Logo
Logo
×

রাজনীতি

আবরারের কবর জিয়ারত করলেন নাহিদ-আখতার-তাসনিম জারা-সামান্থারা

Icon

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৫:৫২ পিএম

আবরারের কবর জিয়ারত করলেন নাহিদ-আখতার-তাসনিম জারা-সামান্থারা

ছবি: যুগান্তর

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অসম চুক্তি এবং পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে ছাত্রলীগের মারধরে নিহত আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এসসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতারা। 

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুর পৌনে ১ টার দিকে কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের রায়ডাঙ্গা গ্রামের গোরস্থানে পৌঁছান তারা। ১ টার দিকে তারা আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেন। 

তারা আবরারের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ ও মা রোকেয়া খাতুনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। 

পরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর ১ টা ২৮ মিনিটের দিকে তারা কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। তারা কুষ্টিয়া শহরে পদযাত্রা করবেন। এরপর তার মেহেরপুরে যাবেন। 

জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার এবং নতুন সংবিধানের দাবিতে দেশব্যাপী ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। 

এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার কুষ্টিয়া শহর সহ বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পথসভা ও পদযাত্রা করবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এসসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতারা। 

সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে কুষ্টিয়া শহরে পৌঁছান এবং অভিজাত আবাসিক হোটেলে রাত্রিযাপন করেন তারা। রাত ১০টার দিকে তারা পাবনায় পথসভা ও পদযাত্রা করেন। সেখানে এ কর্মসূচি শেষ করে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, সাইফুল্লাহ হায়দার, আসাদুল্লাহ আল গালিব, আবু সাঈদ লিয়ন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী এবং কেন্দ্রীয় সদস্য ফিহাদুর রহমান দিবস প্রমুখ। 

এ সময় এনসিপির অঙ্গ সংগঠন যুব শক্তি ও শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় নেতারা এবং কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অসম চুক্তি এবং পানি আগ্রাসন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নৃশংস কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করে সংগঠনের ক্যাডাররা। পরে রাত ৩ টার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। একটি হত্যা মামলা করা হয়। ওই মামলায় সব মিলিয়ে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। 

২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

১৯৯৮ সালে ১২ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের রায়ডাঙ্গা গ্রামে আবরার ফাহাদের জন্ম। তার বাবার নাম বরকত উল্লাহ এবং মায়ের নাম রোকেয়া খাতুন। 

আবরার কুষ্টিয়া মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা এবং কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে পড়াশোনা করেন। নটরডেম কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করেন। 

২০১৮ সালের ৩১ মার্চ আবরার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। পড়াশোনা চালাকালীন তাকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বর্তমানে বুয়েটে মেকানিক্যাল বিভাগে অধ্যায়নরত।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম