jugantor
ইমেজ সংকটে খুলনার ছাত্রলীগ-যুবলীগ

  হেদায়েৎ হোসেন, খুলনা ব্যুরো  

১৫ জুন ২০১৪, ০০:০০:০০  | 

একের পর এক অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে খুলনার ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা। মারামারি, টেন্ডার ও চাঁদাবাজি, জমি দখল, ঘের দখলের পাশাপাশি এখন এসব নেতাকর্মী সরাসরি অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা, মোটরসাইকেল ছিনতাই, গাড়ি চুরি ও ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে। অব্যাহত এসব ঘটনায় ইমেজ সংকটে পড়েছে খুলনার ছাত্রলীগ-যুবলীগ।

এর আগে অপকর্ম করে শুধু কর্মীরা ধরা পড়েছে। সম্প্রতি ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের পদ ও পদবিধারী নেতারাও গ্রেফতার হয়েছেন। গ্রেফতার হওয়া কয়েক নেতা জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছে তাদের নানা অপকর্মের কথা। সরকারি দলের প্রভাব কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তারা এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এমপি যুগান্তরকে বলেন, মাদক ও সন্ত্রাসের সঙ্গে কোনো আপস নেই। দলের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ রয়েছে। তিনি জানান, দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত কেউ কোনো অপকর্মে যুক্ত রয়েছে কিনা- তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বয়রা এলাকার ইতির মাদক ব্যবসার উল্লেখ করেন। মিজান জানান, ওয়ার্ড কমিটির সদস্য ইতিকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদিকে গ্রেফতার হওয়া সরকারি দল আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা স্বীকার করেছেন, খুলনা মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির অর্ধেক সদস্যের বৈধ আয়ের কোনো উৎস নেই। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজির মাধ্যমেই তাদের সংসার চলে। কারও কারও ঠিকাদারি লাইসেন্স রয়েছে। তবে ৫ বছরে ওই লাইসেন্সে একটি কাজও করা হয়নি। শুধু টেন্ডারে ভাগ পাওয়ার জন্যই লাইসেন্সটি ব্যবহৃত হয়।

২৬ এপ্রিল মহানগরীর খালিশপুর থেকে যুবলীগ নেতা তালাত হোসেন কাউটকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। ৬ মে নগরীর জিরো পয়েন্টে বাস কাউন্টারের দখল নিয়ে যুবলীগের দু’গ্র“পের সংঘর্ষে দুই সাংবাদিকসহ চারজন আহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখনও ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আবারও সংঘর্ষের আশংকা করেছেন ওই এলাকার সাধারণ মানুষ।

সরকারি দলের নেত্রী পরিচয়ে ইতি নামের এক মাদক ব্যবসায়ী মহানগরীর বয়রা এলাকায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। নিজেকে সে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগের নেত্রী দাবি করে শহরে সম্প্রতি পোস্টারিং করে। পুলিশ তাকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করেছিল। আদালত থেকে সে জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও মাদক ব্যবসা শুরু করেছে। এদিকে ৭ মে রাতে সোনাডাঙ্গা আন্তঃজেলা বাস স্ট্যান্ডের পাশে কাঁচা বাজারে যুবলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা কয়েকটি দোকান দখল করে নেয়।

২৮ মে রাতে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানা ভবনের কাছ থেকে ২০ পিস ইয়াবা ও ৬ বোতল ফেনসিডিলসহ যুবলীগ নেতা পঙ্গু সোহেলকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তার সহযোগী সজীব ও পলাশসহ আরও কয়েকজন গ্রেফতার হয়। পঙ্গু সোহেল ট্রাক শ্রমিক লীগের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদে পঙ্গু সোহেল জানায়, সরকারি দলের প্রভাব কাজে লাগিয়ে সে সোনাডাঙ্গা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। কিন্তু সরকারি দলের ছত্রছায়ায় থাকায় সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

৩ জুন রাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতি হওয়া ছয় লাখ টাকাসহ সাতজনকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে হাবিবুর রহমান খুলনার বিএল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা। এছাড়াও রয়েছেন দৌলতপুর থানা যুবলীগের সদস্য ইবাদ আলী মোড়ল এবং যুবলীগ নেতা কাজী ইব্রাহিম ওরফে মার্শাল। আত্মগোপনে থাকা কয়রার রেজওয়ান, দৌলতপুরের পাবলার শিমুল কর্মকার ও রেল গেট এলাকার সবুজ যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।

পুলিশ জানায়, ৩ জুন সকালে খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কের ডুমুরিয়া থানার জিলেরডাঙ্গা নামক স্থান থেকে মাছ পরিবহনকারী ট্রাক আটকে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৫০০ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় একটি মামলা হয়। মূলত এই ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদের গ্রেফতার করা হয়।

অন্যদিকে অপকর্ম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করে রেখেছে। তারপরও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। অব্যাহত রয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। খুলনায় ছাত্রলীগের এসব ঘটনা তদন্তের জন্য গঠন করা হয়েছিল তিন সদস্যের কমিটি। কিন্তু তদন্ত কমিটির কোনো তৎপরতা নেই। ২২ ফেব্র“য়ারি কমার্স কলেজে সংঘর্ষের পর প্রায় এক সপ্তাহ কোনো ক্লাস হয়নি। এরপর গত ৩ মাসে এই কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্র“পের মধ্যে চারবার সংঘর্ষ হয়েছে। সর্বশেষ ২৮ মে বিবাদমান দুই গ্র“পের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ভর্তি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনার সূত্রপাত বলে জানা গেছে। এ ঘটনার পর ওই রাতেই কমার্স কলেজের ছাত্র সৌমিত্র কুমার বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। পরদিন ২৯ মে বৃহস্পতিবার মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও কমার্স কলেজ শাখার সভাপতি সবুজ হাজরা ও আবদুল্লাহ আল-মামুন মানিককে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। হরিণটানা থানার একটি প্রাইভেট কার চুরি মামলায় মহানগর ছাত্রলীগ নেতা সবুজ হাজরাসহ কমার্স কলেজের কয়েক নেতা এখন জেলহাজতে রয়েছেন। ৭ এপ্রিল চুরি হওয়া ২টি গাড়ি উদ্ধার হয়। এ সময় পুলিশ জানতে পারে চোর সিন্ডিকেটের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা সবুজ হাজরা সরাসরি যুক্ত।

এদিকে ৯ এপ্রিল মহানগর ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক তানভীর আহম্মেদ রাজু ১৪ পিস ইয়াবা ও ৮ পুরিয়া হেরোইনসহ খুলনা থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। এছাড়াও মহানগরীর সরকারি বিএল কলেজে গত এক মাসে তিনবার ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে কলেজে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হয়েছে। কলেজটির হেড ক্লার্ক তৌহিদুর রহমানকে বেধড়ক মারপিট করেছে ছাত্রলীগ নামধারী উচ্ছৃংখল নেতাকর্মী। একাদশ শ্রেণীর ভর্তি কার্যক্রমে সহায়তার নামে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ পৃথকভাবে অবস্থান নেয়ায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ১৯ মে সরকারি এমএম সিটি কলেজে তিনজনকে কুপিয়ে জখম করে ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষ গ্র“পের সদস্যরা।



সাবমিট

ইমেজ সংকটে খুলনার ছাত্রলীগ-যুবলীগ

 হেদায়েৎ হোসেন, খুলনা ব্যুরো 
১৫ জুন ২০১৪, ১২:০০ এএম  | 
একের পর এক অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে খুলনার ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা। মারামারি, টেন্ডার ও চাঁদাবাজি, জমি দখল, ঘের দখলের পাশাপাশি এখন এসব নেতাকর্মী সরাসরি অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা, মোটরসাইকেল ছিনতাই, গাড়ি চুরি ও ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে। অব্যাহত এসব ঘটনায় ইমেজ সংকটে পড়েছে খুলনার ছাত্রলীগ-যুবলীগ।

এর আগে অপকর্ম করে শুধু কর্মীরা ধরা পড়েছে। সম্প্রতি ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের পদ ও পদবিধারী নেতারাও গ্রেফতার হয়েছেন। গ্রেফতার হওয়া কয়েক নেতা জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছে তাদের নানা অপকর্মের কথা। সরকারি দলের প্রভাব কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তারা এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এমপি যুগান্তরকে বলেন, মাদক ও সন্ত্রাসের সঙ্গে কোনো আপস নেই। দলের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ রয়েছে। তিনি জানান, দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত কেউ কোনো অপকর্মে যুক্ত রয়েছে কিনা- তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বয়রা এলাকার ইতির মাদক ব্যবসার উল্লেখ করেন। মিজান জানান, ওয়ার্ড কমিটির সদস্য ইতিকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদিকে গ্রেফতার হওয়া সরকারি দল আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা স্বীকার করেছেন, খুলনা মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির অর্ধেক সদস্যের বৈধ আয়ের কোনো উৎস নেই। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজির মাধ্যমেই তাদের সংসার চলে। কারও কারও ঠিকাদারি লাইসেন্স রয়েছে। তবে ৫ বছরে ওই লাইসেন্সে একটি কাজও করা হয়নি। শুধু টেন্ডারে ভাগ পাওয়ার জন্যই লাইসেন্সটি ব্যবহৃত হয়।

২৬ এপ্রিল মহানগরীর খালিশপুর থেকে যুবলীগ নেতা তালাত হোসেন কাউটকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। ৬ মে নগরীর জিরো পয়েন্টে বাস কাউন্টারের দখল নিয়ে যুবলীগের দু’গ্র“পের সংঘর্ষে দুই সাংবাদিকসহ চারজন আহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখনও ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আবারও সংঘর্ষের আশংকা করেছেন ওই এলাকার সাধারণ মানুষ।

সরকারি দলের নেত্রী পরিচয়ে ইতি নামের এক মাদক ব্যবসায়ী মহানগরীর বয়রা এলাকায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। নিজেকে সে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগের নেত্রী দাবি করে শহরে সম্প্রতি পোস্টারিং করে। পুলিশ তাকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করেছিল। আদালত থেকে সে জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও মাদক ব্যবসা শুরু করেছে। এদিকে ৭ মে রাতে সোনাডাঙ্গা আন্তঃজেলা বাস স্ট্যান্ডের পাশে কাঁচা বাজারে যুবলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা কয়েকটি দোকান দখল করে নেয়।

২৮ মে রাতে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানা ভবনের কাছ থেকে ২০ পিস ইয়াবা ও ৬ বোতল ফেনসিডিলসহ যুবলীগ নেতা পঙ্গু সোহেলকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তার সহযোগী সজীব ও পলাশসহ আরও কয়েকজন গ্রেফতার হয়। পঙ্গু সোহেল ট্রাক শ্রমিক লীগের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদে পঙ্গু সোহেল জানায়, সরকারি দলের প্রভাব কাজে লাগিয়ে সে সোনাডাঙ্গা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। কিন্তু সরকারি দলের ছত্রছায়ায় থাকায় সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

৩ জুন রাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতি হওয়া ছয় লাখ টাকাসহ সাতজনকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে হাবিবুর রহমান খুলনার বিএল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা। এছাড়াও রয়েছেন দৌলতপুর থানা যুবলীগের সদস্য ইবাদ আলী মোড়ল এবং যুবলীগ নেতা কাজী ইব্রাহিম ওরফে মার্শাল। আত্মগোপনে থাকা কয়রার রেজওয়ান, দৌলতপুরের পাবলার শিমুল কর্মকার ও রেল গেট এলাকার সবুজ যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।

পুলিশ জানায়, ৩ জুন সকালে খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কের ডুমুরিয়া থানার জিলেরডাঙ্গা নামক স্থান থেকে মাছ পরিবহনকারী ট্রাক আটকে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৫০০ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় একটি মামলা হয়। মূলত এই ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদের গ্রেফতার করা হয়।

অন্যদিকে অপকর্ম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করে রেখেছে। তারপরও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। অব্যাহত রয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। খুলনায় ছাত্রলীগের এসব ঘটনা তদন্তের জন্য গঠন করা হয়েছিল তিন সদস্যের কমিটি। কিন্তু তদন্ত কমিটির কোনো তৎপরতা নেই। ২২ ফেব্র“য়ারি কমার্স কলেজে সংঘর্ষের পর প্রায় এক সপ্তাহ কোনো ক্লাস হয়নি। এরপর গত ৩ মাসে এই কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্র“পের মধ্যে চারবার সংঘর্ষ হয়েছে। সর্বশেষ ২৮ মে বিবাদমান দুই গ্র“পের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ভর্তি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনার সূত্রপাত বলে জানা গেছে। এ ঘটনার পর ওই রাতেই কমার্স কলেজের ছাত্র সৌমিত্র কুমার বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। পরদিন ২৯ মে বৃহস্পতিবার মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও কমার্স কলেজ শাখার সভাপতি সবুজ হাজরা ও আবদুল্লাহ আল-মামুন মানিককে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। হরিণটানা থানার একটি প্রাইভেট কার চুরি মামলায় মহানগর ছাত্রলীগ নেতা সবুজ হাজরাসহ কমার্স কলেজের কয়েক নেতা এখন জেলহাজতে রয়েছেন। ৭ এপ্রিল চুরি হওয়া ২টি গাড়ি উদ্ধার হয়। এ সময় পুলিশ জানতে পারে চোর সিন্ডিকেটের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা সবুজ হাজরা সরাসরি যুক্ত।

এদিকে ৯ এপ্রিল মহানগর ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক তানভীর আহম্মেদ রাজু ১৪ পিস ইয়াবা ও ৮ পুরিয়া হেরোইনসহ খুলনা থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। এছাড়াও মহানগরীর সরকারি বিএল কলেজে গত এক মাসে তিনবার ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে কলেজে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হয়েছে। কলেজটির হেড ক্লার্ক তৌহিদুর রহমানকে বেধড়ক মারপিট করেছে ছাত্রলীগ নামধারী উচ্ছৃংখল নেতাকর্মী। একাদশ শ্রেণীর ভর্তি কার্যক্রমে সহায়তার নামে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ পৃথকভাবে অবস্থান নেয়ায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ১৯ মে সরকারি এমএম সিটি কলেজে তিনজনকে কুপিয়ে জখম করে ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষ গ্র“পের সদস্যরা।



 
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ
শুক্র