রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পিস্তল দেখিয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার সকালে বিভাগে তালা ঝুলিয়েও পরীক্ষা বন্ধ করতে না পেরে পরীক্ষার হলে গিয়ে শিক্ষকদের পিস্তল দেখিয়ে বন্ধ করতে বাধ্য করে তারা। এ সময় একাধিক শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করে ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিভাগের মাস্টার্সের ৫ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি ইসলামের ইতিহাস ও সাংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান অসুস্থতার কথা বলে পরীক্ষা পেছাতে অনুরোধ করে। তবে একাডেমিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পূর্ব ঘোষিত সময়ে বিভাগ পরীক্ষা নিতে চাইলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে বিভাগ থেকে তালা ভেঙে পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্র্মীরা শিক্ষকদের ওপর হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রানা চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান পলাশ, পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাকিম বিল্লাহ ও আসলামের নেতৃত্বে ২০-২৫ নেতাকর্মী পরীক্ষার কক্ষে ঢুকে শিক্ষকদের পরীক্ষা বন্ধ করতে বলেন। এ সময় শিক্ষকরা অস্বীকৃতি জানালে তারা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কয়েক নেতা শিক্ষকদের দিকে পিস্তল বের করে হুমকি দিলে পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নেতাকর্মীরা শহীদুল্লাহ কলাভবনের ২০৪ নম্বর কক্ষে পরীক্ষার হলের জানালার কাচ ভাংচুর করেন। এতে পরীক্ষার্থীরা আতংকিত হয়ে ছোটোছুটি শুরু করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভাগের কয়েক শিক্ষক বলেন, পরীক্ষার হলে বিভাগীয় সভাপতিসহ অন্তত ৭ শিক্ষক পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানালার কাচ ভাংচুর করে হলের ভেতরে ঢুকতে গেলে শিক্ষকরা তাদের বাধা দেন। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েক নেতাকর্মী বিভাগের শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম ও ইমতিয়াজ আহমেদকে ধাক্কা মেরে মেঝেতে ফেলে দেয়। পরে তারা পরীক্ষার হলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার খাতা কেড়ে নেয়। তাদের বাধা দিতে গেলে ছাত্রলীগের পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাকিম বিল্লাহসহ আরও দুই বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা শিক্ষকদের অস্ত্র দেখিয়ে গুলি করার হুমকি দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদ আল হোসেন তুহিন বলেন, মেহেদি ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে খাচ্ছে। তবে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা নেতাকর্র্র্মীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর সৈয়দা নূরে কাছেদা খাতুন বলেন, সকালে ছাত্রলীগের ছেলেরা এসে তালা ঝুলিয়ে দিলেও আমরা দেরিতে পরীক্ষা শুরু করি। কিছুক্ষণ পর প্রায় ২০-৩০ জন ছেলে এসে হামলা চালায়। শিক্ষকরা বাধা দিলে তাদেরও ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় এবং অস্ত্র প্রদর্শন করে। পরে বাধ্য হয়ে পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান সজল বলেন, বিভাগ থেকে যাদের বিষয়ে অভিযোগ আসবে তা বিবেচনা করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিভাগের মাস্টার্সের ৫ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি ইসলামের ইতিহাস ও সাংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান অসুস্থতার কথা বলে পরীক্ষা পেছাতে অনুরোধ করে। তবে একাডেমিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পূর্ব ঘোষিত সময়ে বিভাগ পরীক্ষা নিতে চাইলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে বিভাগ থেকে তালা ভেঙে পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্র্মীরা শিক্ষকদের ওপর হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রানা চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান পলাশ, পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাকিম বিল্লাহ ও আসলামের নেতৃত্বে ২০-২৫ নেতাকর্মী পরীক্ষার কক্ষে ঢুকে শিক্ষকদের পরীক্ষা বন্ধ করতে বলেন। এ সময় শিক্ষকরা