পিআরআই সেমিনারে বক্তারা
নির্বাচিত সরকার ছাড়া অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অসম্ভব
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৩:৫৪ পিএম
রাজধানীর বনানীতে সংস্থাটির কার্যালয়ে বাংলাদেশ মান্থলি ম্যাক্রোইকনোমিক ইনসাইটস শীর্ষক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সংগৃহীত ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নির্বাচিত সরকার ছাড়া অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা সম্ভব নয়। বর্তমান সরকারের সময়ে অনিশ্চয়তার কারণে কোন বিনিয়োগই আসবে না। দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ না আসলে কর্ম সংস্থান হবে না। সেইসঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্য উন্নতিও হবে না ফলে সার্বিক অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে না।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটট (পিআরআই) সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর বনানীতে সংস্থাটির কার্যালয়ে বাংলাদেশ মান্থলি ম্যাক্রোইকনোমিক ইনসাইটস শীর্ষক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
পিআরআই এর নির্বাহী পরিচালক ড. খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের চিফ ইকনোমিস্ট ড. আকতার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পিআরআই এর পরিচালক ড. আহমেদ আহসান।
আলোচক হিসেবে ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ এবং হাবিবুল্লাহ এন. করিম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই এর মূখ্য অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, খেলাপি ঋণ, বিনিয়োগে স্থবিরতা, কর্মসংস্থান না হওয়া, কম রাজস্ব আদায়, দক্ষ মানব সস্পদের অভাব এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা সবচেয়ে বড় সংকট। এছাড়া বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ, সুশাসনের অভাবসহ বিভিন্ন বিষয় দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক করেছে।
উপস্থাপিত প্রবন্ধে ড. আশিকুর রহমান বলেন, গত কয়েকবছর ধরে সুশাসনের অভাবে সার্বিক অর্থনীতিকে ব্যাপকভাবে দুর্বল করেছে। ব্যাংক খাতের দুর্বলতা আছে। এছাড়া মুদ্রানীতির দুর্বলতা এবং রাজস্ব নীতির দুর্বলতা পেছনে রয়েছে সুশাসনের অভাব। যেমন ভ্যাট আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাজনৈতিক চাপের কারণে সেটি হয়নি। তাই সুশাসনকে বাইপাস করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন বা অর্থনৈতিক অবস্থা ধরে রাখা সম্ভব হবে না। বর্তমান পরিস্থিতি সেটাই প্রকাশ হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আকতার হোসেন বলেন, খাদ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি মানুষের জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করছে। এর ফলে দারিদ্র্য বেড়ে যায়। সহজেই মূল্যস্ফীতি কমবে না। আমরা মূল্যস্ফীতি ৩/৪ শতাংশে নামিয়ে আনতে নানাভাবে চেষ্টা চালাচ্ছি। তবে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, একচেঞ্জ রেটের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভের স্থিতিশীলতা অর্ধনীতিতে কিছুটা আশা জাগাচ্ছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, একমাত্র পোশাক শিল্পে উপর নির্ভরতা কমিয়ে অন্যান্য শিল্পের দিকেও নজর দিতে হবে। যেকোন সরকারি নীতি করার সময় অবশ্যই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলা উচিত। কেননা ব্যবসা বাণিজ্যই যদি ঠিক না থাকে তাহলে নীতিমালা কার জন্য। আমরা সরকারের শত্রু নই, আমরা পার্টনার হিসেবে সহায়তা করতে চাই। স্টেকহোল্টারদের সঙ্গে না বসে যেকোন নীতি নিলে তা কার্যকর হবে না। আমরা মনে করি এই মুহুর্তে এলডিসি উত্তরণের জন্য আমরা প্রস্তুত নই। তাই এলডেসি পেছানো জরুরি। কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এসব শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই আত্নহত্যা করছেন। গত ৬০ বছরে বাটা লস করেনি। কিন্তু এবার লস করেছে। সিঙ্গারের মতো কোম্পানি লস করেছে। অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হচ্ছে। মানুষ বেকার হচ্ছেন। ফলে চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি বেড়েছে। আমরা এখন একটি রাজনৈতিক সরকারের জন্য অপেক্ষা করছি। যাতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসে।
