অপারেশনের আগে গান শুনে ভয় পেয়েছিলেন আসাদুজ্জামান নূর (ভিডিও)
যুগান্তর প্রতিবেদন
৩০ জুন ২০২২, ১৬:৫২:১৪ | অনলাইন সংস্করণ

বাংলাদেশেই নিজের দুই চোখের অপারেশন করিয়েছেন প্রখ্যাত অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর। অপারেশনের সময়কারগল্প জানিয়েছেন জনপ্রিয় এ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।
আসাদুজ্জামান নূরবলেন, আমার প্রথম চোখ অপারেশনের কয়েক মাস পরেই আরেকটির অপারেশন হয়েছে। ডা. মাহবুব (চক্ষু বিশেষজ্ঞ) খুবই স্মার্ট মানুষ, রুচিশীল মানুষ। গান শুনতে ভালোবাসেন। ওনার চেম্বারেও গান বাজে। রোগীরা গান শুনতে শুনতে তার সঙ্গে কথা বলে। যেদিন আমার সার্জারি হবে সেদিন আমাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেলেন। এসময় একটা রবীন্দ্র সংগীত হচ্ছে-‘যতবার আলো জ্বালাতে চাই, নিভে যায় বারে বারে’।
এ গান শুনে আমার মনের ভেতর তো ভয় ঢুকে গেল। ডাক্তার সাহেবের যে রুমে গান বাজছে, সে রুমে আমার চোখে আলো জ্বালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আর গান বাজছে ‘যতবার আলো জ্বালাতে চাই, নিভে যায় বারে বারে’।
চিকিৎসকদের উদ্দেশে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আপনাদের আমি অনুরোধ করব-গান আপনারা যত খুশি বাজান, কিন্তু গানের সিলেকশনটা একটু ভেবে চিন্তে করবেন।
তার ওই বক্তব্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাঝে হাসির রুল পড়ে যায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা.মিল্টন হলে সচেতনতা মাস উপলক্ষে বুধবার বাংলাদেশ সোসাইটি অব ক্যাটারাক্ট অ্যান্ড রিফ্ল্যাকটিভ সার্জনস (বিএসসিআরএস) একটি আলোচনা সভায় বিএসসিআরএস সভাপতি অধ্যাপক ডা.জাফর খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর এমপি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর আরও বলেন, সুস্থ থাকতে হলে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি। আমরা যেভাবে টেলিভিশন, মোবাইল, কম্পিউটার দেখি, এতে করে চোখের খুবই ক্ষতি হয়। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে এই ব্যাপারটি বেশি লক্ষ্য করা যায়।
তিনি আরো বলেন, শিশুরা বইয়ের চেয়ে মোবাইল ফোন দেখতে পছন্দ করে। এভাবে চলতে থাকলে তো শুধু চোখে না, শারীরিকভাবেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে সকল বয়সী মানুষকে তার চোখের বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
বিএসএমএমইউ ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০৩২ সালের মধ্যে দেশে ৩২০০ জন চক্ষু চিকিৎসকের প্রয়োজন পড়বে। এখন আছে মাত্র এক হাজার ৪০০ জন। আগামী বছরগুলোতে এ সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
তিনি বলেন, চিকিৎসাসহ স্বাস্থ্যখাতে জনবল ও দক্ষ জনবল খুবই কম। এ সংকট কমাতে হবে। চিকিৎসক কোর্সে ছাত্র বাড়াতে হবে। শুধু চক্ষু চিকিৎসক তৈরিই নয়,তাদের সার্জারিও জানতে হবে।
অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, চোখের ছানি নিয়ে রোগীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। অনেক রোগীর ছানি সার্জারির প্রয়োজন হলেও রোগীরা তা করতে চাচ্ছেন না। তাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং অপারেশন ভীতি দূর করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ রচিত ও গ্রাজুয়েট নার্সিং বিভাগের (ইংরেজি) প্রভাষক আনোয়ার পারভেজ সম্পাদিত আই প্রোবলেমস এন্ড সলুশনস বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সোসাইটি অব ক্যাটারাক্ট অ্যান্ড রিফ্ল্যাকটিভ সার্জনসের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মোস্তাক আহমেদ ছানি সচেতনতা নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শাহীন আকতার, কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো: শওকত কবীর,সহযোগী অধ্যাপক ডা. তারেক রেজা আলী প্রমুখ অংশ নেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
