ফ্যাসিবাদের বিলোপ ও নতুন সংবিধান চায় বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪০ পিএম
ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
চব্বিশের জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্খা পূরণে ফ্যাসিবাদ বিলোপ ও নতুন সংবিধান প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ।
সংগঠনটি বলেছে, পুরোনো ফ্যাসিবাদী কাঠামো পরিবর্তন করতে নতুন সংবিধান প্রণয়ন না করায় জুলাই বিপ্লবে আত্মদানকারী সাধারণ ছাত্র-জনতা বিপ্লবের হিস্যা পায়নি।
শুক্রবার আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আয়োজিত এক শোভাযাত্রায় এ কথা বলা হয়।
ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার পতনে স্কুল, কলেজ মাদরাসা ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী; পথশিশু, রিকশাওয়ালা, কৃষক ও শ্রমিকদের অবদানকে স্মরণ করতে সংগঠনটি ঘোষিত '১৮ জুলাই গণপ্রতিরোধ দিবস' উপলক্ষে এ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।
শোভাযাত্রা শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
এতে বক্তৃতা করেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক শামসুদ্দিন আহমেদ ও যুগ্ম আহবায়ক সাইয়েদ কুতুব, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ ও সদস্য সচিব ফজলুর রহমান।
বক্তৃতায় মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন, জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহনকারীদের তালিকা যারা করছে তারা কারা? আপামর জনসাধারণের অংশগ্রহণে যে বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে তাতে কারা ছিলাম আর কিভাবে ছিলাম তা যারা জানে না তারা তালিকা করেছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়েছে মূলতঃ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, স্কুল ছাত্রের সাথে কৃষক, শ্রমিক, রিকশাজীবী, পথ শিশুদের সংগ্রামের মাধ্যমে। তাদের অবদানের যথাযথ স্বীকৃতি ও বিপ্লবের হিস্যা দিতে হবে।
সাইয়েদ কুতুব বলেন, খুনি হাসিনা ছাত্রদের হত্যা করে কোটা আন্দোলন বন্ধ করে দিতে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে হলগুলো থেকে ছাত্রদের জোড় করে তাড়িয়ে দেয়। হাসিনা ভেবেছিল এতে করে আন্দোলন বন্ধ হয়ে যাবে। ঠিক তখনই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কৃষক-শ্রমিক ও পথশিশুরা প্রতিরোধ গড়ে তোলে কোটা আন্দোলন কে গণঅভ্যুত্থানে রূপান্তরিত করে।
তিনি বলেন, বিপ্লব সফল হবার পরে বিপ্লবী সরকার গঠন না করে বৈষম্যমূলক সরকার গঠন করে বঞ্চিত করা হয় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদেরকে, মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে, পথশিশু ও কৃষক শ্রমিকদেরকে। আমরা চাই সকলকে নিয়ে বিপ্লবী সরকার গঠন করে বৈষম্য দূর করা হোক।
আবদুল ওয়াহেদ বলেন, এক বছর পর ফিরে এসেছে সেই ঐতিহাসিক ১৮ জুলাই যেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসহ সারা বাংলাদেশের ইউনিভার্সিটিগুলো হাসিনার দালাল ভিসিরা জোর করে বন্ধ করার পর প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ,মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ কৃষক,দিনমজুর ও পথশিশুরা নেমে এসেছিল সারা বাংলাদেশে।
তিনি বলেন, খুবই পরিতাপের বিষয় এই যে,যারা আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে তাদেরকে তাদের ত্যাগের মর্যাদা দেওয়া হয়নি। এতো এতো শহীদ হওয়ার পরেও তাদেরকে রাষ্ট্রক্ষমতার সাথে যুক্ত করা হয়নি। আজকের এ শোভাযাত্রা থেকে সরকারের প্রতি তাদেরকে হিস্যা বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি জানাই।
ফজলুর রহমান বলেন, গত বছর ১৮ জুলাই ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে গণপ্রতিরোধের মূল ঢেউ সারা দেশে আছড়ে পড়েছিল। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, মাদ্রাসা ছাত্র, পথশিশু, রিকশাচালক, দিনমজুর, শ্রমিক—সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষ সেই গণপ্রতিরোধে সাহসিকতার সাথে শামিল হয়েছিল। তাদের ঐক্যবদ্ধ রক্ত, ঘাম ও আত্মত্যাগের মাধ্যমেই ফ্যাসিস্ট হাসিনা রেজিমের পতনের ঘণ্টাধ্বনি বেজে ওঠে।
তিনি বলেন, এই গণপ্রতিরোধে যারা জীবন বাজি রেখে অংশ নিয়েছিল, যারা শহিদ ও আহত হয়েছিল, তাদের সকলকে ‘গণপ্রতিরোধের বীর যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া ইন্টারিম সরকারের একটি নৈতিক ও ঐতিহাসিক দায়িত্ব।
শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব আব্দুস সালাম, সদস্য রাজু আহমেদ সদর, তপু তৌহিদ, আবু সাইদ সুমন, হারুনর রশীদ, সাইদুল ইসলাম ও মিনহাজ খান; বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব মুহিব মুশফিক খান, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, ঢাকা আলিয়া শাখার সদস্য সচিব মো: জিনাত হোসাইন, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব শরিফ খান, সদস্য কাজী নাফিজ প্রমুখ।
