গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই জুলাই বিপ্লবের মূল সুর
আবদুল আউয়াল ঠাকুর
প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটে। ওই আন্দোলনের অন্যতম চরিত্র মোহাম্মদ নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। তার ভাষায় ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটেছে, কিন্তু ব্যবস্থার পতন হয়নি। তিনি মনে করেন, জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থী, সেনাবাহিনী, রাজনৈতিক দল ও সরকার বা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে যে ঐক্য বা অঘোষিত চুক্তি হয়েছিল, তা ভঙ্গ হয়েছে। সেখানে অনৈক্য হয়েছে। জুলাইয়ের পর প্রত্যেকে যার যার এজেন্ডায় চলে গেছে। তার মতে, শেখ হাসিনার পতন পর্যন্ত সবাই এক জায়গায় থাকলেও পরে আর তা থাকেনি। তার এ বক্তব্য এবং চলমান পরিস্থিতি মিলিয়ে বলা যায়, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি এক নাজুক অবস্থায় পৌঁছেছে। এ অবস্থার জন্য দায়ী কে, কেনই বা এত বড় পরিবর্তনের পর জন-আকাঙ্ক্ষার অনুবর্তী রাজনৈতিক বাস্তবতা আনা যাচ্ছে না, সত্যিকার অর্থেই সেটি ভাবার সময় এসেছে।
নাহিদ ইসলাম যেভাবে দেখছেন, তার ভাবনা থেকেই যদি শুরু করা যায় তাহলে বলতে হবে, মূলত স্বৈরাচার উচ্ছেদই ছিল মূল এজেন্ডা। এ উচ্ছেদে আপামর জনতা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর যে ঐক্য ছিল তা কেন ধরে রাখা যায়নি, তার কোনো বিশ্লেষণ আমাদের কাছে নেই। এটি কি বিপ্লবী শক্তির ধারণাগত বিভ্রান্তি নাকি সোল এজেন্সিজনিত বিপর্যয়? সে বিষয়টিও গভীরভাবে ভাবার রয়েছে। নতুন ব্যবস্থাপনা নিয়ে বলার আগে প্রথমে যে ভাবনা জরুরি তা হলো, গত ১৫ বছর বা তারও আগে থেকে এ দেশের মানুষের প্রধান দাবি ছিল একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অর্থাৎ একটি গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা। এ আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নের জন্যই প্রথমে বিএনপি, জামায়াত এবং পরে অঘোষিতভাবে অন্যরা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। আন্দোলনে সরকারের পতন হয়েছে। কিন্তু জন-আকাঙ্ক্ষা কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে, সেটিই ভাবার। খুব সোজা করে যদি বলা যায়, বিপ্লবী শক্তিগুলো যারা আজ বিএনপিকে নানা অভিযোগে দুষছেন এবং বিএনপি ও তারেক রহমানকে একঘরে করার খায়েশ পোষণ করছেন, তাদের বিবেচনায় নেওয়া দরকার, কোনো আন্দোলনকারী শক্তির সঙ্গে কি কোনো আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে ভারতের মাটিতে নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল? যখন বিপ্লব বা তৎজনিত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় তখনই মূল যে বিষয় আসে তা হলো, শেখ হাসিনাকে ভারতে রেখে আসার ব্যাপারে কি কোনো ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল? এতে বিএনপির কোনো মতামত নেওয়া হয়েছিল? দ্বিতীয় যে বিষয়টি গুরুতর বিবেচনায় আসছে, সেটি হলো আজকে যারা নানা অভিযোগ তুলে বিএনপির বিরুদ্ধে জনমত তৈরিতে ব্যস্ত, তারা কি নিজেদের মধ্যে অর্থাৎ আন্দোলনে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান করেছিলেন? এ ব্যাপারে বিএনপির মতামত কী ছিল? কথাটা তুলছি এ কারণে যে, এখন অনেকে বিশেষ করে ইসলামপন্থি দলগুলো বিএনপিকে ভারতীয়পন্থি বলে যে কথা তুলছেন এবং সেই সঙ্গে দেশকে ইসলামিকরণের যে আওয়াজ তুলছেন তাদের বক্তব্যকে মূল্যায়ন প্রয়োজন। যদি ধরে নিই, ফ্যাসিবাদের পতনে বিএনপির কোনো ভূমিকা নেই, তাহলে যে সরকার গঠিত হয়েছে, সেখানেও তাদের কোনো ভূমিকা থাকার কথা নয়। যারা এখন ইসলাম কায়েমের জন্য বিএনপির বিরোধিতা করছেন, তাদের জন্য বলি, তখন ফ্রান্স থেকে ড. ইউনূসকে না এনে তো চরমোনাইয়ের পির বা জামায়াত সমর্থিত কোনো আলেমকে একটি নির্বাচন তথা নির্বাচনি আমানত পরিপূরণের জন্য তত্ত্বাবধায়ক প্রধান করা যেত। এ কাজটি করা গেলে আজ যে লম্ফঝম্প করা হচ্ছে, তার কোনো প্রয়োজন হতো না। খুব সহজেই তিনি দেশে ইসলামি আইন চালু করে দিতে পারতেন। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, যে সংবিধান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, সেই সংবিধান সংরক্ষণের কঠিন শপথ নিয়ে বিপ্লবী শক্তির প্রতিনিধি হিসাবে ড. ইউনূস সাহেব শপথ নিয়েছেন। এ সংবিধানের দোহাই দিয়েই গত সাড়ে ১৫ বছর বা তারও বেশি সময় আওয়ামী লীগ দেশকে গণতন্ত্রহীন করে ভারতভুক্তির পাঁয়তারা করেছে। এ সংবিধানে যেখানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া আল্লাহর ওপর গভীর আস্থা ও বিশ্বাসের কথা এবং বিসমিল্লাহ সংযোজন করেছিলেন, তা বাতিল করেছিল আওয়ামী সরকার। সেই সংবিধান বাতিল না করে বা কোনো পরিবর্তনের অঙ্গীকার না করেই বিপ্লবী সরকার যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল, তখন সেটি কি ধারাবাহিকতার অংশ নয়? বাজারে যেসব কথা আছে, তা নিয়ে বিতর্কে যাওয়া উদ্দেশ্য নয়। আসলে মূল বিতর্ক কোনটি, তা জানতে হবে। এ প্রশ্নের সমাধান জরুরি।
এ দেশে এখন পর্যন্ত বিএনপিই একমাত্র দল, যাদের গণতান্ত্রিক চর্চার স্বীকৃত ইতিহাস রয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া বাকশাল-পরবর্তী যে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন করেছিলেন, খালেদা জিয়া সে ওয়াদা পালনে কোনো ত্রুটি করেননি। বহুদলীয় গণতান্ত্রিক চর্চায় তিনি কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি করেননি, বরং গণতন্ত্র চর্চার পথ উন্মুক্ত করতে রাজনৈতিক জোট ও দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেছেন। সংবিধানে গণতন্ত্র তথা বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বীকৃতি থাকা সত্ত্বেও এর বিনাশ করেছিলেন সংসদীয় ক্যুর মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান। তিনিই সংসদীয় গণতন্ত্র থেকে একদলীয় বাকশালের অধিপতি হয়ে প্রেসিডেন্সিয়াল পদ্ধতি চালু করেছিলেন। গণতন্ত্র লাঞ্ছিত, খর্বিত এবং বিদূরিত হয়েছে আওয়ামী শাসনামলে। কারণ, এ দেশে গণতন্ত্র থাকলে সবচেয়ে বড় ক্ষতি ভারতের। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া তাই মনে করতেন, মানুষের অংশগ্রহণ ছাড়া স্বাধীনতা রক্ষা করা সম্ভব নয়। সে বিবেচনায় আজকের বাংলাদেশে এটি খুব স্পষ্ট করেই বলা যায়, গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য উত্তরাধিকারবলে যদি কোনো বিষয় থাকে তাহলে সেটি বিএনপির রয়েছে। যারা এখন বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছেন, কার্যত তারা গণতান্ত্রিক বাস্তবতার বিরুদ্ধে কথা বলছেন। হ্যাঁ, এ কথা অবশ্যই মানতে হবে, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া যে গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছিলেন, তাকে হত্যা করার পর এরশাদ সামরিক শাসন দিয়ে সে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছিল। খালেদা জিয়া যে গণতন্ত্রের চর্চা শুরু করেছিলেন, ১/১১-পরবর্তী সরকার তথা আওয়ামী লীগ তা সমূলে বিনাশ করেছে, মূলোচ্ছেদ করেছে। এরশাদ এবং ১/১১ সরকারের সঙ্গে একাট্টা ছিল আওয়ামী লীগ। সংগত বিবেচনা থেকেই সংস্কার বা অন্যান্য প্রসঙ্গ এসেছে। এটা মনে রাখা জরুরি, যত ব্যবস্থাপনার কথাই বলা যাক না কেন, মানুষই তার বাস্তবায়ন করে। নেতৃত্ব গণতান্ত্রিক মানসিকতাসম্পন্ন না হলে গণতন্ত্র বা মানুষের কল্যাণমুখী শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। এখন বাংলাদেশে নতুন যে জোটের আলোচনা হচ্ছে, সেখানে প্রকাশ্যেই বিএনপিবিরোধী জোটের কথা বলা হচ্ছে। অর্থাৎ বিএনপি ঠেকাও। আসলে প্রস্তাবিত এ জোটের প্রকৃতি কী? দৃশ্যমান আলোচনায় যদি যাওয়া যায় তাহলে আমরা দেখছি জামায়াত চরমোনাইসহ অন্য যারা এ জোটের অংশীজন হবেন, তাদের মধ্যে মিল বলতে বিএনপিবিরোধিতা। ধরুন গত সাড়ে ১৫ বছরের কথা। আওয়ামী সরকারের জঙ্গিবাদ মৌলবাদী ঠেকাও কর্মসূচির নামে এ দেশের মুসলমান নিধনে বিশেষ করে জামায়াত নিধনে যে বর্বর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল, তার প্রধান সহযোগী ছিল একটি পিরের দল। তালপাতার পাখার বাতাস খেতে খেতে রাজধানীর প্রধান সড়কে আওয়ামী লীগের সহযোগিতার বিবরণ তো পির সাহেবের নিজেও ভোলার কথা নয়। তারা সেই বিএনপি আমল থেকে বিএনপিবিরোধী। কেন, সে আলোচনা না-ই করলাম। দলটি ভারতপন্থি না ভারতবিরোধী, সে কথাও কি বলার অপেক্ষা রাখে? মাওলানা মামুনুল হক সাহেবকে গ্রেফতারের পর দলটির ভূমিকা কী ছিল, তা বোধকরি জানান দেওয়ার দরকার নেই। বলে রাখা ভালো, মাওলানা মামুনুল হক ঘোষণা দিয়ে ভারত বিরোধিতায় নেমেছিলেন। তার পরিণতিতে তাকে হেনস্তা করা হয়েছে। সাড়ে ১৫ বছরে রাজনৈতিক নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছে জামায়াত। অবশ্যই তাদের জোর গলায় কথা বলার অধিকার আছে। তারা তো মূলত বিএনপি-জামায়াতে জোটের অংশই ছিল। এখন যদি বিএনপি ভারতপন্থি হয়, তাহলে তাদের সঙ্গে যারা ক্ষমতার ভাগাভাগি করেছেন, আন্দোলনে শরিক হয়েছেন, সেখানেও নানা কথা নির্বাচনের সময় উঠবে। কথা আরও আছে। ১৯৭৫ সালে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সম্পর্কে বলতে গিয়ে ভারতীয় বেসামরিক সমর বিশেষজ্ঞ রবি রিখি একপর্যায়ে মন্তব্য করেছেন, পরিবর্তনের পর ইন্দিরা সরকার বাংলাদেশের দিকে দুই ডিভিশন সৈন্য পাঠানোর কথা বললেও খন্দকার মোশতাক ক্ষমতাসীন হয়েছেন শুনে তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। আগস্ট পরিবর্তনের হোতারা তিন মাসও দেশে থাকতে পারেননি। ৩ নভেম্বর পুনঃঅভ্যুত্থান হয়েছিল। আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন হলেও এরশাদ সাহেবের দেশ ছেড়ে পালানোর সুযোগ হয়নি। তাহলে ফ্যাসিস্ট প্রধান ও তার সহযোগীরা ভারতে অবস্থান নিতে পারল কীভাবে? শুধু তারাই নয়, দেশের সীমান্ত দিয়ে শত শত অপরাধী পালিয়ে গেল কীভাবে? আঁতাতটা আসলে কোথায় হয়েছে, কোন পর্যায়ে হয়েছে, আজ পর্যন্ত জনগণ এ নিয়ে বিভ্রান্তিতে রয়েছে। এ বিভ্রান্তি কাটানোর দায়িত্ব যাদের, তারা এ নিয়ে কথা না বলে ব্যস্ত আছেন বিএনপি নিধনে। একদিকে বলছেন, বিজয়ে বিএনপির কোনো ভূমিকা নেই, অন্যদিকে বলছেন, বিএনপি ভারতপন্থি, তাই তার কাছে দেশ নিরাপদ নয়। আসলে মূল বিষয় হচ্ছে নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার সামর্থ্য নিয়ে।
এ কথা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন আর ভারতবিরোধী আন্দোলন একই সমীকরণে ছিল। আওয়ামীবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি ও জামায়াতের ডাকে যখন লাখো মানুষ সব রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সমবেত হতো, তখন ভারতের দৈনিক আনন্দবাজার এ কথা লিখেছিল। তারা বলেছিল, বাংলাদেশে সরকারবিরোধী আন্দোলন আর ভারতবিরোধী আন্দোলন অভিন্ন সূত্রে গাঁথা। ব্যাপারটি শুধু কথার কথা নয়, বাস্তবও এটি। ভারতীয় মদদপুষ্ট হয়েই আওয়ামী রেজিম জনদুর্ভোগের কারণে পরিণত হয়েছিল। যেভাবে বিগত প্রতিটি নির্বাচনে কৌশলে দেশপ্রেমিক জনগণকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখার অভিনব পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিল তাতে এটাই সত্যি ছিল যে, ভারতকে হটাতে না পারলে বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। গত সাড়ে ১৫ বছরের বিএনপি-জামায়াত যৌথ আন্দোলনকে যদি ভারতীয় প্রভাবিত বলা হয়, তাহলে এ সময়ে নিহত, আহত, গুম হওয়া নাগরিকদের প্রতি কতটা অবিচার হবে, বোধকরি সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। আন্তর্জাতিক মহলে একমাত্র যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া প্রায় সবাই কোনো না কোনোভাবে ভারতপ্রেমী হয়ে উঠেছিল। ভারতীয় নির্বাচনের প্যাঁচে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের পতনের মধ্য দিয়ে যে নয়া গণতান্ত্রিক সম্ভাবনার পথ উন্মুক্ত হয়েছে, তা এখন নানা প্রশ্নের মুখোমুখি। রাজনীতিতে চূড়ান্ত কোনো কথা বলা যায় না। মাত্র সেদিন আওয়ামী সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিল, এখন তারা নিষিদ্ধের কবলে। আর কদিন থাকলে বিএনপিকেও নিষিদ্ধ করা হতো। শত শত মামলা দিয়ে বিএনপিকে পদানত করার অপপ্রয়াস হাতে নিয়েছিল। সুতরাং কোন পথে কোন উপায়ে ফ্যাসিবাদ আবার বাংলাদেশে আবির্ভূত হবে, তা নিয়ে অনুমান করা যায় না। তারা আধিপত্যবাদের আনুকূল্যে নাকি আগ্রাসনের মাধ্যমে অথবা অন্য কোনো উপায়ে সেটি আসলে বলা কষ্টকর। সেখানে অবস্থানরত আওয়ামী প্রধানের সঙ্গে ভারতের ভূমিকা কোন পর্যায় পর্যন্ত গড়াবে, সেটিও বোঝা দায়। মূল কথা হচ্ছে, গত সাড়ে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, দেশের আধিপত্যবাদবিরোধীরাই প্রতিরোধের দুর্গ তৈরি করে রেখেছিল। সে প্রতিরোধের যারা কর্মী, সৈনিক, তারা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারেন, তাহলেই ফ্যাসিবাদমুক্ত সমাজ গঠন সম্ভব। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মূল সুর হচ্ছে-একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং কীভাবে ফ্যাসিবাদ রুখে দেওয়া যায়, তার সম্ভাব্য বিধিব্যবস্থা করা। এর প্রতি আন্তরিক থাকলেই সম্ভবত মূল লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।
আবদুল আউয়াল ঠাকুর : সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট
