ফিলিস্তিন-কাশ্মীর-আরাকানের পক্ষে
মুসলিম উম্মাহর ঐক্যে আলেমদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৫, ১০:০৬ পিএম
সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের নেতারা। ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ফিলিস্তিন, কাশ্মীর ও আরাকানে (রোহিঙ্গা) নির্যাতিত মুসলিমদের পাশে দাঁড়াতে হলে শিয়া-সুন্নি-ওহাবি মতানৈক্য ও বিভেদ ভুলে বিশ্ব মুসলিমকে এক উম্মাহ হিসেবে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের জন্য আলেম সমাজের ভূমিকা রাখতে হবে বলে আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।
একইসঙ্গে ইসরাইল, ভারত আর মিয়ানমারের মতো মুসলিম নির্যাতনকারীর সঙ্গে আঁতাতকারীদের মুসলিম উম্মাহর শত্রু ও তারা আলেম নামের দাজ্জাল এবং যারা আলেম হয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে, তারা মুসলিম জাতির শত্রু। আখেরাতে তারা আল্লাহর কাছে দায়ী থাকবে।
শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে এক বিক্ষোভ শেষে সমাবেশে এসব কথা বলেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের নেতারা।
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিনের সভাপতিত্বে বিক্ষোভে বক্তৃতা করেন যুগ্ম-আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব ও ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র মাওলানা মো. ইলিয়াস আতহারী।
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বলেন, শিয়া-সুন্নি-ওহাবি মতানৈক্য ও বিবেধ ভুলে বিশ্বমুসলিমকে এক উম্মাহ হিসেবে ফিলিস্তিন, কাশ্মীর ও আরাকানে (রোহিঙ্গা) নির্যাতিত মুসলিমদের পাশে দাঁড়াতে হবে। বিভেদ নয় মুসলিম ঐক্য চাই, উম্মাহর ঐক্য চাই।
ইসরাইল, ভারত আর মিয়ানমারের মতো মুসলিম নির্যাতনকারীর সঙ্গে আঁতাতকারীরা মুসলিম উম্মাহর শত্রু ও তারা আলেম নামের দাজ্জাল। যারা আলেম হয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে তারা মুসলিম জাতির শত্রু। আখেরাতে তারা আল্লাহর কাছে দায়ী থাকবে।
কাশ্মীর, ফিলিস্তিন আর আরাকানের মুসলিম এক ও অভিন্ন উম্মাহর সদস্য। তাদের পাশে সব মুসলিমকে দাঁড়াতে হবে।
এ সময় ফিলিস্তিনে নতুন করে ১৬৫ জনকে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এক উম্মাহ, এক কালেমা, এক কুরআন, এক নবী (সা.), এক আল্লাহ- এ ধারণাকে সামনে রেখে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য, কাশ্মীরের স্বাধীনতার জন্য ও আরাকানের স্বাধীনতার জন্য এক মুসলিম উম্মাহ হিসাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব বলেন, আমরা ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ করে আসছি। আমাদের কিছু সাফল্য আসেছে। কিন্তু চূড়ান্ত সাফল্য আসে নাই। ফিলিস্তিন যতক্ষণ না পর্যন্ত স্বাধীন হবে আমাদের এই আন্দোলন চলবে। মুসলমানদের প্রথম কেবলা ফিলিস্তিনের রক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পাশের রাষ্ট্র ইসরাইলের দোসর হিন্দুত্ববাদী ভারত জায়োনিস্ট হওয়ার চেষ্টা করছে। ভারত বিভিন্ন নাটক করে কাশ্মীরি মুসলমানদের হত্যা করার জন্য যে পাঁয়তারা করছে, সেটা আমরা রুখে দেব। আমরা দেখেছি ভারতীয় ওয়াকফ আইন বাতিল করে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলা করে পাকিস্তানকে দুর্বল করার জন্য পাকিস্তানে হামলা করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, ভারত পরাজয় বরণ করেছে। কারণ মুসলমানরা পরাজয় বরণ করতে পারে না।
সাইয়েদ কুতুব বলেন, আমরা বিশ্বাস করি পাকিস্তানের পরাজয় মানে সারাবিশ্বের মুসলমানের পরাজয়। আমরা পাকিস্তানকে বলব, আপনারা বিশ্ব মুসলমানদের নেতৃত্ব দিন, মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে পারমানবিক বোমার বিস্তার করে দিন। তাহলে কেউ মুসলমানদের ভূখণ্ড দখল করার দুঃসাহস দেখাবে না।
এ সময় ভারত ও ইসরাইলি পণ্য বয়কটেরও আহবান জানান জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক।
ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র মাওলানা মো. ইলিয়াস আতহারী জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের অব্যাহত বিক্ষোভের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে তার বলেন, দলমত নির্বিশেষে জাতীয় বিপ্লবী পারিষদের অব্যাহত আন্দোলনে সব মুমিন মুসলমানের ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত। মানবিক করিডোরের নামে যে পাঁয়তারা চলছে, তা আসলে ভারতের ষড়যন্ত্র।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব গালীব ইহসান, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজু আহমেদ সদর ও ওয়াসিম আহাম্মদ; বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, সদস্য সচিব ফজলুর রহমান, সহকারী সদস্য সচিব মো. আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম, সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া শাখার আহ্বায়ক রাকিব মণ্ডল ও সদস্য সচিব জিনাত হোসাইন ও সহকারী সদস্য সচিব মো. সোহাগ, ইসলামী ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন প্রমুখ।
