আশুরার আদর্শে মজলুম মুসলমানদের মুক্ত করার আহ্বান বিপ্লবী পরিষদের

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৫ পিএম

তাজিয়া মিছিল/ফাইল ছবি
ফলো করুন |
|
---|---|
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র, জান্নাতের যুবকদের সর্দার হযরত হোসাইনের (রা.) কারবালার প্রান্তরের অসমসাহসী লড়াইয়ের আলোকে বিশ্বজুড়ে মজলুম মুসলমানদের মুক্তি সংগ্রাম বেগবান করার জানিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।
রোববার পবিত্র আশুরা (১০ মহররম) উপলক্ষে শনিবার প্রদত্ত এক বাণীতে এ আহ্বান জানান দলটির আহবায়ক খোমেনী ইহসান।
বাণীতে তিনি বলেন, ১০ মহররম পবিত্র আশুরার দিন। এই দিন শুধু একটি শোকের দিন নয়, বরং এটি জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের চূড়ান্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলার এবং মিথ্যা-বাতিলের বিরুদ্ধে সত্যের চিরন্তন সংগ্রাম জারি করার এক কালজয়ী দিন। এই পবিত্র দিনে অন্যায়, অসত্য ও স্বৈরাচারের প্রতিভূ ইয়াজিদের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র, হযরত হোসাইন (রা.) তার পরিবার ও সহচরদের নিয়ে কারবালার প্রান্তরে শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করেন।
কারবালার সেই রক্তস্নাত প্রান্তরে হোসাইন (রা.) গোটা মানবজাতিকে শিখিয়ে গেছেন—ক্ষমতার দম্ভ, সংখ্যার আধিক্য কিংবা রাষ্ট্রীয় শক্তির সামনে সত্য ও ন্যায়ের সংগ্রাম কখনো পরাস্ত হয় না। তার আত্মত্যাগ কোনো ক্ষমতার লড়াই ছিল না, ছিল আদর্শ ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার এক মহান লড়াই।
খোমেনী ইহসান বলেন, গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, কারবালার সেই ইয়াজিদি অপশক্তির প্রেতাত্মারা আজও বিশ্বজুড়ে সক্রিয়। আজকের সময়ের সবচেয়ে বড় কারবালার প্রান্তর হচ্ছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। সেখানে দুই বছর ধরে নির্মম নিষ্ঠুর জাতিগত নিধনের শিকার হচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। সেখানে জায়নবাদী ইসরাইলি দখলদার বাহিনী নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর ইতিহাসের বর্বরতম জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে। তবে গোটা মুসলিম উম্মাহ ও বিশ্ববাসী গণহত্যাকারী ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো লড়াই করছে না, বরং বড় বড় রাষ্ট্র ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ইসরাইলকে সহযোগিতা করছে। গাজার এ পরিস্থিতি পুরোপুরি কারবালারই অনুরূপ। বিশেষ করে গাজার মুক্তিকামী মানুষ হযরত হোসাইন (রা.) ও তার সঙ্গীদের মতো আপসহীন ভাবে শাহাদাত বরণ করছেন।
খোমেনী ইহসান আরও বলেন, গাজার মতো কারবালার পরিস্থিতি ভারতজুড়েও বিরাট করছে৷ সেখানে মুসলমানেরা নির্মম নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে অধিকৃত কাশ্মীরে, যেখানে হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসনে আমাদের ভাই-বোনেরা বছরের পর বছর ধরে অবরুদ্ধ এবং নির্মম নিপীড়নের শিকার। এছাড়াও মিয়ানমারের আরাকানে, যেখানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের জাতিগতভাবে নিধন করে তাদের মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে এবং তারা বাংলাদেশে শরণার্থীর স্বীকৃতিহীনভাবে বছরের পর বছর মানবেতর জীবন যাপন করছে।
বাণীতে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আহ্বায়ক হোসাইনের (রা.) শাহাদাতের প্রকৃত শিক্ষা অন্তরে ধারণ করে কারবালার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে বিশ্বজুড়ে মুসলিম উম্মাহর ওপর চলমান সকল নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আসুন গাজা, কাশ্মীর ও আরাকানের মজলুম ভাই-বোনদের পক্ষে সোচ্চার হই এবং আমাদের মাতৃভূমিকে ইসলামের আলোকে পুনর্গঠন করে মজলুম বিশ্ব মুসলমানের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ি।