আলোচনা সভায় রাশেদ খান
উপদেষ্টা পরিষদের সংস্কার জরুরি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ১০:৩৮ পিএম
মো. রাশেদ খান ও আবু হানিফ। ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা ‘অযোগ্য’ মন্তব্য করে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান এই উপদেষ্টা পরিষদের সংস্কারের দাবি তুলেছেন। তিনি বলেন, সঠিকভাবে সবকিছু করার জন্য উপদেষ্টা পরিষদের সংস্কার জরুরি।
মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা : সংস্কার ও বাস্তবতা নিয়ে পেশাজীবীদের ভাবনা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদ।
রাশেদ খান বলেন, ‘সরকারকে বলব, জাতীয় সংলাপ যাতে চা-নাস্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে কী সিদ্ধান্ত নিলেন, সেটি জাতিকে জানান। নতুবা এই সংলাপ ব্যর্থ হিসেবে বিবেচিত হবে। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করা নিয়ে এত গড়িমসি কেন? জাতিকে অন্ধকারে রেখে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে সংস্কার করা যায় না। সংস্কারের জন্য স্বচ্ছতা ও পরিকল্পনা লাগে। ১০ মাসে কী সংস্কার করলেন? পদত্যাগ নামে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার মধ্যে নিশ্চিত কোনো রহস্য আছে। নতুবা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জন কিভাবে একটি রাজনৈতিক দলের নেতার মুখ থেকে শুনতে হয়? কেন তিনি পদত্যাগ করবেন? তার পদত্যাগ কি কেউ চেয়েছে? বরং এই জাতি তাকে সম্মানিত করেছে, ভবিষ্যতেও করবে।’
তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদে প্রধান উপদেষ্টা ছাড়া বাকিদের পারফরম্যান্স তো দেখি না? এই অযোগ্য উপদেষ্টা পরিষদ দিয়ে টিম জেতা যাবে না। প্রধান উপদেষ্টা মাঝেমধ্যে ৪ বা ৬ মারছেন। জাতির মধ্যে এতে নতুন উন্মাদনা তৈরি হচ্ছে। কিন্তু দেখলাম তো বাকিদের ১০ মাসের ব্যর্থতা। এভাবে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন কোনোটাই সঠিকভাবে হবে না। সঠিকভাবে সবকিছু করার জন্য উপদেষ্টা পরিষদের সংস্কার জরুরি। কিন্তু সেদিকে মনোযোগ নেই, সরকার বিদেশিদের তাঁবেদারি করতে করিডর, বন্দর দেওয়ার খেলায় মেতেছে। আবার বিনিয়োগ আসবে, রোহিঙ্গা ফেরত যাবে কতশত কথার ফুলঝুরি! সরকারকে বলব- যতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারবেন, ততটুকু স্বপ্ন দেখান। অতিরিক্ত স্বপ্ন দেখিয়ে, সেটির বাস্তবায়ন না করতে পারলে পরে জাতি হতাশ হবে। আমরা কেউ বলিনি সংস্কার ও বিচার ছাড়া নির্বাচন দিয়ে দেন। তবে একটার সঙ্গে আরেকটা মুখোমুখি করবেন না।’
দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ‘একটা গোষ্ঠী সংস্কার এবং নির্বাচনকে মুখোমুখি করার চেষ্টা করছে।আমরা সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচনের বিষয়ে অগ্রগতি দেখতে চাই।গণঅভ্যুত্থানের ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নাই। এমনকি গণহত্যার মামলার অনেক আসামি ইতোমধ্যে জামিন পেয়েছে, এটা শঙ্কার বিষয়।তারা এভাবে জামিন পেলে জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের জন্য বিপদ আসতে পারে, এমনকি এটা আবার নতুন করে গণহত্যাও চালাতে পারে।’
আবু হানিফ আরও বলেন, ‘আরেকটি বিষয় বিগত সময়ে আমরা দেখেছি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় কিংস পার্টি গঠন করা হতো।বর্তমানে কিছু উপদেষ্টার কাজে মনে হচ্ছে তারাও এনসিপিকে কিংস পার্টি হিসেবে রাজনীতির মাঠে নিয়ে আসছেন।সেজন্য তারা গণমাধ্যমকে ব্যবহার করছেন। এনসিপির রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন নেই, মার্কা নেই, কোনো ঘোষণাপত্র নেই, নেই কোনো দলীয় গঠনতন্ত্র; এমনকি কোনো জেলায় কমিটি নেই, একটা জেলায় ৫শ লোক নিয়ে একটা সমাবেশও করতে পারেনি। অথচ সরকারের বিশেষ মহল গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে এই দলকে একটি ফ্যাক্টর হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সভাপতি ডা. জাফর মাহমুদ। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খালিদ হাসান।
এছাড়াও বক্তব্য দেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক লতিফ মাসুম, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি ড. ইমরান হোসাইন, ড. অ্যাডভোকেট মোহা. শরিফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মেহেদি হাসান, মনিরুল মাওলা, জিএম রোকোনুজ্জামান, বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নেওয়াজ খান বাপ্পী, মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আবির আহমেদ সবুজ প্রমুখ।
