কর্তৃত্ববাদী সরকারকে জনতার রোষানলে পরতে হয়েছে: মির্জা আব্বাস
যাত্রাবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১:২৪ এএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, যারা একনায়কতন্ত্র কর্তৃত্ববাদী সরকার কায়েম করেছিল, জনগণের ওপর জুলুম নির্যাতন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিল। তারা কিন্তু ক্ষমতায় থাকতে পারে নাই। তাদের প্রত্যেককে জনতার রোষানলে পরতে হয়েছে। তাদের সাজা পেতে হয়েছে।
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এক দফা দাবিতে শুক্রবার যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক সড়কে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, এই সরকারের নেতৃবৃন্দ বলেন- যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে না পারেন তাহলে ডিসি এসপিদের কারো চাকরি থাকবে না, কেউ বাঁচতে পারবে না। এ কথা আমরা বলছি না ওরা (আওয়ামী লীগ) বলছে। তাদের একথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়ায়। কেন বলে? কর্মীদেরকে ভয় দেখায়।
তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা হত্যাকারী নয়। আওয়ামী লীগের লোকও এ দেশের নাগরিক, বিএনপির লোকজনও এ দেশের নাগরিক। বিএনপি কারো চাকরি খাওয়ার জন্য কারো হত্যা করার জন্য রাজনীতি করে না। যদি কোনো ডিসি এসপি অপরাধ করে দেশের আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে বহু জুলুম নির্যাতন করেছে। এই ১৫ বছরে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশের জেলে আমাদের কত ভাই বোন রয়েছে। আমরা আর জুলুম সইতে পারবনা। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজনু, ঢাকা ৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব রবিনসহ সারা দেশে অনেক নেতাকর্মী বিনা অপরাধে জেলে রয়েছে। তাদের এই জুলুম নির্যাতন আমরা সহ্য করতে চাইনা। যারা জুলুম অত্যাচার করছে তাদের আমরা রুখে দাঁড়িয়েছি। আজকে বর্তমান সরকারের পতনের লক্ষে সারা বাংলাদেশ ফুঁসে উঠেছে। সারা বাংলাদেশে আজকে আন্দোলন হচ্ছে, মিছিল, পদযাত্রা, রোড মার্চ হচ্ছে।
মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে ঢাকা মহানগর উত্তরে ঝড় উঠেছে, সেখানে বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য রাখছেন। দক্ষিণে যাত্রাবাড়ীতে তুফান উঠেছে সিডর উঠেছে। এখানে যে লোকজন আছে তারা যদি ঢাকার দিকে রওয়ানা দেয় কেউ টিকে থাকতে পারবেন? কেউ টিকে থাকতে পারবে না।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা প্রস্তুতি নিন। সময় আসছে এই লুটেরা সরকারকে আমরা আর ক্ষমতায় দেখতে চাই না।
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, এই সরকার পোড়ানীতি মাটির সরকার। অর্থাৎ দেশ জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাক খালি মাটি চাই। সেই মাটিতে আমি (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় থাকব। এই সরকার এই দেশের জনগণকে খুন করে ঘুম করে জখম করে হত্যা করে গ্রেফতার করে জেলে পুড়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
তিনি আরও বলেন, সরকারের ১৫ বছরে চালের দাম চিনির দাম ডালের দাম কিসের দাম বাড়ে নাই। সব জিনিসের দাম বেড়েছে। একটা জিনিসের দাম কমে গেছে, সেটা মানুষের জীবনের দাম। বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করছে না। আমরা দেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরে আনতে চাই। দেশের মানুষের কথা বলার অধিকার ফিরে আনতে চাই। এ দেশের মানুষ কথা বলতে পারে না। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, কর্তৃত্ববাদী সরকার যারা জনগণের উপরে অত্যাচার নির্যাতন ঘুম খুন মামলা হামলা চাপিয়ে দিয়েছে সেই সরকারকে আজে উদ্দেশ্য করে বলতে চাই, আপনার বুকে হাত দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের দিকে তাকিয়ে দেখুন তারা কি চায়। আজকে তারা একটি জিনিষই চায় যার নাম হচ্ছে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ টাকা সম্পদ কিছুই চায়না । তারা অর্থলোভী নয়। বাংলাদেশের মানুষকে আপনারা জিজ্ঞাসা করুন তারা কি চায়। তারা বলবে আমরা না খেয়ে থাকতে রাজি আছি, কিন্তু ভোট না দিয়ে আমরা থাকব না। ভোটের অধিকার আদায় না করে আমরা ঘরে ফিরব না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাছির উদ্দিন, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সফু, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপি নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির মহিলা দলের সভানেত্রী মিসেস আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক ছাদেক খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নবী উল্যাহ নবী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইশরাক হোসেন প্রমুখ।
