Logo
Logo
×

জাতীয়

‘দুইজনের জবানবন্দি প্রত্যাহার করলে শিশুটিকে আদালতে যেতে হতো না’

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৫ পিএম

‘দুইজনের জবানবন্দি প্রত্যাহার করলে শিশুটিকে আদালতে যেতে হতো না’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় করা পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় দুই আসামি ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি প্রত্যাহার করলে শিশুটিকে আদালতে যেতে হতো না বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। 

রোববার সকালে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল এ মন্তব্য করেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন। তদন্ত কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে। যে মামলা তদন্তের মধ্যে থাকে, সেই মামলার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রিপোর্ট) দেওয়ার অধিকার শুধু পুলিশ বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। যদি একটি মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) হয়ে যায়, শুধু তখন আইন মন্ত্রণালয়ের মামলা প্রত্যাহার করার এখতিয়ার বা সুযোগ থাকে।

আসিফ নজরুল আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার যেসব ষড়যন্ত্রমূলক, মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা করেছিল, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তখনকার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশপ্রধানের (আইজিপি) সঙ্গে বৈঠক করে অনুরোধ করেছিলেন- এ মামলাগুলোর ক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি যেন নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সেটা অনুযায়ী তারা সব মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট (চূড়ান্ত প্রতিবেদন) দিয়েছে বলে জানিয়েছে। তবে জানানো হয়েছিল, অল্প কিছু মামলা এখনো রয়ে গেছে, যেগুলো হত্যাসংক্রান্ত। শিশুটির মামলাটি এমন একটি মামলা, যেখানে দুজন আসামি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। 

আইন উপদেষ্টা বলেন, তিনি খবর নিয়ে জেনেছেন, আসামিরা যদি ১৬৪ ধারার জবানবন্দি প্রত্যাহার না করেন, তাহলে এ মামলার নিষ্পত্তি বা ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়া খুবই দুষ্কর। এটা সম্পূর্ণ পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারাধীন বিষয়। এখানে আইন মন্ত্রণালয়ের করার কিছু নেই।

আসিফ নজরুল বলেন, তাদের যতই সদিচ্ছা থাকুক, একটি মামলা চার্জশিট পর্যায়ে আসার পরই শুধু আইন মন্ত্রণালয় কিছু করতে পারে। তার আগে কোনো কিছু করার সুযোগ আইন মন্ত্রণালয়ের নেই। উপদেষ্টার প্রত্যাশা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। যারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন, তারা যেন সেটি প্রত্যাহার করার পদক্ষেপ নেন, যাতে এ মামলাটি খুব দ্রুত প্রত্যাহার করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

আরেক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, তিনি ওই শিশুর ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাকে বলেছেন, এটাই হচ্ছে প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় যদি এগোনো হয়, তাহলে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব। তিনি তাকে প্রক্রিয়াটি বুঝিয়ে বলেছেন। আসিফ নজরুল বলেন, তারা আইন দ্বারা পরিচালিত হন। আইনের বাইরে, যেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ, সেটা আইন মন্ত্রণালয় করতে পারবে না। যেটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাজ, সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় করতে পারবে না। যেটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ, সেটা মৎস্য মন্ত্রণালয় করতে পারবে না। এটা সবার বোঝার কথা। যতই প্রত্যাশা থাক, যতই আন্তরিকতা থাক, যতই ইচ্ছা থাক, এই কাজটি প্রক্রিয়াগতভাবে ঠিক না হওয়া পর্যন্ত অন্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার তাদের (আইন মন্ত্রণালয়) কিছু করার নেই। তাদের পরামর্শ ও অনুরোধ করা ছাড়া কিছু করার নেই। 

আসিফ নজরুল বলেন, এ মামলায় যে দুজন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়নি। ওই সময় পুলিশ অত্যাচার করে, নির্যাতন করে বা ভয় দেখিয়ে জবানবন্দি নিয়েছে। বর্তমান সরকারের বয়স আট মাস হয়ে গেছে, অথচ জবাববন্দি এখনো কেন প্রত্যাহার করে নেননি? জবানবন্দি প্রত্যাহার করে নিলে আজ এই শিশুটিকে আদালতে যেতে হতো না বলে মন্তব্য করেন উপদেষ্টা।

আসিফ নজরুল

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম