এনসিপি নেতাদের ওপর হামলায় ভারত জড়িত কিনা- তদন্ত করা উচিত
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৫, ১১:১৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যে হামলায় প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত জড়িত রয়েছে কিনা-তা গভীর তদন্ত করে দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এনসিপি ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত ‘গোপালগঞ্জে জুলাই যোদ্ধাদের ওপর নৃশংস হামলার প্রতিবাদ এবং নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও বিচার’ দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানান।
আরিফুল ইসলাম আদিব বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর আমাদের প্রতি বেশি রাষ্ট্রের নানা বাহানা আমরা দেখেছি। সেই রাষ্ট্র পতিত ফ্যাসিস্ট দলের প্রধানকে তার রাজধানীতে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে নস্যাৎ করতে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তার ধারাবাহিকতায় গত পরশু গোপালগঞ্জে গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদের হত্যার উদ্দেশ্যে যে সশস্ত্র হামলা হয়েছে, সেই হামলার মধ্যে প্রতিবেশী রাষ্ট্র দিল্লির ষড়যন্ত্র আছে। কারণ, যুগান্তরে আজকে এসেছে শেখ হাসিনার নির্দেশে গোপালগঞ্জে সশস্ত্র হামলা হয়েছে। শেখ হাসিনা দিল্লিতে বসে ষড়যন্ত্র করছেন। আর তাকে এই ষড়যন্ত্র করতে দিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি যে শ্রদ্ধা রাখা উচিত, সেখানে নগ্ন হস্তক্ষেপে পায়তারা করছে।
তিনি বলেন, গোপালগঞ্জের ঘটনার পর শুনি ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বক্তব্য দিয়ে বলেছেন- ‘গোপালগঞ্জের বিষয়ে তারা পর্যবেক্ষণ করছে’। আমরা বলব, আপনারা পর্যবেক্ষণ কি করবেন? বরঞ্চ গোপালগঞ্জে সারা বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাসীদের জড়ো করা হয়েছে, সেই সঙ্গে আপনারা (ভারত) জড়িত কি-না! আমি বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করবো, সেই বিষয়ে আরও গভীর তদন্ত করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, এ রাষ্ট্রে নাগরিকের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হলে সংস্কারের বিকল্প নেই। এ জন্য আওয়ামী লীগের বিচার, সংস্কার ও জুলাই সনদ ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। আগামী ৩ আগস্টের মধ্যে এই সরকার দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ এবং উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে সদস্য নির্বাচন, রাষ্ট্রপতি- প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল, এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নিয়োগের জন্য এনসিসি প্রস্তাবের ভিত্তিতে জুলাই সনদ জারি করা না হয়, এই জুলাই সনদ রক্ষার জন্য অবশ্যই গণভোটের আয়োজন করতে হবে। জুলাই আন্দোলনের হাজার হাজার মানুষের ত্যাগকে কিছু আওয়ামী বুদ্ধিজীবী শুধু আন্দোলন কিংবা সরকার পরিবর্তনের ট্যাগ দিতে চায়। অপরদিকে গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বের উপর সশস্ত্র হামলার পক্ষেও তারা এক ধরনের মদদ দিচ্ছে। তারা বলছে এনসিপি নাকি মার্চ টু গোপালগঞ্জ বলে উস্কানি দিয়েছে, আমরা বলতে চাই বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক যেকোনো স্থানে শান্তিপূর্ণ সভা সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। সেটা যেকোনো নামে। এই নামের কারণে যে সশস্ত্র হামলাকে যারা নিজেদের নিরপেক্ষ বলে মত উৎপাদন করছেন, তারা স্পষ্টভাবে হত্যাকারী দলের পক্ষে উস্কানি দাতা এবং এই হামলার পক্ষে মদদ দাতা। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ চলে গেলেও এখনো তাদের দোসররা দৃশ্যমান রয়েছে। বাংলাদেশের যে ইস্টাবলিস্টমেন্ট, মিডিয়া আমলা এবং প্রশাসনে এখনো খুনি হাসিনার প্রেতাত্মারা বসে রয়েছে। এদেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যেকটি স্তর থেকে ফ্যাসিস্টের দোসরদের সরিয়ে ফেলতে হবে। একই সঙ্গে গণহত্যার বিচারের দাবিতে জুলাইয়ের পদযাত্রা অব্যাহত থাকবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আলী নাসের খান, যুগ্ম সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় সংগঠক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সমন্বয়কারী মোস্তাক আহমেদ শিশির, যুগ্ম সদস্যসচিব ও ঢাকা মহানগর যুগ্ম সমন্বয়কারী এসএম শাহরিয়ার, যুগ্ম সদস্য সচিব আকরাম হোসাইন। সমাবেশ পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় সংগঠক এবং সমন্বয়ক এমএম শোয়াইব।
