সাবেক রাষ্ট্রপতি, বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, ছবি: ইউটিউব
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সাবেক রাষ্ট্রপতি, বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
আজ সকাল পৌনে ৮টায় ঢাকা সামরিক হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন তিনি। তার মৃত্যুতে শোকাহত দেশবাসী।
এরশাদের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন তার বিভিন্ন কীর্তি তুলে ধরছে দেশের গণমাধ্যমগুলো। এরইমধ্যে কবিতা ও কাব্যচর্চার প্রতি এরশাদের গভীর প্রেমের কথা প্রকাশ পেয়েছে।
তার কবিতা ভাবনা ও কাব্যজীবনের প্রতি তীব্র আগ্রহ ও ভালোবাসার বিষয়টি বিবেচনা করলে অনেকের মনে হতে পারে রাজনীতিবিদ কিংবা সেনাপ্রধান নয়, তার একান্ত তীব্র ইচ্ছে ছিল কবি হওয়ার।
আর সেই ইচ্ছাকে দমিয়ে রাখতে পারেননি। আমৃত্যু কবিতাকে ভালোবেসে গেছেন, লিখেছেন অনেক কবিতাও। তাই জীবনের শেষ পর্যন্ত সেসব কাব্য সাধনার জন্য হয়েছেন আলোচিত ও প্রশংসনীয়।
কবি এরশাদের কবিতায় দেশের রূপ, সৌন্দর্য ও প্রকৃতির পাশাপাশি প্রেমের তীব্র আহ্বান লক্ষণীয়। তার একটি জনপ্রিয় কবিতা ‘প্রেমগীতি’। যেখানে কবি এরশাদ লিখেছেন- ‘ক্লান্ত বিকালে অবশ পায়ে/ ঘুরেছি যখন এই পথে। শান্ত নদীর নীরব কিনারে/ দেখা হয়েছিল তোমার সাথে।’
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার প্রিয়তমা স্ত্রীর প্রতি অনুরাগ প্রকাশ করেছেন কবিতার মাধ্যমে।
জাতীয় পার্টির এক সভা ছেড়ে চলে যেতে থাকা স্ত্রী রওশনের হাত ধরে থামিয়ে এরশাদ তাকে শুনিয়েছিলেন নিজেরই লেখা একটি কবিতার কয়েকটি লাইন- ‘নিঃসঙ্গ ধূসর বিশাল এক অন্ধকারে... আমি জেগে আছি... কোথায় উষার জ্যোতি ... কতদূর আলোর মৌমাছি?’
এর পর স্ত্রীকে বলেন, রওশন তুমি আমার আলোর মৌমাছি।
কবিতার প্রতি এমন গভীর প্রেম বিষয়ে এরশাদ বলেছিলেন- ‘আমি বাংলার ছাত্র ছিলাম। রবীন্দ্রনাথ পড়েছি, নজরুল পড়েছি, মাইকেল মধুসূদন, সুকান্ত পড়েছি। তাদের লেখায় প্রভাবিত হয়েছি। তবে আমি যা ভেবেছি তাই বইয়ে লিখেছি।
দেশ পরিচালনার পাশাপাশি সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বেশ কিছু কবিতার বই উপহার দিয়েছেন বাংলা সাহিত্যপ্রেমীদের।
প্রতিটি বইমেলায় ছিল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পদচারণা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ২৭টির বেশি বই বইমেলায় প্রকাশ পেয়েছে তার।
এর মধ্যে মাত্র ৪টি গদ্যগ্রন্থ, বাকি সবই কবিতার বই। তার লেখা কবিগুলোর মধ্যে অন্যতম - হে আমার দেশ, ভালোবাসার বাংলাদেশ, ঈদের কবিতা, বৈশাখের কবিতা, প্রেমের কবিতা, ‘একুশের কবিতা’, ‘যে কবিতা সুর পেল’, ‘জীবন যখন যেমন’ ও ‘এক আকাশে সাত তারা’ ইত্যাদি।
কবিতা লেখার পাশাপাশি কবিতা আবৃত্তিও বেশ ভাল পারতেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। আবৃত্তি তাকে চরমভাবে আকর্ষণ করত। অবসরে নিজের ও বিভিন্ন কবির লেখা কবিতা আবৃত্তি করতেন তিনি।
তার নিজের লেখা একটি কবিতার আবৃত্তি শুনুন:
