|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আমাদের উৎসব, জন্মদিন, আনন্দ কিংবা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ বেলুন। বেলুন ছাড়া যেন এখন কোনো সাজসজ্জা পরিপূর্ণ মনে হয় না। কিন্তু এ রঙিন বস্তুটির ইতিহাস বেশ পুরোনো এবং চমকপ্রদ। সেইসঙ্গে বেলুনের ধারণাও অনেক পুরোনো। প্রাচীনকালে মানুষ পশুর মূত্রথলি, অন্ত্র বা শুকনো চামড়া ফোলানো অবস্থায় খেলনা বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহার করত। তবে সেগুলো আধুনিক বেলুনের মতো রঙিন বা হালকা ছিল না।
আধুনিক বেলুনের আবিষ্কার ঘটে ১৮ শতকে। ১৮২৪ সালে লন্ডনের বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে প্রথমবারের মতো রাবার বেলুন তৈরি করেন। তিনি পরীক্ষার জন্য হাইড্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করেছিলেন। ফ্যারাডে বেলুন বানাতেন পাতলা রাবারের টুকরো কেটে, সেগুলো একসঙ্গে জোড়া দিয়ে এবং তাতে গ্যাস ভরে। তার উদ্দেশ্য ছিল গ্যাসের বৈশিষ্ট্য নিয়ে গবেষণা করা, বিনোদনের জন্য নয়।
১৮২৫ সালে ব্রিটিশ উদ্যোক্তা থমাস হ্যানকক প্রথমবার বাণিজ্যিকভাবে রাবারের বেলুন তৈরি ও বিক্রি শুরু করেন। এরপর ধীরে ধীরে বেলুন জনপ্রিয় হয়ে ওঠে শিশুদের খেলনা ও সাজসজ্জার উপকরণ হিসাবে। ১৯ শতকের শেষের দিকে বেলুন শুধু বিনোদনের জন্য নয়, বৈজ্ঞানিক গবেষণায়ও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ, বায়ুর চাপ ও তাপমাত্রা মাপার কাজে বেলুন ব্যবহার করা শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে এসব বেলুন থেকেই ওয়েদার বেলুন বা আবহাওয়া বেলুন তৈরি হয়, যা আজও ব্যবহৃত হয়।
এখনকার সময়ে বেলুন তৈরি হয় ল্যাটেক্স, মাইলার বা নাইলন দিয়ে। এতে সাধারণত হিলিয়াম গ্যাস ভরা হয়, যা আগুন ধরায় না এবং নিরাপদ। নানা রং, আকৃতি ও ডিজাইনের বেলুন এখন উৎসব ও আনন্দের প্রতীক হয়ে উঠেছে। পরিশেষে বলা যায়, বেলুনের ইতিহাস শুধু খেলনার নয়, এটি মানুষের কৌতূহল, বিজ্ঞান ও আনন্দের মিশ্র এক গল্প। আজকের যে কোনো উৎসব, অনুষ্ঠানে বেলুন অনিবার্য এক আনন্দে পরিণত হয়েছে।
