Logo
Logo
×

শেষ পাতা

সাম্য হত্যার বিচার দাবি

ছাত্রদলের সাত ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ছাত্রদলের সাত ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রদল। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে এ কর্মসূচি। এতে শাহবাগ, ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, মৎস্যভবন, বাংলামোটর, কাঁটাবন, এলিফ্যান্ট রোড, হাতিরপুল, কাকরাইলসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থী, অফিসগামী ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন এবং পরিবহণ শ্রমিকরা চরম ভোগান্তির শিকার হন। একই সময়ে বৃষ্টি ও প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস ওঠে মানুষের। সরেজমিন দেখা গেছে, সকাল থেকে শাহবাগ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে জড়ো হতে থাকেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। সকাল ১০টার দিকে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী প্রথমে শাহবাগ ও পরে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের মোড়ে অবস্থান নেন। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। কেন্দ্রীয় ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শাখা-ইউনিটের নেতাকর্মীরা অবরোধে অংশ নেন। নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় তারা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে; আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না; সাম্য ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না; বিচার বিচার বিচার চাই, সাম্য হত্যার বিচার চাই; ইত্যাদি স্লোগান দেন। দুপুরে বৃষ্টি উপেক্ষা করে আন্দোলনকারীরা সড়কে অবস্থান করে বিক্ষোভ চালিয়ে যান।

আন্দোলনকারীরা বলেন, সাম্য হত্যায় জড়িত আসামিদের গ্রেফতার নিয়ে তালবাহানা চলছে। এখন পর্যন্ত মূল হত্যাকারী ও অন্য আসামিদের গ্রেফতার করতে না পারা হতাশাজনক। সাম্য হত্যার বিচার না হওয়া এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতার কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে রয়েছেন।

বিকাল ৫টার দিকে শাহবাগ মোড়ে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। এর আগে তিনি বলেন, সরকার আমাদের এখনো আশ্বস্ত করতে পারেনি। এখনো তারা প্রকৃত হত্যাকারীদের চিহ্নিত করতে পারেনি। এ ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের দায় রয়েছে। তারা সাম্য হত্যার পর এখনো কোনো সহমর্মিতা দেখিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়নি। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা যদি সাম্য হত্যার বিচার না পাই, তীব্র আন্দোলনে যাব। আমরা রাজপথ ছাড়ব না।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, শাহরিয়ার আলমের খুনিদের কয়েকজনকে গ্রেফতার দেখানো হলেও প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতার করা হয়নি। দ্রুত প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করতে হবে।

ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হাসানুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতা খতিয়ে দেখতে হবে। তিনি উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন।

বুধবার ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে অবরোধের কারণে শাহবাগ, ইন্টারকন্টিনেন্টাল ও বাংলামোটরসহ আশপাশের সব সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এছাড়া প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসাবে শপথ পড়ানোর দাবিতে কাকরাইলে যমুনার সামনের সড়কসহ মৎস্যভবন মোড় ও আশপাশের সব সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন তার কর্মী-সমর্থকরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন পথচারীসহ গণপরিবহণের সাধারণ যাত্রীরা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক বৃদ্ধা বলেন, অনেক কষ্টে হাসপাতালে এসেছি। কোনো গাড়ি নেই। এখন কিভাবে বাসায় ফিরব বুঝতে পারছি না।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর যুগান্তরকে বলেন, বিকাল ৫টার দিকে আন্দোলনকারীরা রাস্তা ছেড়ে চলে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

১৩ মে রাত ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে আহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরদিন সকালে নিহতের বড় ভাই শরীফুল আলম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেন।

প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন ঢাবি ও হাজারীবাগ প্রতিনিধি।

শাহরিয়ার আলম সাম্য শাহবাগ মোড় ছাত্রদল

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম