সচিবালয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত
দ্রুত অধ্যাদেশ বাতিল দাবিতে সরকারকে আলটিমেটাম
যুগান্তর প্রতিদবেদন
প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ১০:২২ পিএম
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে সরকারকে আলটিমেটাম দিয়েছেন কর্মচারী নেতারা। দ্রুত অধ্যাদেশটি বাতিল না করলে তারা দেশের আট বিভাগে সম্মেলন করবেন। সেখান থেকে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে। সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শিগগির প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্মচারী নেতা নুরুল ইসলাম। এদিকে গত কয়েক দিনের মতো মঙ্গলবারও অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেছেন সরকারি কর্মচারীরা। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের পর তারা দুই উপদেষ্টাকে অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি সংবলিত স্মারকলিপি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় কর্মচারীরা সচিবালয়ে ৬ নম্বর ভবনের সামনে বাদামতলায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। এরপর তারা মিছিল নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের নিচে যান। সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে তারা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বরাবর স্মারকলিপি দেন।
সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতৃত্বে এ আন্দোলন হচ্ছে। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে ঐক্য ফোরামের চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর ও কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম, কো-মহাসচিব মো. নজরুল ইসলামসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষোভে কর্মচারীরা ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, সচিবালয় জেগেছে’, ‘মানি না মানব না, ফ্যাসিবাদী কালো আইন’, ‘মানি না মানব না, অবৈধ কালো আইন’ স্লোগান দেন। বিক্ষোভ সমাবেশে ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা সরকারি চাকরি আইন বাতিল চাই এবং ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা চাই। একই সঙ্গে ফ্যাসিবাদের দোসর কর্মকর্তাদের বিদায় করতে হবে। অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে দেশের আটটি বিভাগে সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শিগগির প্রস্তুতি চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন নুরুল ইসলাম।
আরেক কো-চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর বলেন, এ অধ্যাদেশ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার বা বাতিল না হওয়ার আগ পর্যন্ত আন্দোলন আগের মতো চলবে। ফোরামের কো-মহাসচিব নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আইন উপদেষ্টার নেতৃত্ব গঠিত কমিটি চাকরি অধ্যাদেশ সংশোধনের সুপারিশ করবেন বলে আমরা শুনেছি। কিন্তু আমরা সেটি মেনে নেব না।’
ঈদের ছুটির পর সোমবার ফের আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। গতকালও তারা সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে। এমন বিধান রেখে ২৫ মে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়। এর আগে ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন হয়। ২৪ মে থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠনগুলো সম্মিলিতভাবে আন্দোলন করে আসছে। তারা এই অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসাবে অবহিত করছেন।
