‘জীবনের চেয়ে দৃপ্ত মৃত্যু তখনই জানি, শহীদের খুনি হেসে উঠে যবে জিন্দেগানি’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২১ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদিকে শনিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে। এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় লাখো মানুষের অংশগ্রহণে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। শহীদ হাদির এমন ঐতিহাসিক ও বীরোচিত বিদায়ে তাকে নিয়ে একটি আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন খেলাফত মজলিশের আমির ও হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকের এক পোস্টে মামুনুল হক বলেন, ‘শরীফ ওসমান হাদিকে আমি জীবনে মাত্র তিনবার স্পর্শ করতে পারলাম। এরপরই ও চলে গেল অন্য এক জগতে। ধরাছোঁয়ার বহু ঊর্ধ্বে।’
‘প্রথমবার স্পর্শ করেছিলাম ২৪ শে মে ২০২৫। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত শাপলা স্মৃতি সংসদের কনফারেন্সে। যেখানে সে আমার আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিল। বক্তব্য রেখেছিল। বলেছিল শাপলার সাথে তার অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের গল্প। সাধারণ একজন শিক্ষার্থী থেকে হেফাজতের আমির বলে অভিহিত হওয়ার ঘটনা। আমাকে নিয়েও নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেছিল। আরও অনেক কথা বলেছিল।’
তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয়বার যখন তাকে স্পর্শ করি, তখন সে নিস্তেজ অচেতন। গত ১২ ডিসেম্বর শুক্রবার সোয়া দুইটার দিকে আততায়ীর হাতে গুলিবিদ্ধ হওয়ায় তাকে দেখতে ছুটে গিয়েছিলাম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। অনেকক্ষণ সেখানে অপেক্ষা করেছিলাম এক নজর দেখার জন্য। অবশেষে যখন তাকে ঢাকা মেডিকেল থেকে এভারকেয়ারের উদ্দেশ্যে স্থানান্তর করা হয়, তখন তার স্ট্রেচার ধরে তাকে স্পর্শ করার সুযোগ হয়েছিল।’
‘সর্বশেষ আজ স্পর্শ করলাম কফিনবন্দি বীর শরীফ ওসমান হাদিকে। জানাজা শেষে যখন তাকে নিয়ে যাওয়া হয় তার অন্তিম শয্যার উদ্দেশ্যে।’
মামুনুল হক লেখেন, ‘খুব অল্প সময়ে তার সঙ্গে আমার এই উপাখ্যান। সময়ের এই সাহসী সন্তানের সঙ্গে জীবনের এই টুকরো টুকরো স্মৃতিগুলো রোমন্থন করলাম নিজেকে গৌরবান্বিত ভেবে। তার মৃত্যু জুলাই বিপ্লবকে যেভাবে পুনর্জাগরিত করল, তা দেখে খুনিরা আফসোস করতেই পারে। কষতে পারে লাভ লসের হিসাব। এমন মৃত্যুকে নিয়েই রচিত হয়েছে অমর কাব্য- জীবনের চেয়ে দৃপ্ত মৃত্যু তখনই জানি, শহীদের খুনি হেসে উঠে যবে জিন্দেগানি।’
