লামিয়ার জানাজায় সারজিস
এভাবে বোনকে হারানো কতটা মর্মান্তিক, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না
দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জুলাই আন্দোলনে শহিদ জসিম হাওলাদারের কন্যা লামিয়া ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেন। তার জানাজায় অংশ নেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় আমি বাকরুদ্ধ। একজন তরুণীকে, একজন বোনকে এভাবে হারানো কতটা মর্মান্তিক, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এমন যেন কখনো কোনো বোনের সঙ্গে না ঘটে, এমনটিই আমাদের প্রার্থনা।
শনিবার মোহাম্মদপুরের একটি ছোট্ট ভাড়া বাসায়, মায়ের ক্ষণিকের অনুপস্থিতিতে ফাঁস নিয়ে নিজের জীবন শেষ করে দেন জুলাই বিপ্লবে পুলিশের গুলিতে শহিদ হওয়া পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার শহিদ জসিম হাওলাদারের কন্যা লামিয়া (১৯)। এ ঘটনায় পুরো দেশজুড়ে শোকের ছায়া তৈরি করেছে।
রোববার তার নিথর দেহ পটুয়াখালীর দুমকিতে সন্ধ্যায় পৌঁছায়। সেখানে জানাজায় অংশ নেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ ও এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের প্রশাসনকে আরও কাঠিন্য এবং দায়িত্বশীল হতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
জানাজা শেষে লামিয়ার মরদেহ বাবার কবরের পাশে শায়িত করা হয়।
শোকাহত হয়ে নেটিজেন ও স্থানীয়রা বলেছেন, লামিয়ার সবচেয়ে বড় শূন্যতা ছিল তার তথাকথিত প্রেমিক ইমরান মুন্সির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ। প্রেমিক তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং লামিয়া সেই বিশ্বাস নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেননি। বিশ্বাস করেছিল তাকে বিয়ে করলেই সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে; কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হয়ে গেল, আর সেখান থেকে তার হৃদয় ভেঙে গিয়েছিল।
তার পরিবার ও বন্ধুরা সঠিক বিচারের দাবি করে বলেন, সে যদি সত্যিকার ভালোবাসা পেত, তাহলে হয়তো এভাবে জীবন শেষ করে দিতে হতো না।
গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় লামিয়া তার বাবার কবর জিয়ারত করে নানারবাড়ির উদ্দেশে রওনা হন; কিন্তু সে জানতো না, তার পথের এই দুর্বিষহ পরিণতি। সাকিব ও সিফাত নামে দুজন যুবক তাকে অনুসরণ করে এবং পাশের একটি বাগানে নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। ছবির মাধ্যমে তার সম্মান নষ্ট করে সামাজিকমাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। পরের দিন নির্যাতিত লামিয়া দুমকি থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করে কোর্টে সোপর্দ করে। আসামিরা বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।
