ঋণ জালিয়াতি
সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাভেদসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ১০:৫৩ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ক্ষমতা অপব্যবহার করে ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলার আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে কাগুজে প্রতিষ্ঠান রিলায়েবল ট্রেডিংয়ের নামে জাল নথিপত্রে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক চট্টগ্রামের পোর্ট শাখা থেকে ১৫ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে আত্মসাৎ করেন। বুধবার মামলাটি করা হয়েছে বলে জানান দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
মামলার আসামিরা হলেন-সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী ও ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমীলা জামান, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বজল আহমেদ বাবুল, সাবেক পরিচালক আনিসুজ্জামান চৌধুরী, আখতার মতিন, ইউনুছ আহমদ, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, আসিফুজ্জামান চৌধুরী, রোকসানা জামান চৌধুরী, বশির আহমেদ, আফরোজা জামান, সৈয়দ কামরুজ্জামান, মো. শাহ আলম, প্রফেসর ড. মো. জোনাইদ শফিক, ড. কনক কান্তি সেন, ড. অপরূপ চৌধুরী ও ব্যাংকটির সাবেক পরিচালক তৌহিদ সিপার রফিকজ্জামান।
এছাড়া আসামি তালিকায় আছেন-ব্যাংকের সাবেক অফিসার আবু হেনা মো. ফখরুল ইসলাম, সাবেক ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক ক্রেডিট অফিসার জিয়াউল করিম খান, সাবেক এফএভিপি ও ক্রেডিট ইনচার্জ, মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল, সাবেক এফএভিপি ও ম্যানেজার অপারেশন মীর মেসবাহ উদ্দীন হোসাইন, সাবেক ভিপি ও চট্টগ্রাম পোর্ট শাখার প্রধান আব্দুল হামিদ চৌধুরী, মডেল ট্রেডিংয়ের মালিক মোহাম্মদ মিছাবাহুল আলম, ইম্পেরিয়াল ট্রেডিংয়ের মালিক মো. আব্দুল আজিজ ও আরামিট থাই অ্যালুমিনিয়ামের ডিজিএম শাহরিয়ার হোসেন।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনের তথ্যমতে, রিলায়েবল ট্রেডিং নামে কোনো বাস্তব প্রতিষ্ঠান না থাকা সত্ত্বেও ইউসিবির চট্টগ্রাম পোর্ট শাখার কর্মকর্তারা যাচাই-বাছাই ছাড়াই একটি হিসাব খুলে দেন।
এরপর ওই প্রতিষ্ঠানের নামে টাইম লোনের আবেদন করা হলে শাখার কর্মকর্তারা মিথ্যা তথ্য সংবলিত পরিদর্শন প্রতিবেদন তৈরি করেন এবং শাখার ক্রেডিট কমিটির সদস্যরা যাচাই ছাড়াই সেই ভুয়া প্রতিবেদনসহ ঋণের সুপারিশ পাঠান প্রধান কার্যালয়ে। ইউসিবির প্রধান কার্যালয়ের ক্রেডিট কমিটি ঋণ প্রস্তাবে ৯টি নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ থাকা সত্তে¡ও ৪৫৪তম পরিচালনা পর্ষদ সভায় ঋণটি অনুমোদন দেয়।
অনুমোদনের পর, রিলায়েবল ট্রেডিংয়ের তথাকথিত মালিক হিসাবে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর আরামিট গ্রুপের একজন কর্মচারীকে সাজানো হয়। তার অনুপস্থিতিতে এবং স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণের পুরো টাকা বিভিন্ন ভুয়া প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর ও রূপান্তর করা হয়।
পরে সেই অর্থ আরামিট সিমেন্ট পিএলসি ও আরামিট থাই অ্যালুমিনিয়াম লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবে আনা হয়েছে। প্রতারণা, জালিয়াতি, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৪০৬/৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২)(৩) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
এর আগে ২৪ জুলাই আরেক ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রী এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও এমডিসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
এছাড়া ১৭ এপ্রিল ২০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার অভিযোগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করে দুদক।
