সারজিসের বক্তব্যের সময় দুইপক্ষের হাতাহাতি, আহত ৪
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৬ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বগুড়া শহরের শহিদ টিটু মিলনায়তন চত্বরে বুধবার বিকালে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পূর্বঘোষিত সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় দুইপক্ষের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া ও পালটাধাওয়ার ঘটনায় অন্তত চারজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন ছুরিকাহত।
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বক্তব্য রাখার সময় এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ছিলিমপুর মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এটিএসআই লালন হোসেন জানান, আহতদের মধ্যে একজন ছুরিকাহত রয়েছেন।
আহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একাংশের নেতাকর্মীরা হলেন-বগুড়া শহরের উত্তর চেলোপাড়ার জাকির হোসেনের ছেলে জুনায়েদ হোসেন (২১), শহরের বৃন্দাবনপাড়ার মৃত মোকাব্বের হোসেন বাদলের ছেলে তাহমীদ হোসেন (২৫), গাবতলীর হাটফুলবাড়ির শালুকগাড়ির মইনুল ইসলামের ছেলে রিয়াদ হাসান (২৬) ও গাবতলীর পদ্মপাড়ার মৃত তানজিবুলের ছেলে মো. তাওহীদ (১৯)। এদের মধ্যে জুনায়েদের নিতম্বে তিনটি ও হাতে দুটি ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে জেলা এনসিপি বুধবার বিকালে বগুড়া শহরের শহীদ টিটু মিলনায়তন চত্বরে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি দেয়। এনসিপির জেলা সংগঠক আহমেদ সাব্বির তাদের কর্মসূচি সফল করতে এ ব্যাপারে মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমন্ত্রণ জানান।
এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের জেলা মুখপাত্র মো. আইয়ুব একই স্থান ও সময়ে পালটা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, এনসিপির ব্যানারে গণহত্যার বিচারের দাবিতে যে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে সেখানে সারজিস আলম আওয়ামী লীগকে সঙ্গে নিয়েই কি তাদের পুনর্বাসন করতে চাইছেন। এনসিপি নেতাদের নিয়ে কি জামায়াতের বি টিম তৈরি করতে চাচ্ছেন। আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিপ্লবী চেতনার ধারক-বাহক হয়ে এ অপচেষ্টাকে প্রতিহত করতে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছি।
তবে অপর অংশের বগুড়া জেলা সদস্য সচিব সাকিব খান বলেন, কেউ এভাবে পালটা কর্মসূচি দিতে পারে না। তাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি চলবে।
এদিকে বুধবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে ওঠার কিছুক্ষণ পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে আসেন। এনসিপির নেতাকর্মীরা বাধা দিলে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি শুরু হয়। তিন দফা তাদের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া পালটাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
সারজিস আলম বক্তব্য দেওয়ার সময়ও দুইপক্ষের মধ্যে মারামারি চলতে থাকে। মারপিট ও ছুরিকাঘাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চারজন আহত হন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের জেলা মুখপাত্র মো. আইয়ুব বলেন, এনসিপির কর্মসূচি চলাকালে তিনি সেখানে যাননি। তবে শুনেছেন, তাদের চার নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এনসিপির বগুড়া জেলার অন্যতম সংগঠক আহমেদ সাব্বির বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বগুড়ায় এনসিপির বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি ছিল। এনসিপি থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত কেন্দ্রীয় এক নেতার কিছু উচ্ছৃঙ্খল সমর্থক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি অংশের কিছু নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে এসে সারজিস আলমের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়াসহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেন। এ সময় হাতাহাতি হয়েছে। পরে তাদের প্রতিহত করে সমাবেশস্থল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর বলেন, এনসিপির সমাবেশে প্রতিপক্ষের লোকজন এসেছিলেন। সেখানে সংঘর্ষ হয়নি; দুইপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। একপক্ষ অন্যপক্ষকে তাড়িয়ে দিয়েছে। সেখানে কাউকে ছুরিকাঘাত করার ঘটনা তারা দেখেননি।