অস্বীকৃতি জানালে তারা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কয়েক নেতা শিক্ষকদের দিকে পিস্তল বের করে হুমকি দিলে পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নেতাকর্মীরা শহীদুল্লাহ কলাভবনের ২০৪ নম্বর কক্ষে পরীক্ষার হলের জানালার কাচ ভাংচুর করেন। এতে পরীক্ষার্থীরা আতংকিত হয়ে ছোটোছুটি শুরু করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভাগের কয়েক শিক্ষক বলেন, পরীক্ষার হলে বিভাগীয় সভাপতিসহ অন্তত ৭ শিক্ষক পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানালার কাচ ভাংচুর করে হলের ভেতরে ঢুকতে গেলে শিক্ষকরা তাদের বাধা দেন। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েক নেতাকর্মী বিভাগের শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম ও ইমতিয়াজ আহমেদকে ধাক্কা মেরে মেঝেতে ফেলে দেয়। পরে তারা পরীক্ষার হলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার খাতা কেড়ে নেয়। তাদের বাধা দিতে গেলে ছাত্রলীগের পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাকিম বিল্লাহসহ আরও দুই বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা শিক্ষকদের অস্ত্র দেখিয়ে গুলি করার হুমকি দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদ আল হোসেন তুহিন বলেন, মেহেদি ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে খাচ্ছে। তবে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা নেতাকর্র্র্মীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর সৈয়দা নূরে কাছেদা খাতুন বলেন, সকালে ছাত্রলীগের ছেলেরা এসে তালা ঝুলিয়ে দিলেও আমরা দেরিতে পরীক্ষা শুরু করি। কিছুক্ষণ পর প্রায় ২০-৩০ জন ছেলে এসে হামলা চালায়। শিক্ষকরা বাধা দিলে তাদেরও ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় এবং অস্ত্র প্রদর্শন করে। পরে বাধ্য হয়ে পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান সজল বলেন, বিভাগ থেকে যাদের বিষয়ে অভিযোগ আসবে তা বিবেচনা করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
রাবিতে পিস্তলের মুখে পরীক্ষা বন্ধ করল ছাত্রলীগ
রাজশাহী ব্যুরো
১৪ মে ২০১৪, ১২:০০ এএম |
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পিস্তল দেখিয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার সকালে বিভাগে তালা ঝুলিয়েও পরীক্ষা বন্ধ করতে না পেরে পরীক্ষার হলে গিয়ে শিক্ষকদের পিস্তল দেখিয়ে বন্ধ করতে বাধ্য করে তারা। এ সময় একাধিক শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করে ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিভাগের মাস্টার্সের ৫ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি ইসলামের ইতিহাস ও সাংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান অসুস্থতার কথা বলে পরীক্ষা পেছাতে অনুরোধ করে। তবে একাডেমিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পূর্ব ঘোষিত সময়ে বিভাগ পরীক্ষা নিতে চাইলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে বিভাগ থেকে তালা ভেঙে পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্র্মীরা শিক্ষকদের ওপর হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রানা চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান পলাশ, পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাকিম বিল্লাহ ও আসলামের নেতৃত্বে ২০-২৫ নেতাকর্মী পরীক্ষার কক্ষে ঢুকে শিক্ষকদের পরীক্ষা বন্ধ করতে বলেন। এ সময় শিক্ষকরা অস্বীকৃতি জানালে তারা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কয়েক নেতা শিক্ষকদের দিকে পিস্তল বের করে হুমকি দিলে পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নেতাকর্মীরা শহীদুল্লাহ কলাভবনের ২০৪ নম্বর কক্ষে পরীক্ষার হলের জানালার কাচ ভাংচুর করেন। এতে পরীক্ষার্থীরা আতংকিত হয়ে ছোটোছুটি শুরু করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভাগের কয়েক শিক্ষক বলেন, পরীক্ষার হলে বিভাগীয় সভাপতিসহ অন্তত ৭ শিক্ষক পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানালার কাচ ভাংচুর করে হলের ভেতরে ঢুকতে গেলে শিক্ষকরা তাদের বাধা দেন। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েক নেতাকর্মী বিভাগের শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম ও ইমতিয়াজ আহমেদকে ধাক্কা মেরে মেঝেতে ফেলে দেয়। পরে তারা পরীক্ষার হলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার খাতা কেড়ে নেয়। তাদের বাধা দিতে গেলে ছাত্রলীগের পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাকিম বিল্লাহসহ আরও দুই বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা শিক্ষকদের অস্ত্র দেখিয়ে গুলি করার হুমকি দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদ আল হোসেন তুহিন বলেন, মেহেদি ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে খাচ্ছে। তবে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা নেতাকর্র্র্মীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর সৈয়দা নূরে কাছেদা খাতুন বলেন, সকালে ছাত্রলীগের ছেলেরা এসে তালা ঝুলিয়ে দিলেও আমরা দেরিতে পরীক্ষা শুরু করি। কিছুক্ষণ পর প্রায় ২০-৩০ জন ছেলে এসে হামলা চালায়। শিক্ষকরা বাধা দিলে তাদেরও ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় এবং অস্ত্র প্রদর্শন করে। পরে বাধ্য হয়ে পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান সজল বলেন, বিভাগ থেকে যাদের বিষয়ে অভিযোগ আসবে তা বিবেচনা করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিভাগের মাস্টার্সের ৫ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি ইসলামের ইতিহাস ও সাংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান অসুস্থতার কথা বলে পরীক্ষা পেছাতে অনুরোধ করে। তবে একাডেমিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পূর্ব ঘোষিত সময়ে বিভাগ পরীক্ষা নিতে চাইলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে বিভাগ থেকে তালা ভেঙে পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্র্মীরা শিক্ষকদের ওপর হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রানা চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান পলাশ, পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাকিম বিল্লাহ ও আসলামের নেতৃত্বে ২০-২৫ নেতাকর্মী পরীক্ষার কক্ষে ঢুকে শিক্ষকদের পরীক্ষা বন্ধ করতে বলেন। এ সময় শিক্ষকরা অস্বীকৃতি জানালে তারা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কয়েক নেতা শিক্ষকদের দিকে পিস্তল বের করে হুমকি দিলে পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নেতাকর্মীরা শহীদুল্লাহ কলাভবনের ২০৪ নম্বর কক্ষে পরীক্ষার হলের জানালার কাচ ভাংচুর করেন। এতে পরীক্ষার্থীরা আতংকিত হয়ে ছোটোছুটি শুরু করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভাগের কয়েক শিক্ষক বলেন, পরীক্ষার হলে বিভাগীয় সভাপতিসহ অন্তত ৭ শিক্ষক পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানালার কাচ ভাংচুর করে হলের ভেতরে ঢুকতে গেলে শিক্ষকরা তাদের বাধা দেন। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েক নেতাকর্মী বিভাগের শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম ও ইমতিয়াজ আহমেদকে ধাক্কা মেরে মেঝেতে ফেলে দেয়। পরে তারা পরীক্ষার হলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার খাতা কেড়ে নেয়। তাদের বাধা দিতে গেলে ছাত্রলীগের পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাকিম বিল্লাহসহ আরও দুই বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা শিক্ষকদের অস্ত্র দেখিয়ে গুলি করার হুমকি দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদ আল হোসেন তুহিন বলেন, মেহেদি ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে খাচ্ছে। তবে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা নেতাকর্র্র্মীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর সৈয়দা নূরে কাছেদা খাতুন বলেন, সকালে ছাত্রলীগের ছেলেরা এসে তালা ঝুলিয়ে দিলেও আমরা দেরিতে পরীক্ষা শুরু করি। কিছুক্ষণ পর প্রায় ২০-৩০ জন ছেলে এসে হামলা চালায়। শিক্ষকরা বাধা দিলে তাদেরও ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় এবং অস্ত্র প্রদর্শন করে। পরে বাধ্য হয়ে পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান সজল বলেন, বিভাগ থেকে যাদের বিষয়ে অভিযোগ আসবে তা বিবেচনা করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।