প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ করতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৩, ০১:১৫ এএম
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বর্তমানে প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে টিকে থাকতে হলে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন অপরিহার্য। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ছাত্রের সংখ্যা বর্তমানে ৯৮ শতাংশ হলেও তা শতভাগে উত্তীর্ণ করতে হবে। একইসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া সংখ্যা রোধ করতে হবে। এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির পাশাপাশি মান সম্মত শিক্ষা প্রদানেও সাফল্য অর্জন করতে হবে। না হলে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার কাংখিত লক্ষমাত্রায় পৌঁছান যাবে না।
রোববার সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে ‘প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারি বিনিয়োগ স্থানীয় অভিজ্ঞতা ও করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর মাত্র ৭০০ কোটি টাকার বাজেটের সময়ও শিক্ষায় বিনিয়োগ করতে বঙ্গবন্ধু কার্পণ্য করেননি। বর্তমানেও সরকারের আমলে শিক্ষার বাজেট অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি যেন যথাযথ ব্যবহার হয় সেদিকে আমাদের নজর রাখতে হবে। এছাড়া শিক্ষকদের কাজের মাধ্যমে নিজেদের সম্মান অর্জন করতে হবে এবং নেতিবাচক পথ পরিহার করার আহবান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। এ সময় তিনি প্রবন্ধে তুলে ধরে বলেন, দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ নেই। বর্তমানে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের গড় সংখ্যা ৬, যা শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১: ২৯। এ ছাড়া জরিপে ৩০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৪টি বিদ্যালয়ে পাঁচটির কম শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। বাকিগুলোর মধ্যে আটটি বিদ্যালয়ে পাঁচটির বেশি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে এবং বাকি আটটি বিদ্যালয়ে পাঁচটি করে শ্রেণিকক্ষ রয়েছে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, জাতীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে সেইসঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধি এডুকেশন অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট টীম প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাদিয়া রশীদ বলেন, করোনাকালীন প্রাথমিক শিক্ষায় ক্ষতি নিতে পুষিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। এছাড়াও প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে কমিউনিটি সম্পৃক্ততা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) আয়োজনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম, বাংলাদেশ এবং উন্নয়ন সংস্থা ইএসডিও-এর সহযোগিতায় এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সিপিডির ফেলো নাগরিক প্লাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ফেনী-১ আসনের সংসদ-সদস্য শিরীন আক্তার।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন সিপিডির ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান, ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধি কাউন্সেলর ইউরাতে স্মলস্কাইট মার্ভিল, ব্রাকের শিক্ষা উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের প্রোগ্রাম হেড সমীর রঞ্জন নাথ, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের এডুকেশন গ্লোবাল প্র্যাকটিসের জ্যৈষ্ঠ অর্থনীতিবিদ সাঈদ রাশেদ আল জায়েদ যশ প্রমুখ।