Logo
Logo
×

জাতীয়

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি

সরকারি হিসাবে নিহত ২৯ জন, আহত ৬৯

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৫, ০২:৪৭ এএম

সরকারি হিসাবে নিহত ২৯ জন, আহত ৬৯

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করেছে সরকার। এতে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২৯ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। আর বিভিন্ন হাসপাতালে শিক্ষার্থীসহ চিকিৎসাধীন আছেন ৬৯ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে ১২ জন। পরিচয় মেলেনি ৬টি লাশের। প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী সচিব ফয়েজ আহম্মদ বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

২৯ জনের মধ্যে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ১১ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ১৫ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন, লুবানা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে একজন (পরিচয় জানা যায়নি) ও ইউনাইটেড হাসপাতালে একজন মারা গেছেন। আর অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে বর্তমানে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ৪৪ জন, সিএমএইচে ২১ জন, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে একজন, শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন ও হিউম্যান এইড রিসার্চ ল্যাব অ্যান্ড হাসপাতালে একজন চিকিৎসাধীন আছেন।

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে মারা যাওয়া ১১ জন হলেন- তানভীর (১৪), আদনান ফাইয়াজ (১৪), মাহেরীন (৪৬), বাপ্পি (৯), মাসুকা (৩৭), এবি শামীম (১৪), শায়ান ইউসুফ (১৪), এরিকসন (১৩), আরিয়ান (১৩), নাজিয়া (১৩) ও নাফি (৯)। সিএমএইচে মারা যাওয়া ১৫ জন হলেন- রজনী ইসলাম (৩৭), এমডি সামিউল করিম (৯), ফাতেমা আক্তার (৯), মেহেনাজ আফরিন হুমায়রা (৯), সারিয়া আক্তার (১৩), নুসরাত জাহান আনিকা (১০), সাদ সালাউদ্দিন (৯) ও সায়মা আক্তার (৯)। তাদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া বিধ্বস্ত বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের লাশ এরই মধ্যে দাফন করা হয়েছে। ওই হাসপাতালে মারা যাওয়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৬ জন রয়েছেন। এ ছয়জনের লাশ মর্গে রাখা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে ৯ বছরের শিশু জুনায়েতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। লুবানা জেনারেল হাসপাতালে অজ্ঞাতপরিচয় (বয়স উল্লেখ নেই) একজনের লাশ রয়েছে। আর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে উমায়ের নূর আসফিক নামে ১১ বছর বয়সি এক শিশুর লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৬৯ জনের মধ্যে পাঁচজন শিক্ষক, ৪১ জন শিক্ষার্থী, একজন স্কুল স্টাফ, একজন ফায়ার ফাইটার, একজন পুলিশ, ১৪ জন সেনাসদস্য, একজন আয়া, একজন ইলেকট্রিশিয়ান ও অন্য চারজন রয়েছেন।

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৪৪ জনের মধ্যে ৩৫ জন শিক্ষার্থী, চারজন শিক্ষক, একজন ইলেকট্রিশিয়ান ও একজন আয়া রয়েছেন। অন্য তিনজনের পরিচয় জানা যায়নি। আহতদের মধ্যে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে বর্তমানে আটজন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা হলেন- মাহাতাব (১৪), মাসুমা (৩২), আইয়ান (১৪), মাহিয়া (১৫), জারিফ (১২), শিক্ষিকা মাহফুজা খাতুন (৪৫), নাবিদ নাওয়াজ (১২) ও সাইমন (১৮)। এখানে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ২১ জন হলেন- তাসনুবা মাহবিন (১১), ফারজানা ইয়াসমিন (৪৫), তাসনিয়া (১০), শ্রেয়া (৯), রাইসা (১১), পায়েল (১২), শিক্ষিকা নিশি (২৮), নুসরাত (১২), তৌফিক (১৩), ইউসা (১১), জাকির (৫৫), সায়েবা (৯), আলবিনা (১০), মুনতাহা (১০), রুপি বড়ুয়া (১০), জায়ানা (১৩), নিলয় (১৩), শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম (৩৭), শিক্ষিকা সুমাইয়া লরিন (৩০), লরিন কাব্য (১৩) ও কাফী আহমেদ (১০)। এছাড়া আহত পুরুষদের মধ্যে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন মাকিন (১৫), আরিয়ান আফিফ (১২), রোহান (১৪), রাইয়ান (১৪) ও আবিদুর রহমান (১০)। আহত নারীদের মধ্যে এইচডিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন সামিয়া (৯), সাইবা জাহান (১০), তাসনিয়া (১৫), মেহেরি আইমান (১০), সায়রা (১০), সবুজা বেগম (৪০) ও হাফসা খান (১১)। জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন আয়ান খান (১২) ও কাজী আমজাদ সাঈদ (২০) নামে দুজন।

সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৮ জনের মধ্যে পাঁচজনকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। দুজনকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে ২১ জন চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে শিক্ষার্থী ৩ জন, শিক্ষক ১ জন, স্কুল স্টাফ ১ জন, ফায়ার সার্ভিস কর্মী ১ জন, পুলিশ ১ জন ও সেনাসদস্য ১৪ জন। সিএমএইচে বার্ন আইসিইউতে আছেন চারজন। তারা হলেন- আকিব (১২), আনোয়ার (৩৪), আতিক (২১) ও বিল্লাল হোসেন (১২)।

এছাড়াও অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে চিকিৎসাধীন আছেন- আহসান (৪৫), হাবিবুল্লাহ (২৪), আব্দুল্লাহ (২৪), মুত্তাকিন (২৪), শাকিল (২৬), নাফিস (২২), হযরত (২২), মানিক (৪৬), সোহাগ (২৭), ফারহান শাফি (১৭), কামরুজ্জামান (২৫), শাহরিয়ার (২৪), রাকিবুল (২৩), বাবুল (২২), রবিউল (২২), কামাল (২১) ও তাহসান (২৪)।

অগ্নিদগ্ধ অন্যদের মধ্যে বর্তমানে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে জান্নাতুল মাওয়া নামে ১১ বছরের এক শিশু ও শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেহেরুন্নেসা নামে ১৪ বছরের এক শিশু চিকিৎসাধীন আছে। উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন একজন (পরিচয়ের তথ্য পাওয়া যায়নি)। হিউম্যান এইড রিসার্চ ল্যাব অ্যান্ড হাসপাতালে তাকরিম হক নামে ১৬ বছরের এক শিশু আইসিইউতে আছেন।

এদিকে বিকালে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে-বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা নির্ধারণে স্কুল কর্তৃপক্ষের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি করা হয়েছে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলমকে। সদস্য হিসাবে উপাধ্যক্ষ (প্রশাসন) মিসেস খাদিজা আক্তার, প্রধান শিক্ষিকা মিসেস লুৎফুন্নেসা লোপা এবং কো-অর্ডিনেটর মনিরুজ্জামান মোল্লাকে রাখা হয়েছে। অভিভাবকদের থেকে তিনজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। কমিটি আগামী তিন দিনের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবে। এছাড়া নিখোঁজদের কোনো তথ্য প্রয়োজন হলে দিয়াবাড়ি ক্যাম্পাসের কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ঘটনাপ্রবাহ: উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত


আরও পড়ুন

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম