মোহাম্মদপুরে গ্রুপ প্রধানসহ গ্রেফতার ৩
সাতজনের কবজি কেটেছে আনোয়ার
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৯ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সন্ত্রাসী কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান মো. আনোয়ার ওরফে কবজি কাটা আনোয়ারকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। সোমবার ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-২ এর একটি দল। পরে আদাবর থেকে তার দুই সহযোগী ইমন (২০) ও ফরিদকে (২৭) গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি সামুরাই, দুটি ছুরি, ৮ কেজি গাঁজা এবং একটি প্রাইভেটকার জব্দ করেছে র্যাব। মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
র্যাব
জানায়, মোহাম্মদপুর, আদাবর ও রায়েরবাজারসহ আশপাশের এলাকায় মাদক, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির
রাজত্ব গড়ে তুলেছিল কবজি কাটা গ্রুপ। এই রাজত্ব গড়তে গিয়ে আনোয়ার ৭ জনের কবজি কাটাসহ
বহু মানুষকে কুপিয়ে আহত ও পঙ্গু করেছে। এলাকায় আধিপত্য বজায় রাখতে ও মানুষের মাঝে ত্রাস
ছড়াতে প্রতিপক্ষ বা সাধারণ মানুষের কবজি কেটে নিয়ে টিকটক বানাতো সন্ত্রাসী শুটার আনোয়ার
ওরফে কব্জি কাটা আনোয়ার।
সংবাদ
সম্মেলনে র্যাব-২ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খালিদুল হক হাওলাদার বলেন, আনোয়ার স্বীকার
করেছে যে, সে তিনজনের কবজি কেটেছে। তবে আমাদের তদনে্ত দেখা গেছে সে অন্তত সাতজনের হাত
কেটে দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচষ্টো, চাদাবাজি, অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ
আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
অতিরিক্ত
ডিআইজি আরও বলেন, আনোয়ারের গ্রুপের স্টাইল হলো, যে ব্যক্তির ওপর হামলা করা হবে তার
আশপাশের রাস্তায় কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি করা। এরপর তারা যানজট কমাতে সহযোগিতা করার নামে
কৃত্রিম ব্লক সৃষ্টি করে। পরে আনোয়ার এসে টার্গেট করা ব্যক্তির ওপর হামলা করে। তার
সামনে ও পেছনে একাধিক টিম থাকত।
আনোয়ারের
মদদদাতাদের বিষয়ে তিনি বলেন, আমারা আনোয়ারের পেছনে দীর্ঘদিন লেগেছিলাম। আমাদের কাছে
তথ্য আছে, মোহাম্মদপুরের এক্সেল বাবু নামে এক ব্যক্তি তাকে মদদ দিচ্ছে। সে আড়ালে থেকে
আনোয়ারকে ছত্রছায়া দেয়। আমরা কাজ করছি, তথ্য-প্রমাণ পেলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
অতিরিক্ত
ডিআইজি খালিদুল বলেন, আনোয়ার ২০০৫ সালে বাগেরহাট থেকে জীবিকার সন্ধানে ঢাকায় আসে।
ঢাকায় এসে বিশুদ্ধ খাবার পানি পরিবহন করা আনোয়ার প্রথমে ছিনতাই ও বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি
শুরু করে। ২০২৪ সালে মানুষের কবজি কেটে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে
দিয়ে নিজেকে ‘কবজি কাটা গ্রুপের' প্রধান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। আনোয়ার নিজের শক্তি
বৃদ্ধি এবং আধিপত্য ধরে রাখতে এলাকার কিশোরদের মাদক, অস্ত্র ও অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে
ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে ব্যবহার করে আসছিল। অপরাধ জগত্ থেকে উপার্জিত টাকার
মাধ্যমে সে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়ে উঠে।
ওই
এলাকায় অপরাধীদের মদতদাতাদের বিষয়ে তিনি বলেন, ৫ অগাস্টে পর পরিবর্তনের জের ধরে সন্ত্রাসীরা
তত্পর হয়ে ওঠে। এরপর থেকে মোহাম্মদপুর এলাকায় যেৌথ বাহিনীর অভিযানে পাচ শতাধিক ছিনতাইকারী
গ্রেফতার করা হয়েছে। মোহাম্মদপুর ও আদাবর কেন্দ্রিক কোনো সন্ত্রাসী ও গডফাদারের
স্থান হবে না।
