আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাইফুল ইসলাম টিপু। বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে কমিশন ষড়যন্ত্র করলে হুদা কমিশনের মতো নির্বাচন কমিশনের পরিণতি হবে, ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হতে হবে। 

শনিবার (৪ অক্টোবর) বিকালে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের লোকমানপুর বাজারে এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। 

তাইফুল ইসলাম টিপু বলেন, বিগত ১৭ বছর জনগণ নিজের ভোট নিজে দিতে পারেনি। শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারেনি। বিএনপির নেতা-কর্মীরা মামলা, জেল-জুলুম মাথায় নিয়ে রাজপথে থেকেছে, নির্যাতন সহ্য করেছে। এবারও যদি ষড়যন্ত্র হয়, তবে জনগণ তা প্রতিরোধ করবে। 

একটি মহল দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে অভিযোগ তুলে বিএনপি নেতা বলেন, ২০০৮ সালের মতো পরিকল্পিতভাবে কারচুপির ছক আঁকা হচ্ছে। আমরা সেই অভিজ্ঞতা থেকে সতর্ক আছি। জনগণের রায় প্রতিফলিত না করলে, নির্বাচন কমিশনকে হুদা কমিশনের মতোই ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হতে হবে। 

প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা সীমিত করে দেওয়ার নীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনারা আইন করেছেন যাতে প্রার্থীরা পোস্টার ছাপাতে না পারে, মিছিল-মিটিং করতে না পারে। ২০টা বিলবোর্ড দিয়ে বিশাল নির্বাচনী এলাকায় কিছুই হবে না। পোস্টার মারা, মিছিল-মিটিং করা আমাদের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। এ আইন বাতিল করতে হবে। 

আরও পড়ুন

আরও পড়ুন

জামায়াত ধর্মের জন্য ক্ষতিকর: বিএনপি নেতা আমিনুল হক

এ সময় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিএনপির এ নেতা। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি দলের একটি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের প্রিজাইডিং অফিসার করার চেষ্টা করছে। প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় এখনো নির্বাচনবিরোধী লোক বসে আছে। এরা বিগত দিনের নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করেছে। এবার তাদের সরাতে হবে। না হলে নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে না। 

সরকারের সাম্প্রতিক নিয়োগ প্রক্রিয়াকেও ষড়যন্ত্র আখ্যা দেন তিনি। এ বিষয়ে টিপু বলেন, এখন পুলিশে চার হাজার এসআই নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো নিয়োগ দেওয়ার দরকার নেই। দ্রুত বিসিএসের মাধ্যমে নতুন কর্মকর্তাদের বসানো হচ্ছে, যাদের ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হবে। এভাবে প্রশাসনকে হাতিয়ার বানিয়ে নির্বাচন প্রভাবিত করার চেষ্টা হচ্ছে। এই নিয়োগ-এই খেলা বন্ধ করতে হবে।

নাটোর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী এই নেতা বলেন, জনগণের রায় প্রতিফলিত না করলে নির্বাচনের কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। বিএনপি কোনো ষড়যন্ত্রের কাছে মাথা নত করে নাই, ভবিষ্যতেও করবে না। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নিরপেক্ষ থেকে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। 

পথসভায় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য দোয়া চান। পরে গ্রামে গ্রামে ঘুরে উঠান বৈঠক ও মতবিনিময় সভায় অংশ নেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময়, করমর্দন ও মোলাকাত করেন। 

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম মোস্তফা নয়ন, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র একেএম শরিফুল ইসলাম লেলিন, পৌর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শামীম সরকারসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা।