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম