Logo
Logo
×

২ যুগে যুগান্তর

২ যুগে যুগান্তর : প্রথম পর্ব

সংস্কৃতিহীন বাংলাদেশের রাজনীতি

Icon

ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন 

প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:০১ পিএম

সংস্কৃতিহীন বাংলাদেশের রাজনীতি

সংস্কৃতি শব্দটির সংজ্ঞা ও সংজ্ঞার্থে বিভিন্নতা আছে। যেমন ফ্রান্সিস ফুকুইয়ামা সংস্কৃতি শব্দটির অর্থ নিয়ে মাথা ঘামাতে গিয়ে বলেছেন, সংস্কৃতির ১০১টি সংজ্ঞা আছে। তিনি যে, সুনির্দিষ্ট সংখ্যার কথা বলেছেন, তা নয়, তিনি বিভিন্নতার অর্থে এমন মন্তব্য করেছেন। সংস্কৃতি নিয়ে ভাবতে গিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতাও অভিন্ন। তবে অত কথায় না গিয়ে বা পণ্ডিতি আলোচনায় না গিয়ে, বরং আমার একান্ত নিজস্ব ধারণার কথা বলি। আমি মনে করি, সংস্কৃতি মানে শীলিত রুচি, যা আন্তঃমানবীয় সম্পর্ককে কাঙ্ক্ষিতভাবে সুদৃঢ় করে। মানবিক জীবনে শীলিত রুচির বহিঃপ্রকাশ হয় আচরণ, বচন, বসন ও বিচরণে। আমরা যখন সমাজে সংস্কৃতিবান/সংস্কৃতিবতী মানুষ চিহ্নিত করি, তখন তাকে এ চারটি মাত্রায় মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। তবে এটা ঠিকই যে, সংস্কৃতি যাপিত জীবনলগ্ন, যা বিবর্তনমূলক।

রাজনৈতিক সংস্কৃতি মূল সংস্কৃতির উপধারা। নিহিতার্থ হলো, মূল সংস্কৃতিতে শীলিত রুচির চর্চা থাকলে, রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে তা সঞ্চালিত বা প্রতিফলিত হবে। আরও একটি সংশ্লিষ্ট অর্থ হলো, মূল সংস্কৃতি রুচিহীন হলে, রাজনৈতিক সংস্কৃতিও রুচিহীন হতে বাধ্য, যা আসলে রাজনৈতিক সংস্কৃতিহীনতার নামান্তর। অবশ্য একই সমান্তরালে বিবেচ্য ব্যক্তিগত শীলিত রুচির প্রসঙ্গটি, যা সমাজ ও রাজনীতিতে কাঙ্ক্ষিত ব্যতিক্রম সৃষ্টি করে। ধরা যাক, একজন বঙ্গবন্ধুর কথা, যার রাজনীতি ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ছিল শীলিত রুচির বুদ্ধিদীপ্ত বহিঃপ্রকাশ; অথচ যা তার সমকালীন রাজনীতিতে খুঁজে পাওয়া দুস্কর ছিল। তার সময়ের রাজনীতিবিদ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর কটাক্ষ আছে। কারাগারের রোজনামচায় তিনি লিখেছেন, ‘গুন্ডার পরে পান্ডা, পান্ডার পরে নেতা, এই তো হলো নেতার ডেফিনেশন।’ (পৃ. ১৩৩)। অবশ্য ব্যতিক্রম ছিল; ব্যতিক্রমীরাই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়েছেন। মোদ্দা কথা, রাজনীতির মানুষ সংস্কৃতিবান/সংস্কৃতিবতী হলে, রাজনৈতিক সংস্কৃতির নির্মাণ হয়; নইলে রাজনীতি হয় সংস্কৃতিহীন-রাজনীতির নামে যা চর্চিত হয়, তা অপসংস্কৃতি; এবং যা বাংলাদেশে বিরাজমান।

মার্কিন অধ্যাপক গ্যাব্রিয়েল অ্যালমন্ড ‘রাজনৈতিক সংস্কৃতি’ ধারণাটির প্রবর্তক। ১৯৫৬- তে তিনি লিখলেন তার প্রবন্ধ ‘কম্প্যারাটিভ পলিটিকাল সিস্টেম্স’, যাতে এই ধারণা প্রবর্তিত হয়েছিল। তাকে অনুসরণ করে অনেক যশস্বী গবেষক ধারণাটিকে আরও বিস্তৃত করেছেন। যেমন লুসিয়েন পাই ১৯৭১-এ সমাজের সঙ্গে অন্বিত করে রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে এভাবে বোঝার চেষ্টা করেছেন, “By definition, political culture dwells on the political realm on the one hand and on the plane of society on the other. It refers to socially shared experiences and values of a community in specific relation to the political system.” মোদ্দা কথাটি হলো, সমাজ ও রাজনীতির মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক স্বীকৃত সত্য; রাজনৈতিক সংস্কৃতির উৎসমূল সামাজিক সংস্কৃতি। সমাজের কাঙ্ক্ষিত সংস্কৃতি কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির পাটাতন নির্মাণ করে। সম্ভবত এ কারণে গ্যাব্রিয়েল অ্যালমন্ড রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে বুঝেছেন, “The particular pattern of orientations toward political actions in which every political system is embedded.” অবশ্য সমাজ-রাজনীতির আন্তঃসম্পর্ক নির্দেশ করেও, রাজনীতিতে ব্যক্তি-নেতার ভূমিকা অনস্বীকার্য। একজন বঙ্গবন্ধুর কথা তো ইতোমধ্যেই বলা হয়েছে।

সংস্কৃতিহীন রাজনীতির মরুভূমিতে তিনি ছিলেন রাজনৈতিক সংস্কৃতির মরূদ্যান, যা আজ অনুকরণীয় ও অসুসরণীয়।

এ মুহূর্তে বাংলাদেশে রাজনীতি নেই; যা আছে তা ক্ষমতানীতি। যারা ক্ষমতায় আছে, তারা ক্ষমতায় থাকা দীর্ঘায়িত করতে চায়; আর যারা ক্ষমতায় নেই, তারা দ্রুত ক্ষমতায় যেতে নানা ফন্দি-ফিকির করে। ফলে যথার্থ রাজনীতি যেন ‘মরুপথে হারালো ধারা।’

রাজনৈতিক সংস্কৃতির যে সংজ্ঞা/সংজ্ঞার্থ নির্দেশিত হয়েছে, তার ভিত্তিতে বাংলাদেশের বিরাজমান রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রশ্নবিদ্ধ। সমাজে মূল্যবোধের অবক্ষয়, সমাজের দুর্র্বৃত্তায়ন-সবকিছু যেন রাজনীতিতে প্রতিফলিত। রাজনীতি যে, দুর্বৃত্তায়িত, তা হরহামেশা শোনা যায়। অথচ রাজনীতিরই ফসল স্বাধীন বাংলাদেশ। ’৭১ পূর্ব সময়ে রাজনীতি ছিল, ছিল সংস্কৃতিও; স্বাধীনতার পর যে ‘তার আর পর নেই।’ বাংলাদেশে এখনকার যে সংস্কৃতিহীন রাজনীতি, তার কিছু সূচক আছে, যা নিয়ে এখন আলোচনা হতে পারে।

বাংলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতার হাতবদল হয়েছে সাংবিধানিক ও অসাংবিধানিকভাবে, যা রাষ্ট্র ও রাজনীতি সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন তৈরি করে। শাসকেরও পালাবদল হয়েছে; কিন্তু যা বদল হয়নি তা শাসকের শ্রেণিচরিত্র। সেই কারণে দিগ্দর্শনগত আপাতঃ ভিন্নতা সত্ত্বেও রাজনৈতিক কৌশলের দিক দিয়ে গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষদল গণতন্ত্র ও মুক্তি যুদ্ধবৈরী শক্তির সঙ্গে আপস করতে পারে, সমান্তরাল অবস্থান গ্রহণ করতে পারে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের চরিত্র দলভিন্নতা সত্ত্বেও অভিন্ন; এবং সেই কারণে শাসকের শ্রেণিচরিত্র রাজনৈতিকভাবে অভিন্ন থেকে গেছে। উপরন্তু অভিন্ন কারণে বাম প্রগতিশীল নেতৃত্বকে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী দল ও মতের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে।

বাংলাদেশের রাজনীতি এখন শুধু পেশাদার রাজনীতিবিদের বিচরণক্ষেত্র নয়। সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে যে, অবসর নেওয়া সামরিক ও বেসামরিক আমলাও রাজনীতির কাতারে শামিল হচ্ছেন। রাজনীতি থেকে যা সুবিধা নেওয়ার, তা তারা নিচ্ছেন। ফলে পেশাদার রাজনীতি এখন বেকায়দায় পড়েছে। অবসরপ্রাপ্তরা এক সময়ে গাছেরটা খেয়েছেন, এখন তলারটাও কুড়াচ্ছেন; এবং তা রাজনৈতিক নেতৃত্বের অবিমৃষ্যকারিতার কারণে।

রাজনীতিতে যথার্থ ভাবাদর্শ/মতাদর্শের অনুপস্থিতি। দলীয় প্রচারণা বা নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে হয়তো আদর্শের কথা থাকে, কিন্তু ক্ষমতাসীন থাকার সময়ে তার প্রতি নিষ্ঠ থাকার দৃষ্টান্ত খুব কমই থাকে; বরং আপস এবং জোড়াতালির দৃষ্টান্ত অনেক আছে।

ধর্ম এখন সমাজ ও রাজনীতির প্রবল শক্তি। কিন্তু ধর্মের ভিত্তিতে কোনো রাজনৈতিক দল হতে পারে না। সুতরাং জামায়াতের দলীয় অস্তিত্ব প্রশ্নাতীত নয়। প্রশ্নাতীত বৈধতার অধিকারী নয় বিএনপি বা জাতীয় পার্টি; কারণ উভয়েরই সৃষ্টি সেনানিবাসে, যা রাজনৈতিক দল গঠনের বৈধ উৎস নয়। সেনানিবাস সৈনিকের আবাস ও কর্মস্থল, রাজনীতি করার যায়গা নয়। সুতরাং বাংলাদেশের রাজনীতি প্রশ্নবিদ্ধ দলের উপস্থিতি/কর্মকাণ্ডে প্রশ্নবিদ্ধ; এবং তাদের পক্ষে কিছু জনসমর্থন সত্ত্বেও।

দলীয় রাজনীতি ব্যক্তি-নেতার প্রাবল্যের অধীন। একই সমান্তরালে উল্লেখ্য ‘কারিশমা’ ও উত্তরাধিকার প্রাপ্ত ‘কারিশমার’ কথা। নেতার ‘কারিশমা’ নেতাকে পোষকের পর্যায়ে নিয়ে যায় এবং দলীয় কর্মীরা হয় পোষ্য। অর্থাৎ এক ধরনের পোষক-পোষ্য (patron-client) আন্তঃসম্পর্কের অচলায়তন তৈরি হয়, যা ভাঙা বেশ দুঃসাধ্য।

