নবিজির আগমনে মানবজাতি মুক্তির সন্ধান পেয়েছিল: কাদের গনি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:২৫ পিএম
ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, আল্লাহর বিধান প্রতিপালন ও প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর সুন্নাতের অনুসরণই দুনিয়ায় শান্তি ও পরকালে মুক্তির একমাত্র পথ। পবিত্র কুরআনের বর্ণনায়- প্রিয় নবীর ভালোবাসা মুমিনের ইমান; আর তার রেখে যাওয়া আদর্শ, তথা সুন্নাতের অনুসরণই হচ্ছে তাকে ভালোবাসার প্রমাণ। ঘোরতর শত্রুদের সঙ্গেও সর্বাবস্থায় মহানবী ছিলেন কোমল এবং সর্বোত্তম আচরণের মূর্ত প্রতীক।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
আহলা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন মাওলানা শাহসূফি সৈয়দ মুহাম্মদ এমদাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন- মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ মাইনুল ইসলাম জুনায়েদ, মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল, শহিদুল ইসলাম বাবুল, হাজী সেলিম আহমেদ সালেম প্রমুখ।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বিশ্বের সব সৃষ্টির ইহকালীন শান্তি ও পারলৌকিক মুক্তির জন্য আল্লাহ মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে পাঠিয়েছিলেন। প্রথম নবী হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে নবুয়তের ধারাবাহিকতায় তিনি এ পৃথিবীতে আগত সর্বশেষ নবী এবং রাসূল। তার আগমনে বিশ্বজাহান আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছিল। আকাশে বাতাসে ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হয়ে উঠেছিল মুক্তির বার্তা। তার আগমনে স্রষ্টাকে ভুলে যাওয়া মানবজাতি নতুন করে সন্ধান পেয়েছিল মুক্তিপথের।
তিনি বলেন, তাওহিদের অমিয় বাণী কালিমা ‘লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ তথা 'এক আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই' - এই মহাসত্যের বুলন্দ আওয়াজ ছড়িয়ে পড়েছিল জগতময়। সত্যের পথে, শান্তির পথে, মুক্তির পথে ফিরে আসার সুযোগ লাভ করেছিল জগতবাসী। লাত, মানাত, উযযা, হুবলদের মতো মিথ্যে এবং অসার উপাস্যদের বিদায়ের বারতা ঘোষিত হয় বিশ্বময়। মানবসৃজিত অন্ধকার এবং পঙ্কিলতার পথ ছেড়ে বনি আদম পুনরায় এক আল্লাহর সামনে মাথা নত করার শিক্ষা লাভ করে। আজকের বিশ্ববাসীর কল্যাণ ও মুক্তিও তার রেখে যাওয়া সুমহান আদর্শ ধারণ করার মধ্যেই। সেই মহান আদর্শের ছায়াতলেই হোক আমাদের পথচলা।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন ইনসানে কামিল বা পরিপূর্ণ মানব। মানবীয় অবয়বে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার গুণাবলি যতটুকু ধারণ করা সম্ভব, তার সর্বোচ্চ সমাহার ঘটেছিল মহানবীর মধ্যে। আয়েশা (রা.) এর ভাষায়, প্রিয় নবীর জীবন ছিল জীবন্ত কুরআন। তার শুভাগমনে ইসলাম পরিপূর্ণ হয়।
তিনি বলেন, মুহাম্মদ (সা.) এর সুমহান আদর্শ ও সর্বোত্তম চরিত্র অনুসরণ করার মধ্যেই সফলতা, সার্থকতা, মুক্তি এবং চূড়ান্ত কামিয়াবি। ইহকাল পরকালে সফলতা ও নাজাতের জন্য বিশ্ববাসী প্রত্যেকের জন্য তার অনুসরণই একমাত্র কর্তব্য।
ইতিহাসের অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ (সা.) উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও তাকে মানবজাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সংস্কারক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী বিখ্যাত পণ্ডিত মাইকেল এইচ হার্ট তার বহুল আলোচিত ‘দ্য হান্ড্রেড’ গ্রন্থে হজরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ’ হিসেবে স্থান দিয়েছেন। ব্রিটিশ মনীষী সাহিত্যিক জর্জ বার্নার্ড শ বলেছেন, এই অশান্ত পৃথিবীতে তার মতো একজন মানুষের প্রয়োজন। তিনি বেঁচে থাকলে পৃথিবীতে সুখের সুবাতাস বইত। তার আগমনে যে বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল, দুনিয়াজুড়ে তা বিস্তৃত হয়েছে।
ইসলাম প্রতিশোধে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, পৃথিবীর তাবৎ আদর্শ এবং মতবাদ খুঁজেও এর দ্বিতীয় একটি নজির পাওয়া যাবে না। ইসলামের শিক্ষা, ‘প্রতিবাদের শ্রেষ্ঠ পন্থা উত্তম আচরণ’। প্রিয় নবি সারাজীবনের আদর্শ ছিল এটাই। মন্দের প্রতিবাদ তিনি কোনোদিন মন্দ কাজ দিয়ে করেননি। প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষেত্রে তার সারা জীবনের চরিত্র ছিল উত্তম এবং শ্রেষ্ঠতম আচরণ প্রদর্শন করতেন তিনি। ঘোরতর শত্রুদের সঙ্গেও সর্বাবস্থায় তিনি ছিলেন কোমল এবং সর্বোত্তম আচরণের মূর্ত প্রতীক।
