Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

নাজাতের দশ দিন

রমজানের শিক্ষায় বদলে যাক জীবন

Icon

মাওলানা আবদুল কাইয়ুম সোবহানী

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রমজানের শিক্ষায় বদলে যাক জীবন

সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য। যিনি বিশ্ব জাহানের মলিক। আমাদের জীবনের একমাত্র সম্বল আল্লাহর দয়া-মায়া তথা রহমত। তিনি ক্ষমা না করলে আমাদের তো আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। জাহান্নামের ভয়াবহ আগুন থেকে আল্লাহই একমাত্র মুক্তিদাতা। আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা, করুণা আর মুক্তির বার্তা নিয়ে আমাদের মধ্যে এসেছিল পবিত্র রমজানুল মুবারক। আজ ২৪ রমজান। হে সিয়ামের সাধক! নিজেকে জিজ্ঞেস করুন-রমজানের এ সুবর্ণ সময়ে রহমত, মাগফিরাত আর নাজাত অর্জন করতে পেরেছেন কি? না পারলে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে যান। মূলত রমজানের শিক্ষা ও তাৎপর্য ধারণ করে যারা নিজেকে সাজাতে পারে-সিয়ামের এ কর্মশালায় তারাই সফল হয়। রোজার প্রধান শিক্ষাই হলো তাকওয়া অবলম্বন করা। তাকওয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ বিরত থাকা ও ভয় করা। পরিভাষায় মহান আল্লাহর ভয়ে সব ধরনের অন্যায়-অনাচার ও পাপাচার থেকে বিরত থাকাকে তাকওয়া বলে। আর দীর্ঘ এক মাস প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বান্দাকে তাকওয়া অবলম্বন করার যোগ্যতা তৈরি করেন মহান আল্লাহ। সিয়াম ফরজ করার উদ্দেশ্যও তাই। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে ইমানদাররা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর; যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।’ (সূরা বাকারা: ১৮৩)

বিশুদ্ধভাবে কুরআন শিক্ষা ও কুরআনের সমাজ গড়া রমজানের অন্যতম শিক্ষা। মুসলমানরা সবচেয়ে বেশি কুরআন চর্চা করেন পবিত্র রমজানে। রমজান ও কুরআনের উদ্দেশ্যও এক। তা হলো তাকওয়া অর্জন। ‘তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হলো, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার’ (সূরা বাকারা: ১৮৩)। হাশরের ময়দানে বান্দার মুক্তির জন্য রোজা ও কুরআনের ভূমিকা থাকবে বেশি। নবিজি (সা.) বলেন, ‘কুরআন ও রোজা আল্লাহতায়ালার কাছে সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, ‘আমি তাকে দিনের বেলায় পানাহার ও মনের খায়েশাত মেটানো থেকে বিরত রেখেছিলাম। কুরআন বলবে, আমি তাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত রেখেছিলাম। অতএব আমাদের সুপারিশ কবুল করুন। তখন আল্লাহতায়ালা সুপারিশ কবুল করে নেবেন।’ (মুসনাদে আহমদ)

মহানবি (সা.) রমজানকে ‘সহমর্মিতার মাস’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। দীর্ঘদিন রোজা রাখার কারণে রোজাদারের মধ্যে দরিদ্র ও অসহায়দের প্রতি সহমর্মিতাবোধ জাগ্রত হয়। সহমর্মিতা জ্ঞাপন করার জন্য মহানবি (সা.) রমজান মাসে বেশি পরিমাণে দান করতেন। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর রাসূল (সা.) ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল। রমজানে তিনি আরও বেশি দানশীল হয়ে ওঠতেন...’ (বুখারি: ৬)

মুসলিম উম্মাহর পূর্বসূরিরা অসহায় ও হতদরিদ্রের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। আমরাও রমজান থেকে শিক্ষা নিয়ে তাদের অনুসৃত পথে চলার চেষ্টা করব। সাহাবায়ে কেরামের পারস্পরিক সহানুভূতি ও সহমর্মিতা সম্পর্কে আল-কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তারা তাদের নিজেদের ওপর অগ্রাধিকার দেয়; নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও। যাদের অন্তর কার্পণ্য থেকে মুক্ত রাখা হয়েছে, তারাই সফলকাম। (সূরা হাশর: ৯) সুতরাং, রমজান থেকে এ শিক্ষা নিয়ে সুখে-দুখে অসহায়, অনাথের প্রতি আমরা যেন সারা বছর সহমর্মিতা প্রদর্শন করি। রমজানের শিক্ষা ও তাৎপর্যের আলোকে সুসজ্জিত হোক আমাদের জীবন। আল্লাহ একমাত্র তাওফিক দাতা।

লেখক : খতিব, মসজিদ ই নূর, সেগুনবাগিচা, ঢাকা

রমজান

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম