|
ফলো করুন |
|
|---|---|
তেলাপোকা আর পিঁপড়া খুব ভালো বন্ধু। বেশ কিছুদিন হলো তাদের মধ্যে এই বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। অনেকদিন ধরে রোজই তাদের দেখা হয় খেলার মাঠে। তারা নিয়মিত একই মাঠে খেলা করে। দুজনই খুব ভালো খেলা করে। মূলত এজন্যই তাদের বন্ধুত্বটা আরও গভীর হয়েছে। একদিন বিকালে পিঁপড়া খেলার মাঠে এসে দেখল মাঠের এক কোনো মুখে হাত দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে তেলাপোকা বসে আছে। কাছে গিয়ে পিঁপড়া জিজ্ঞেস করল কী হয়েছে তোমার? তেলাপোকা বলল আমার মনটা ভালো নেই বন্ধু। বাবা আজ খুব রাগ করেছেন। বলেছেন, সারা দিন তুমি কেন খেলা কর? এখন থেকে খেলা বন্ধ। আরও বলেছেন মন দিয়ে পড়ালেখা করবে এবং পড়ার ফাঁকে ফাঁকে আমার কাজে সাহায্য করবে। তাই কাল থেকে আর খেলতে আসা হবে না বন্ধু। এজন্যই আমার মনটা খুব খারাপ। এরপর তেলাপোকা হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে বলল জানো বন্ধু, ছোটবেলাটাই খুব ভালো ছিল। তখন বাবা মা কত আদর করত। কত রকম খাবার এনে আমাকে আদর করে খাওয়াত। আমি দুষ্টুমি করলেও তারা কখনো একটুও রাগ করত না। পড়তেও বলত না। অথচ এখন শুধু কথায় কথায় রাগ করে। তাই আমি আর বড় হতে চাই না বন্ধু। আমি আবার ছোট হতে চাই।
পিঁপড়া বলল, বয়স তো বেঁধে রাখা যায় না তাই এখন আর ছোটবেলার মতো চললে হবে না। এখন আমাদের সবকিছুই করতে হবে। সবকিছু ঠিকমতো না করলে গুণিজন হওয়া যায় না। আমাদের গুণিজন হতেই হবে বন্ধু। তোমার বাবা ঠিকই বলেছেন। সারা দিন খেলাধুলা করলে হবে না। আমাকে দেখ আমি রোজ বিকালে অল্প সময় খেলা করে সারা দিন পড়ালেখা ও বাবা-মা’র কাজে সাহায্য করি। পড়ালেখা ছাড়া বড় হওয়া যায় না বন্ধু। চলো আমি তোমার সঙ্গে তোমাদের বাড়িতে গিয়ে তোমার বাবা-মা’র সঙ্গে কথা বলব।
কথামতো পিঁপড়া তেলাপোকার বাবা-মা’র কাছে গিয়ে বলল আঙ্কেল-আন্টি আজ থেকে ও মন দিয়ে পড়ালেখা করবে এবং আপনাদের কাজেও সাহায্য করবে। আমাকে ও কথা দিয়েছে, ও আর সারা দিন খেলাধুলা করবে না। শুধু ওকে প্রতিদিন বিকালে কিছুটা খেলার সময় দিয়েন। আপনারা তো আমার চেয়ে ভালো করেই জানেন শরীর ও মন সুস্থ রাখতে খেলাধুলা করা দরকার। এটুকু ছোট্ট পিঁপড়া ছানার কথা শুনে তেলাপোকার বাবা-মা মুগ্ধ হয়ে বললেন, তুমি তো অনেক বুদ্ধিমান খোকা। এমন লক্ষ্মী ছেলে সব ঘরে ঘরে হোক। সমাজে সব সময় বুদ্ধিমানেরই জয় হয়। তুমি অনেক অনেক অনেক বুদ্ধিমান। তোমার কথায় আমরা রাজি। আজ থেকে তাই হবে বাবা। এ কথা শুনে ওরা দুই বন্ধু হেসে হেসে বলল বাবা-মা’র তুলনা হয় না।
