বিএনপি যেসব মানদণ্ডের ভিত্তিতে প্রার্থী বাছাই করছে
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:১২ পিএম
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সেই সময় ধরে বিএনপির নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। প্রায় ৭০ শতাংশ আসনে সম্ভাব্য একক প্রার্থীর তালিকা দলটির হাইকমান্ডের কাছে রয়েছে। প্রার্থী বাছাইয়ে যোগ্যতার মানদণ্ড বেঁধে দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কেউ কাজ করলে কিংবা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে বিএনপি। এমন সতর্কবার্তা ইতোমধ্যে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, আসনভিত্তিক প্রার্থী যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। একক প্রার্থী নির্ধারণে গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে একক প্রার্থীদের ‘সবুজ সংকেত’ দেবে বিএনপি। ইতোমধ্যে প্রত্যেক আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দায়িত্বশীল নেতারা। সম্ভাব্য প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ, জেলা, উপজেলার শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও কথা বলছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একই সঙ্গে জরিপে এগিয়ে থাকা মনোনয়নপ্রত্যাশীদের বিষয়ে আরও বিস্তর খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, সেভাবেই আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আগামী নির্বাচনের জন্য বিএনপি পুরোপুরি প্রস্তুত। একক প্রার্থীর তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। কবে নাগাদ সম্ভাব্য প্রার্থীদের সবুজ সংকেত দেওয়া হবে, সেটা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও নীতিনির্ধারকরা এ বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেবেন।
যদিও দলটির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, খুব শিগ্গিরই আসনভিত্তিক একক প্রার্থীকে মাঠে কাজ করার জন্য আমরা গ্রিন সিগন্যাল দেব। তবে সেটা চূড়ান্ত নয়। তফশিল ঘোষণার পর পার্লামেন্টারি বোর্ডের মাধ্যমে আমরা চূড়ান্ত মনোনয়ন দেব।
তিনি এও বলেন, প্রতিটি আসনে আমাদের একাধিক যোগ্য প্রার্থী আছেন। অনেক আসনে আমাদের পাঁচজন, সাতজন এবং দশজন করে যোগ্য প্রার্থী আছেন। সুতরাং একটা নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়টা আমাদের দেখতে হচ্ছে।
আন্তর্জাতিকভাবে, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা, দলের সাংগঠনিক টিম এবং মিডিয়ার মাধ্যমে এসব জরিপ করা হয়। এছাড়া বিএনপির গুলশান অফিসের ৩ জন এবং একটি জাতীয় দৈনিকের ২ প্রতিনিধি নিয়ে সারা দেশে জরিপ চালানো হয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বেঁধে দেওয়া ‘মানদণ্ডে’ (আন্দোলন-সংগ্রামে সম্পৃক্ত ত্যাগী, সততার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, এলাকায় জনপ্রিয় ও ক্লিন ইমেজধারী) এসব তালিকায় প্রতিটি আসনে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ওঠে আসে। তাদের নিয়েই সম্প্রতি গুলশান কার্যালয়ে দলের দায়িত্বশীল নেতারা বৈঠক করেন। নির্বাচনি প্রস্তুতি ও মাঠপর্যায়ে দলের সাংগঠনিক শক্তি আরও জোরালো করাসহ দলের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, নির্বাচনি মাঠে তার পক্ষে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান তারেক রহমান। একই সঙ্গে কঠোর বার্তাও দেন তিনি।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্ভাব্য একক প্রার্থীদের প্রথমে অনানুষ্ঠানিকভাবে সবুজ সংকেত জানানো হবে। মাঠপর্যায়ে তারা প্রচার-প্রচারণা চালাবেন। আসনগুলোয় অন্য যারা মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন, তারাও সবুজ সংকেত পাওয়া প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করবেন। এ সময়ে তাদের কঠোর নজরদারিতে রাখা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে তফশিল ঘোষণার পর দলের পার্লামেন্টারি বোর্ডে মাধ্যমে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হবে।



