Logo
Logo
×

জাতীয়

নিহত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর বাবার আর্তি

আমি মরে গিয়েও যদি সুইটি বাঁচত

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৩, ০২:১৯ পিএম

আমি মরে গিয়েও যদি সুইটি বাঁচত

নিরাপত্তারক্ষী বাবার মেয়ে সুইটি। মফস্বল অঞ্চল থেকে শত বাধা উপেক্ষা করে বড় স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হন ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়ছিলেন ইংরেজি বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে। আর কটি বছর পেরিয়ে ধরতেন পরিবারের হাল। ঘাম ঝরানো বাবাকে দেবেন বিশ্রাম এই প্রত্যয় নিয়ে এগোচ্ছিলেন সুইটি।

বাবাও স্বপ্নের জাল বুনিয়েছিলেন, মেয়ে একদিন বড় অফিসার হবে। কিন্তু এক নিমিশেই বিলীন হয়ে গেল সব স্বপ্ন। একসঙ্গে থেকে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেলেন বাবা, পরপারে পাড়ি দিলেন সুইটি। মেয়ে হারিয়ে স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল বাবার। 

কিছু দিন আগে সুইটি ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জ সদরের পাঁচুরিয়া এলাকায় গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। রোববার সকালে বাবা মো. মাসুদ মিয়ার সঙ্গে বাসে ঢাকায় ফিরছিলেন। গোপালগঞ্জ থেকে তারা উঠেছিলেন ইমাদ পরিবহণের বাসটিতে।

যে বাসটি রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় খুলনা থেকে ছেড়ে আসে, সেই ইমাদ পরিবহণের বাসটি পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ সময় দুমড়েমুচড়ে যায় বাসটি। এতে বাবা মাসুদ মিয়া বেঁচে গেলেও প্রাণ হারান সুইটি।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নারীসহ ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলে আরও ১০ জন চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন কমপক্ষে আরও ২৫ জন। তারা শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

আহত গোপালগঞ্জ সদরের পাঁচুরিয়া এলাকার মো. মাসুদ মিয়া এসেনশিয়াল ড্রাগসের নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কর্মরত। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে সুইটিকে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন ঢাকায়। মেয়েকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল বাবা মাসুদ মিয়া। এখন বাকরুদ্ধ। আহতাবস্থায় শিবচরের পাঁচ্চর ইসলামিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।

মো. মাসুদ মিয়া আহাজারি করতে করতে বলেন, মেয়েকে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়া হলো না। আমাকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেল। আমি মরে গিয়ে যদি মেয়েটা বেঁচে থাকত!

দুর্ঘটনায় সুইটির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুর পুলিশ সুপার মাহফুজ আলম। তিনি আজ টেলিফোনে যুগান্তরকে বলেন, সুইটি বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক।   

 

মাদারীপুর

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম