মাগফিরাতের দশ দিন
শুরু হলো মাগফিরাতের দশক
হাফেজ মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভী
প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজান। মাগফিরাতের দশকের প্রথম দিন আজ। রমজানের ৩০ দিনকে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত এই তিন অংশে বিভক্ত করা হয়েছে। রহমতের দশক অর্থাৎ রোজার প্রথম ১০ দিন ইতোমধ্যে পার হয়েছে। আজ থেকে শুরু হয়েছে মাগফিরাতের দশক। মাগফিরাতের দশক ২০ রমজান পর্যন্ত। একুশ রমজান থেকে শুরু হবে নাজাতের দশক। এর মধ্য দিয়ে বিদায়ের দিকে দ্রুত এগোতে থাকবে মুমিনদের সিয়াম সাধনার পবিত্র মাস রমজান। মাগফিরাতের দশককে মুসলমানদের গুনাহ মাফের জন্য নির্ধারণ করেছেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। তাই এ সময় সব রোজাদারকেই নিজেদের গুনাহ মাফে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা জরুরি।
মাগফিরাত শব্দের অর্থ হলো ক্ষমা। আল্লাহতায়ালার একটি নাম হলো ‘আল-গাফুর’। আর ‘গাফুর’ শব্দের বাংলা অর্থ হলো ‘ক্ষমাশীল’। বান্দা যেন সব গুনাহ থেকে মুক্তি পেতে পারে, এজন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রমজান মাসের দ্বিতীয় দশককে মাগফিরাত তথা ক্ষমা লাভের দিন হিসাবে ধার্য করেছেন। মহানবি (সা.) বলেছেন, ‘সকল মানুষ ভুলকারী। আর ভুলকারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো যারা তওবাকারী।’ (বায়হাকি)। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার কাছে আসো এবং আমার সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক না করে থাকো, তাহলে আমিও সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে আসব।’ (সুনানে তিরমিজি)। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এ মাসে চারটি কাজ অবশ্য করণীয়। প্রথমটি হলো কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করা, দ্বিতীয়টি হলো অধিক পরিমাণে ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করা, তৃতীয় ও চতুর্থ হলো জান্নাত লাভের আশা করা ও জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণের প্রার্থনা করা। যে ব্যক্তি রমজান মাস এবং মাগফিরাতের ১০ দিন পেয়েও আল্লাহর কাছ থেকে নিজের গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য তওবা এবং ইস্তেগফার করেনি, তাদের মতো অভাগা আর কেউ নেই। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, রমজানের প্রতি রাতে একজন ফেরেশতা ঘোষণা করতে থাকেন, হে পুণ্যের অন্বেষণকারী অগ্রসর হও! হে পাপাচারী! থাম, চোখ খোল! ফেরেশতা আবার বলেন, ক্ষমাপ্রার্থীকেই ক্ষমা করা হবে। অনুতাপকারীর অনুতাপ গ্রহণ করা হবে। প্রার্থনাকারীদের দোয়া কবুল করা হবে। (আহমদ)। প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক হলো, আল্লাহর রাসুলের এ সুসংবাদ গ্রহণ করা। আজই একনিষ্ঠভাবে সিয়াম সাধনায় নিমগ্ন হওয়া। প্রথম দশকের কুড়ানো রহমতের সঙ্গে করুণা ও ক্ষমার উপকরণ মিশিয়ে নির্মাণ করুন ইমান সৌধের ভিত্তি। শেষ দশকের নাজাত দিয়ে সেই সৌধের দেহ ও আত্মা নির্মাণের এখনই নিন প্রস্তুতি। মাগফিরাতের এই দশকে আল্লহতায়ালা আমাদের ক্ষমা করে দিন। আমিন!!!
লেখক : সিনিয়র ইমাম, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম
