বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে যা জানাল পাকিস্তান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২৭ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাংলাদেশের সঙ্গে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার যৌথ অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।
দেশটি
বলেছে, ১৫ বছর পর আবারও অনুষ্ঠিত হলো পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের
ষষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। বৈঠকটি ঢাকায় বেশ আন্তরিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাকিস্তানের
পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিন বৈঠকে নিজ নিজ
পক্ষের নেতৃত্ব দেন।
বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের বিষয়ে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পাকিস্তানের
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব কথা বলেছে। শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
বৈঠকে
উভয় দেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত ও কৌশলগত সহযোগিতাসহ নানা বিষয়ে
বিস্তারিত মতবিনিময় করেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি দুই দেশের অভিন্ন
ইতিহাস, সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং জনগণের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়।
নিউইয়র্ক,
কায়রো, সামোয়া ও জেদ্দায় সম্প্রতি দুই পক্ষের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগ নিয়ে সন্তোষ
প্রকাশ করা হয়েছে। ওই সব যোগাযোগ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে সহায়তা
করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে
বলা হয়, উভয় দেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলো দ্রুত চূড়ান্তকরণ, নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপ
এবং বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা ও সংযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। পাকিস্তান তাদের
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ
মৎস্য ও সামুদ্রিক বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছে। পাকিস্তানের বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তির প্রস্তাবে বাংলাদেশ কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছে এবং শিক্ষা খাতে
আরও গভীর সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে,
সংযোগকে অগ্রাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ওই বৈঠকে দুই পক্ষ করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে
সরাসরি নৌযান চলাচল শুরুর বিষয়টিকে স্বাগত জানায়। দুই পক্ষ সরাসরি আবার আকাশপথে যোগাযোগ
চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করে। ভ্রমণ ও ভিসা সহজীকরণে অগ্রগতির প্রতিও উভয় পক্ষ সন্তোষ
প্রকাশ করেছে।
ক্রীড়া,
গণমাধ্যম ও সংস্কৃতিতে বড় পরিসরে সহায়তায় বিভিন্ন সমঝোতা স্মারক নিয়ে বৈঠকে আলোচনা
হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে
আরও বলা হয়েছে, বৈঠকে উভয় দেশ সার্কের কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করার পক্ষে মত দিয়েছে।
বহুপাক্ষিক
ইস্যুতে উভয় পক্ষই সার্কের প্রতিষ্ঠাকালীন নীতির সঙ্গে মিল রেখে জোটটিকে পুনরুজ্জীবিত
করার প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে। পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের নেতৃত্বের দূরদর্শিতার
প্রশংসা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে, সার্ক প্রক্রিয়া দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক বিবেচনা
থেকে নিরাপদ থাকবে।
এ
সময় কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুসারে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দিয়েছে
পাকিস্তান। এ ছাড়া বৈঠকে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন ও সেখানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের
নিন্দা জানিয়েছে দুদেশ।
পাকিস্তানের
পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস
এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। তার সঙ্গে বৈঠকে আঞ্চলিক
সম্পৃক্ততা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে বাহ্যিক
চাপমুক্ত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। শিগগিরই পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মুহাম্মদ ইসহাক দারের বাংলাদেশ সফরের প্রত্যাশার কথা জানানো হয়।
এতে
বলা হয়, উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে পররাষ্ট্র
সচিব আমনা বালুচ পাকিস্তানের নেতৃত্বের পক্ষ থেকে তাকে শুভেচ্ছা জানান।
দুই
দেশের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের পরবর্তী বৈঠক ২০২৬ সালে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হবে
বলে এতে জানানো হয়েছে।
