অনেক হয়রানি ও বিদ্বেষমূলক মামলা হচ্ছে: আইন উপদেষ্টা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫১ এএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, অনেক হয়রানি ও বিদ্বেষমূলক মামলা হচ্ছে। অন্যের জায়গা-জমি ও ব্যবসা দখল করার জন্যও মামলা হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকার পুলিশ ও আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের প্রতিকার দেওয়ার চেষ্টা করছে।
সোমবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন আইন উপদেষ্টা। সেখানে হয়রানিমূলক মামলার অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের আইনে কোথাও তো মামলা করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা দেওয়া নেই। যে যার মতো মামলা করছে। এখানে অনেক হয়রানিমূলক মামলা হচ্ছে, বিদ্বেষমূলক মামলা হচ্ছে, অন্যের জায়গা-জমি দখল, ব্যবসা দখলে নেওয়ার জন্য মামলা হচ্ছে। এগুলো অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক কাজ ও পরিতাপের বিষয়।
তিনি বলেন, মামলা করে ফেলার পর পুলিশ-আদালত প্রশাসনের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রতিকার দেওয়ার চেষ্টা করছি। যখন এত বেশি লোককে আসামি করা হয়, এত মামলা করা হয়, আমাদের জন্যও কঠিন হয়ে যায়।
অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, মামলা হওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, অভিযোগের কোনো বস্তুনিষ্ঠতা পাওয়া না গেলে কাউকে যেন গ্রেফতার না করা হয়। আবার আদালতের পক্ষ থেকেও যেখানে বস্তুনিষ্ঠতা নেই, সেখানে যতভাবে আইনগত প্রতিকার দেওয়া সম্ভব, সেটি দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, এখন কিছু কিছু ক্ষেত্রে, আপনি ইরেশ যাকেরের নাম বলেছেন, এ রকম ছাড়াও আরও কিছু ক্ষেত্রে মামলা হয়েছে। আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ করব, মামলাগুলো যারা করে, তাদের একটু খুঁজে বের করেন। মামলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন, তাদের চেহারা উন্মোচন করেন। তারা যদি কোনো হীন উদ্দেশ্যে, শত্রুতামূলক অন্যের ব্যবসা, জায়গা-জমি দখলের উদ্দেশে কিংবা চাঁদার উদ্দেশে এ ধরনের মামলা করে থাকেন, আপনাদের প্রতি অনুরোধ তাদের ভূমিকা প্রকাশ করেন, জনগণকে তা পরিষ্কার দেখিয়ে দিন। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে আরও কী ব্যবস্থা নেব, সারাক্ষণ এটা চিন্তাভাবনা করছি।
বক্তব্যে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর বিড়ম্বনা কমানো, সময় বাঁচানো ও অর্থ ব্যয় কমানো তার প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য ইতোমধ্যেই তারা বেশ কিছু সংস্কার কাজ করেছেন।
সংশোধনের কিছু উদাহরণ দিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, দেওয়ানি কার্যবিধির যুগান্তকারী বেশ কিছু সংশোধন করা হয়েছে, যা উপদেষ্টা পরিষদে নীতিগতভাবে অনুমোদন হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের আগামী সভায় এটি চূড়ান্ত অনুমোদন হতে পারে।
ফৌজদারি কার্যবিধিতেও ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, দেশে গড়ে প্রতিবছর প্রায় ৫ লাখ মামলা হয়। আর জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয় ৩৫ হাজার মামলা। সংস্থাটিতে বছরে দুই লাখ মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হলে আদালতে মামলার চাপ কমপক্ষে ৪০ শতাংশ কমে যাবে।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সেরা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সেরা প্যানেল আইনজীবীর হাতে সম্মাননাসূচক ক্রেস্ট তুলে দেন আইন উপদষ্টো।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক সৈয়দ আজাদ সুবহানী।
