চালু হচ্ছে ঢাকা-বরিশাল বাংলাদেশ বিমান, বাড়ল ভাড়া
সাইদুর রহমান পান্থ, বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২১, ০৪:০৪ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
একদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে যাত্রীসেবার মান আরো বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন, অন্যদিকে করোনার অজুহাতে এক বছর ধরে বন্ধ বরিশালের বিমান সার্ভিস।
এদিকে বেসরকারি দুইটি বিমান সংস্থা ব্যবসা করে নিচ্ছে ঢাকা-বরিশাল আকাশ পথে। যদিও দীর্ঘ এক বছর পর রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমানের ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। কিন্তু তাও ভাড়া বৃদ্ধি করে। এখন থেকে ৩ হাজার ২০১ টাকা করে সর্বনিম্ন ভাড়া হবে বিমান বাংলাদেশের।
একইভাবে গত ১২ মার্চ থেকে ৩ হাজার ২শ' টাকার স্থলে ৩ হাজার ৪শ' টাকা করে যাত্রী ভাড়া আদায় করছে বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস বাংলা ও নভোএয়ার।
বরিশাল বিমানবন্দর সূত্র জানা গেছে, কোভিড পরিস্থিতির কারণে গত বছরের ২১ মার্চ বরিশাল-ঢাকা আকাশপথে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে সপ্তাহে ৫ দিন ৭৪ আসনের ফ্লাইট পরিচালনা করত প্রতিষ্ঠানটি। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে গত বছর ১২ জুলাই থেকে প্রতিদিন বেসরকারি নভোএয়ার একটি এবং ১৬ জুলাই থেকে ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস দুটি ফ্লাইট চালু করে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বরিশাল কার্যালয়ে ২১ কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করতেন। মাসখানেক আগে বরিশাল থেকে এয়ারলাইন্সটির ১১ কর্মীকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিমান কার্যালয়টিও বরিশাল থেকে স্থানান্তরের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। যদিও বরিশাল থেকে বিমানের কার্যালয় গুটিয়ে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন বিমান কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ব্যবসা সফলভাবে এ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস এবং নভোএয়ার। চলতি মার্চ মাসে প্রায় ৮৫ ভাগ যাত্রী নিয়ে ফ্লাই করেছে ইউএস বাংলা ও ৮০ ভাগ যাত্রী পরিবহন করেছে নভোএয়ার।
বর্তমানে ইউএস বাংলা প্রতিদিন দুইটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে ও নভোএয়ার একটি করে ফ্লাই পরিচালনা করে। সেখানে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বরিশালের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও বিমানযাত্রীরা। বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট চালু না হওয়ায় স্থানীয় যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
কয়েকজন যাত্রী বলেন, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে বেসরকারি দুটি উড়োজাহাজ সংস্থা এই রুটে ভালো ব্যবসা করছে। তখন যাত্রী সংকট দেখিয়ে বিমানের ফ্লাইট বন্ধ করে রাখার বিষয়টি রহস্যজনক।
বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, বেসরকারি বিমান লাভবান হওয়ায় তারা দিনে দুইটি ট্রিপ দিচ্ছে। সেখানে লোকসানের অজুহাতে বিমানের ফ্লাইট বন্ধ রাখা অন্য উদ্দেশ্যের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বেসরকারি এয়ারলাইন্সের সঙ্গে বিমানের কর্মকর্তাদের যোগসাজশের যে অভিযোগ উঠেছে সেটা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
যদিও বেসরকারি দুইটি ফ্লাইটেই ৩ হাজার ২শ' টাকার স্থলে এখন ৩ হাজার ৪শ' টাকা করে নিচ্ছে। এ বিষয়ে নভোএয়ারের মিডিয়া অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ নীলাদ্রি মহারত্নের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। যদিও তিনি ফুয়েল কস্ট বাড়ার কারণে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
বরিশাল বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, এক বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ফের ২৬ মার্চ থেকে ফ্লাইট শুরুর পরিকল্পনা নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষে এই ফ্লাইট শুরু করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। ফ্লাইটি প্রতিদিন সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশে যাত্রা করবে ও সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে বরিশাল থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাবে। তাদের সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ২০১ টাকা।
এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশের বরিশালের ব্যবস্থাপক আবদুর রহিম তালুকদার এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়ে দেন।
বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাগী ২৬ মার্চ থেকে বাংলাদেশ বিমান চালু হচ্ছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরকে কেন্দ্র করে এটি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ও আমি বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে আলাপ করে এই ফ্লাইট চালু করছি। প্রতিদিন সকালে একটি করে ফ্লাইট ও বৃহস্পতিবার বিকালে একটি ফ্লাইট চলবে।