অপারেশনের আগে গান শুনে ভয় পেয়েছিলেন আসাদুজ্জামান নূর (ভিডিও)

বাংলাদেশেই নিজের দুই চোখের অপারেশন করিয়েছেন প্রখ্যাত অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর। অপারেশনের সময়কার গল্প জানিয়েছেন জনপ্রিয় এ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।
আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমার প্রথম চোখ অপারেশনের কয়েক মাস পরেই আরেকটির অপারেশন হয়েছে। ডা. মাহবুব (চক্ষু বিশেষজ্ঞ) খুবই স্মার্ট মানুষ, রুচিশীল মানুষ। গান শুনতে ভালোবাসেন। ওনার চেম্বারেও গান বাজে। রোগীরা গান শুনতে শুনতে তার সঙ্গে কথা বলে। যেদিন আমার সার্জারি হবে সেদিন আমাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেলেন। এসময় একটা রবীন্দ্র সংগীত হচ্ছে-‘যতবার আলো জ্বালাতে চাই, নিভে যায় বারে বারে’।
এ গান শুনে আমার মনের ভেতর তো ভয় ঢুকে গেল। ডাক্তার সাহেবের যে রুমে গান বাজছে, সে রুমে আমার চোখে আলো জ্বালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আর গান বাজছে ‘যতবার আলো জ্বালাতে চাই, নিভে যায় বারে বারে’।
চিকিৎসকদের উদ্দেশে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আপনাদের আমি অনুরোধ করব-গান আপনারা যত খুশি বাজান, কিন্তু গানের সিলেকশনটা একটু ভেবে চিন্তে করবেন।
তার ওই বক্তব্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাঝে হাসির রুল পড়ে যায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা.মিল্টন হলে সচেতনতা মাস উপলক্ষে বুধবার বাংলাদেশ সোসাইটি অব ক্যাটারাক্ট অ্যান্ড রিফ্ল্যাকটিভ সার্জনস (বিএসসিআরএস) একটি আলোচনা সভায় বিএসসিআরএস সভাপতি অধ্যাপক ডা.জাফর খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর এমপি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর আরও বলেন, সুস্থ থাকতে হলে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি। আমরা যেভাবে টেলিভিশন, মোবাইল, কম্পিউটার দেখি, এতে করে চোখের খুবই ক্ষতি হয়। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে এই ব্যাপারটি বেশি লক্ষ্য করা যায়।
তিনি আরো বলেন, শিশুরা বইয়ের চেয়ে মোবাইল ফোন দেখতে পছন্দ করে। এভাবে চলতে থাকলে তো শুধু চোখে না, শারীরিকভাবেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে সকল বয়সী মানুষকে তার চোখের বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
বিএসএমএমইউ ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০৩২ সালের মধ্যে দেশে ৩২০০ জন চক্ষু চিকিৎসকের প্রয়োজন পড়বে। এখন আছে মাত্র এক হাজার ৪০০ জন। আগামী বছরগুলোতে এ সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
তিনি বলেন, চিকিৎসাসহ স্বাস্থ্যখাতে জনবল ও দক্ষ জনবল খুবই কম। এ সংকট কমাতে হবে। চিকিৎসক কোর্সে ছাত্র বাড়াতে হবে। শুধু চক্ষু চিকিৎসক তৈরিই নয়,তাদের সার্জারিও জানতে হবে।
অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, চোখের ছানি নিয়ে রোগীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। অনেক রোগীর ছানি সার্জারির প্রয়োজন হলেও রোগীরা তা করতে চাচ্ছেন না। তাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং অপারেশন ভীতি দূর করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ রচিত ও গ্রাজুয়েট নার্সিং বিভাগের (ইংরেজি) প্রভাষক আনোয়ার পারভেজ সম্পাদিত আই প্রোবলেমস এন্ড সলুশনস বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সোসাইটি অব ক্যাটারাক্ট অ্যান্ড রিফ্ল্যাকটিভ সার্জনসের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মোস্তাক আহমেদ ছানি সচেতনতা নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শাহীন আকতার, কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো: শওকত কবীর,সহযোগী অধ্যাপক ডা. তারেক রেজা আলী প্রমুখ অংশ নেন।