এখন ব্যক্তি-নেতা হন মহিরুহ, যার ছায়ায় চারাগাছও জন্মায় না, রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী তৈরি হয় না। উপরন্তু ব্যক্তি-নেতার প্রাবল্যের কারণে দল ও সরকার একাকার হয়, যা অগণতান্ত্রিক। গণতন্ত্রে দল ও সরকার আলাদা থাকে; এ দুটো একাকার হলে দল বা সরকার কোনোটিই ভালো চলে না। আর ব্যক্তি-নেতার প্রাবল্যভিত্তিক দল হলে দলের ভেতর গণতান্ত্রিক রীতিনীতি থাকে অনুপস্থিত। বাংলাদেশে দলের অধিক্য সত্ত্বেও যথার্থ দলের অনুপস্থিতি দৃশ্যমান বাস্তবতা। আর দল যথার্থ না হলে, আর দলের ভেতর গণতন্ত্র না থাকলে (কায়দা-কানুনের গণতন্ত্র নয়), দেশে গণতন্ত্র হবে কী করে?

কালো টাকা, অবৈধ (বা বৈধ) অস্ত্র আর পেশিশক্তির ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক ভূমিকা রাজনীতির অপরাধায়ন/দুর্বৃত্তায়নের পটভূমি বিস্তৃত করছে। তবে দুঃখজনক হলো, ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতাপ্রত্যাশীদের সহযোগী ছাত্র সংগঠনের দুর্বৃত্তায়িত ভূমিকা। এখনকার ছাত্ররাজনীতিতে ছাত্র ও রাজনীতি অনুপস্থিত। বহুদর্শী অধ্যাপক রেহমান সোবহানের উপলব্ধ সত্যটি বেশ সর্মস্পর্শী: “The campuses have become battlefields where armed gunners fight for control of the turf in the best Chicago tradition. . . . These armed students are protected both by the regime and the opposition. Most of these students have little political motivation and functions medieval warlords with loyalties to their paymasters political authority.” (১৯৯৩) এই তো হলো ছাত্ররাজনীতির বিরাজমান দশা যার উজ্জ্বল অতীত আমাদের ভাবায়। কেন এমন হলো? উত্তর অন্বেষায় নিবেদিত হোক আমাদের মনীষা।

ধর্মনিরপেক্ষতাকে অন্যতম রাষ্ট্রীয় মূলনীতি করে স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল। উপরন্তু ১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু নির্দেশ করেছিলেন, বাংলাদেশ কোনো ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র হবে না। অথচ সংবিধানে আছে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। তাহলে তো বাংলাদেশ একটি ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র, যা সরাসরি বঙ্গবন্ধুবিরোধী। উপরন্তু কুরআন-হাদিসে এমন কোনো বিধান নেই। পৃথিবীতে ৫৭টি মুসলিম রাষ্ট্রের মধ্যে ১৬টির সংবিধানে ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম আছে। তার মানে কি অন্যসব রাষ্ট্র অনৈসলামিক? আর রাষ্ট্রের ধর্ম হতে পারে না; ধর্ম ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও আচরণের ব্যাপার। রাষ্ট্রধর্ম ধারণাটি উদ্ভট। রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিকাশের অন্তরায় ধর্মের রাজনীতিকরণ/রাজনীতির ধর্মীয়করণ।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিশ্রুতি একটি বড় উপকরণ। ক্ষমতাসীন সরকার বা বিরোধী দল গণদাবির মুখে প্রতিশ্রুতি দিলে নন্দিত হন। জনগণ হৃষ্টচিত্তে গগনবিদারি উল্লাস ও করতালির আয়োজন করে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি-প্রাপ্তির সমীকরণ প্রায়ই হয় না। প্রয়োজন প্রতিশ্রুতিময় রাজনীতির, যার সন্ধান আজও মেলেনি। সরকারের উন্নয়নগীত সত্ত্বেও বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এখনো কাটছে না। উন্নয়ন মানে সমতাভিত্তিক প্রবৃদ্ধি; প্রবৃদ্ধিকে উন্নয়ন বলে চালানো অনুচিত। কিন্তু বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নজরকাড়া, এবং যার জন্য আমরা গর্বিত ও সরকার অভিনন্দনযোগ্য। আর বৈষম্য জিইয়ে রেখে উন্নয়ন হয় না। প্রবৃদ্ধি আর উন্নয়নের মধ্যে ফারাকটা বুঝতে হবে।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভক্তির উপকরণ আছে। ধরা যাক, আমাদের জাতীয়তাবাদের কথা, যা দুরকমের-বাঙালি ও বাংলাদেশি। আমাদের রাজনীতিতে বিভক্তি আছে স্বাধীনতার ঘোষক নিয়েও। এছাড়া পরিস্থিতি বিশেষেও বিভক্তির উপকরণ তৈরি হচ্ছে। বিভক্তি নিরসনের উপায় আলোচনা ও সমঝোতা, যা যেন সুদূর পরাহত। বিভাজিত রাজনীতিতে রাজনৈতিক সংস্কৃতি যেন সোনার পাথরবাটি।

রাজনীতির ভাষা নিয়েও প্রশ্ন আছে। সরকার ও বিরোধীরা যে ভাষায় একে অপরকে আক্রমণ করে, তা রাজনীতির ভাষা নয়, রাজনৈতিক সংস্কৃতির তো নয়ই। বাক্যবাণ কাম্য, কিন্তু শীলিত রুচির হতে হবে। শীলিত রাজনৈতিক ভাষা ব্যবহার না করা হলে, শীলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে ওঠে না।

আর্জেন্টিনার সাবেক প্রেসিডেন্ট রাউল অ্যালফনসিন একবার মন্তব্য করেছিলেন, “The military provides a sterile guardianship”. ’৭৫ থেকে ’৯০ পর্যন্ত দুই সামরিক শাসনের ফলে বাংলাদেশ এমন বন্ধ্যা অভিভাবকত্বের শিকার হয়েছিল। সামরিক শাসনে রাজনীতিতে কিছু যোগ হয় না; রাজনীতি হয় বিকৃত। কাজেই রাজনৈতিক সংস্কৃতির নিরিখে ’৭৫ থেকে ’৯০ ছিল আমাদের নষ্ট সময়। কিন্তু তারপর থেকে আজ পর্যন্ত democracy হয়নি, হয়েছে demosclerosis। অর্থাৎ আমরা সচল-সজীব ক্রিয়াশীল গণতন্ত্র এখনো পাইনি।

বাংলাদেশর সামগ্রিক রাজনৈতিক চালচিত্র নিয়ে একজন সাংবাদিক ইংরেজি দৈনিকে লিখেছিলেন, তার লেখা থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি, “. . bickering, natural abuse, negative politics, lawlessness, misgovernment, broken promises, state-controlled electronic media, boycotting parliament, frequent hartals, impeding regular production activities in mills and factories, patronizing violence, keeping armed cadre in the student front-wings, putting personal and party interests above the country’s and failing to understand what the people want.” (The Daily Sun, 27 December 1994).

এমন অনুদার ও সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক চালচিত্রের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক সংস্কৃতি যেন কাঁঠালের আমসত্ত্ব।

নেপালের কবি কেদার মান বায়াথিত তার দেশের রাজনীতি নিয়ে ইংরেজিতে একটি কবিতা লিখেছিলেন, যার শিরোনাম ছিল Political Proximity; Locusts or Bees। কবিতাটিতে তিনি রাজনীতির দুটো ধরন নির্দেশ করেছেন –পঙ্গপালের আর মৌমাছির। পঙ্গপাল বিনষ্টির দ্যোতক; অন্যদিকে মৌমাছি সৃষ্টির। কাজেই তিনি দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন-

In the above context

whose politics can be compared

to the politics in your country?

The one followed by locust’s

or the other belonging to the bees?

পঙ্গপালের রাজনীতির এ দেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতির নির্মাণ তো তাহলে প্রশ্নসাপেক্ষ।

লেখক : চেয়ার প্রফেসর-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চেয়ার

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)

যুগান্তর

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম