সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক
রাজনৈতিক বৈরিতায় আম-ছালা দুটোই যাবে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৩৪ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে সরকার ও নির্বাচন কমিশন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলা হলেও জনমনে নির্বাচন নিয়ে সংশয় কাটছে না। দলীয় এজেন্ডার কারণে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন কোনো কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়লে বাংলাদেশের বিদ্যমান নিরাপত্তা ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পাবে এবং সে রকম পরিস্থিতিতে আম-ছালা দুটোই চলে যেতে পারে।তিনি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার উদাত্ত আহ্বান জানান।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অবাধ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে সরকারের দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সরকারকে দ্রুত যাবতীয় পক্ষপাতদুষ্টতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিতর্কিত উপদেষ্টাদের দ্রুত প্রত্যাহার করে প্রয়োজনে উপদেষ্টামণ্ডলী পুনর্গঠন করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই সরকারকে নির্বাচন পর্যন্ত যেতে হলে সরকারের মধ্যে থাকা ‘সরকারগুলো’ অবিলম্বে ভেঙে দিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সমগ্র প্রশাসনকে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন সরকারের কার্যকরী নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হবে।
সাইফুল হক সমগ্র প্রশাসনকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করে ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন- সরকার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হলে নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।
তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের প্রথম কাজ হচ্ছে- ভেঙে পড়া সমগ্র নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর জনআস্থা প্রতিষ্ঠিত করা। সরকার, রাজনৈতিক দল বা বিশেষ কোনো মহল থেকে যেকোনো ধরনের অন্যায়, অযৌক্তিক ও অনৈতিক দাবি, চাপ বা হুমকি দৃঢ়চিত্তে মোকাবিলা করা; প্রয়োজনে এসব অন্যায্য চাপ জনসম্মুখে প্রকাশ করা।
সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক আরও বলেন, আরপিও বা নির্বাচন বিধি চূড়ান্ত করার আগে নির্বাচন কমিশনের কাজ হচ্ছে রাজনৈতিক দল ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের মতামত গ্রহণ করা।তিনি বলেন, নির্বাচনে অঢেল অর্থব্যয়সহ নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ, ধর্মীয় অনুভূতির ব্যবহার বন্ধ এবং নির্বাচনের সত্যিকার গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত না হলে নির্বাচন অর্থহীন হয়ে যাবে।
সাইফুল হক মনে করেন, নির্বাচনকালীন নির্বাচনসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলো নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে নিয়ে আসাও জরুরি।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজনৈতিক মতভিন্নতা বা রাজনৈতিক প্রতিযোগিতাকে উগ্র-বৈরিতায় নিয়ে যাওয়া হবে আত্মঘাতী। হিংসাশ্রয়ী এই বিভক্তি বিভাজনের কারণে গণঅভ্যুত্থানের অবশিষ্ট অর্জন হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবিত জুলাই সনদ সম্পর্কে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির অবস্থান তুলে ধরে সাইফুল হক বলেন, আমরা মনে করি- দলগুলো কর্তৃক জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরের পর আর কোনো অঙ্গীকারনামার প্রয়োজন হয় না।কারণ, স্বাক্ষর করাটা অঙ্গীকারনামার চেয়ে বেশি কিছু।তারপরেও যদি অধিকাংশ রাজনৈতিক দল অঙ্গীকারনামার প্রয়োজন বোধ করে, তাহলে ৮ দফা অঙ্গীকারনামার প্রথম দফাটি বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।
