Logo
Logo
×

রাজনীতি

খালেদা জিয়া কি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন?

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০১:১৩ পিএম

খালেদা জিয়া কি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন?

খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারিক আদালত।

বৃহস্পতিবার বেলা ২টা ২০ মিনিটে পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।

মামলায় সাজা হওয়ার পর চারিদিকে নানা প্রশ্ন উঠেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়া কী অংশ নিতে পারবেন?  এ নিয়ে আইন বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন।

বিএনপি নেতারা এবং  খালেদা জিয়া নিজেও বুধবার সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, তাকে সাজা দিয়ে সরকার আসলে ভোট থেকে তাকে বাদ দেয়ার উদ্দেশ্যই বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।

সংবিধান ও নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ন্যূনতম দুই বছর দণ্ডিত হলে সংসদ সদস্য হওয়ার ও থাকবার যোগ্যতা হারান যে কেউ। মুক্তিলাভের ৫ বছর পার না হওয়া পর্যন্ত ভোটে অংশ নেয়া যায় না।

এই আইন অনুযায়ী খালেদা জিয়া ভোট করার যোগ্যতা হারিয়েছেন; তবে আপিল করলে বিষয়টি হবে ভিন্ন।

এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক বলেন, নিম্ন আদালতের সাজা নিয়ে আপিল হবে। সেক্ষেত্রে বিচারাধীন অবস্থায় ভোটে অংশ নিতে বাধা নেই।

নবম সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-১ আসন থেকে এভাবেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন মহীউদ্দীন খান আলমগীর। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় তার ১৩ বছর সাজা হয়েছিল।

রায়ের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনেও খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, তাকে ভোট থেকে বাদ দেয়ার চেষ্টায় সরকার এ মামলার রায় দিচ্ছে।

খালেদা জিয়ার সাজা হলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে কী- পারবে না এ প্রশ্নের জবাবে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নৈতিক স্খলনজনিত কারণে অভিযুক্ত হয়ে কারও দুই বছরের অধিক সাজা হলে সাজার পরবর্তী পাঁচ বছর তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হবেন- এই হলো বিধান।

তিনি বলেন, কিন্তু সাজাটি সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত যেতে হবে। বিচারিক আদালত হলে হাইকোর্টে আপিল হবে, তারপর আবার আপিল বিভাগে আপিল হবে। সে পর্যন্ত গিয়ে যদি সাজা টিকে যায়, তাহলে তিনি সাজা খাটার পরবর্তী পাঁচ বছর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য হবেন।

তবে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের রায় পেরিয়ে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির সম্ভাবনা কম।

সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেন, হাইকোর্ট কিংবা আপিল বিভাগে বিচারিক আদালতের সাজা স্থগিত হয়ে গেলে বা জামিনে থাকলে নির্বাচনে অংশ নিতে পারা যায়। তবে সর্বোচ্চ আদালতে বিচারিক আদালতের সাজা টিকে গেলে তখন যদি তিনি সংসদ সদস্য হন, তাহলে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যাবে।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোবারক জানান, বাংলাদেশের নির্বাচনী আইনে উচ্চ আদালতে বিচারাধীন অবস্থায় অংশ নিতে বাধা না থাকলেও ভারতের নির্বাচনী আইনে নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলেই নির্বাচনে অযোগ্য হওয়ার বিধান রয়েছে।

রায়ে সাজা হওয়ার পর খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবে কী-না এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সংবিধানে বলা আছে, নৈতিক স্খলনের জন্য কারও যদি দুই বছরের অধিক সাজা হয়,তাহলে তিনি সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। 

তিনি বলেন,সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্টের দুটি রায় আছে,তাতে বলা আছে,আপিল যতক্ষণ না পর্যন্ত শেষ হবে,ততক্ষণ পর্যন্ত মামলা পূর্ণাঙ্গ স্থানে যায়নি,সে জন্য দণ্ডপ্রাপ্ত হলেও তিনি নির্বাচন করতে পারবেন। এছাড়া আরেকটি রায় আছে,তাতে পারবেন না। এখন ওনার (খালেদা জিয়া) ব্যাপারে আপিল বিভাগ এবং স্বাধীন নির্বাচন কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেবে,সেটা তাদের বিষয়।

তিনি বলেন, ‘একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি করার পর সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন,এটা আমাদের ভাবমূর্তি খুব একটা উজ্জ্বল করে না। তবে অন্ততপক্ষে পৃথিবীর কাছে বলতে পারব,যারা দুর্নীতি করে,এ দেশে তাদের বিচার হয়।’

খালেদা জিয়া মামলা রায় নির্বাচন

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম