আমিনুল ইসলাম। সংগৃহীত ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনের আগের দিন বিসিবি ভবনের দোতলা থেকে যখন নিচে নামলেন সভাপতি প্রার্থী আমিনুল ইসলাম তখন উপস্থিত সংবাদকর্মীদের মধ্যে দেখা গেল তৎপরতা। অনেকেই ধারণা করেননি যে, সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচন ইস্যুতে নীরব থাকা বর্তমান সভাপতি নির্বাচনের আগের দিন হঠাৎ মুখ খুলবেন।
নির্বাচন নিয়ে এত ঝড়ঝাপ্টা তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। সেই তিনিই কাল জানালেন, নির্বাচনি ইস্যু নয়, এটি আসলে বিদায়ি বোর্ডের শেষ দিনের আনুষ্ঠানিক মুখোমুখি হওয়া। আমিনুল বলেন, ‘আমাদের এ কমিটির মেয়াদের শেষ দিন আজ (রোববার)। এজন্যই আপনাদের মুখোমুখি হয়েছি।’ তার সঙ্গে ছিলেন বিসিবির আরেক পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে চার মাসের সংক্ষিপ্ত সময়ের সাফল্য তুলে ধরলেন সাবেক এই অধিনায়ক। প্রায় চার মাস আগে হঠাৎ করেই বোর্ড সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন আমিনুল। তিনি বলেন, ‘এই স্বল্পসময়েই বোর্ড কিছু দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে পেরেছে।’
তবে সবচেয়ে আলোচিত ও বিতর্কিত হয়ে উঠেছে নির্বাচন প্রক্রিয়া, যার কেন্দ্রে এখন তিনিই। গত কিছুদিনে নির্বাচন ঘিরে নানা বিতর্ক, সরকারি হস্তক্ষেপ, প্রার্থিতা প্রত্যাহার, আগাম ভোট সম্পন্ন হওয়ার অভিযোগ মিলিয়ে এই নির্বাচন এখন অনেকের চোখে শুধু আনুষ্ঠানিকতা।
নির্বাচন আদর্শ হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে আমিনুল বলেন, ‘আদর্শ ভোট হচ্ছে কি না, এটা নির্বাচন কমিশন বলতে পারবে। ভোটে তো আপস অ্যান্ড ডাউন থাকবেই। এটা আমার জন্য প্রথম। ভাবছি, এটাই হয়তো স্বাভাবিক।’
তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও শিখছি প্রত্যেকটা দিন। আমি একটা জিনিস শিখেছি যে, প্রত্যেকটা ঘণ্টা বদলে যায়। মানে এক ঘণ্টা পরপর সবকিছু বদলে যায়। এখনো তো ভোটের প্রায় ২০ ঘণ্টা বাকি। দেখি কী হয়।’
বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, নির্বাচনে ক্রীড়া উপদেষ্টার কোনো ভূমিকা রাখার সুযোগ নেই। এরপরও আমিনুলকে সভাপতি করতে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে।
এ নিয়ে আমিনুল বলেন, ‘আমার ঠিক মনে নেই, কবে বলেছি যে ক্রীড়া উপদেষ্টা আমাকে অনুরোধ করেছেন। তিনি আমাকে সব সময় সহযোগিতা করেছেন। আমি তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তিনি একজন মন্ত্রী পদমর্যাদার মানুষ, বিদ্রোহী দল বা যারা বয়কট করেছে, রাত-বিরাত তিনি বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছেন, চেষ্টা করেছেন একটা সুষ্ঠু নির্বাচন ও ভালো বোর্ড গঠনের জন্য। আমার কাছে ইনফ্লুয়েন্স কিছুই মনে হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচন পৃথিবীর সেরা ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচন। এমনও দেখা গেছে, যেদিন বাংলাদেশ দুটি ম্যাচ জিতেছে। কিন্তু প্রধান নিউজ হয়েছে নির্বাচন ঘিরে।’
নিজের ফের নির্বাচন করার যুক্তি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আমিনুল বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য আমি থাকতে চাই। আমাকে যারা ভোট দিচ্ছেন বা দেবেন না, আপনারা যদি মনে করেন আমি উপযুক্ত নই তাহলে আমি যে কোনো সময় চলে যেতে আগ্রহী।’
তিনি বলেন, ‘যে এখানে আসছে না বা বয়কট করছে, এটা সম্পূর্ণ তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি সংবিধান ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকতে চাচ্ছি। এর বাইরে কোনো মন্তব্য করব না।’
এ নির্বাচনে আমিনুলের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তামিম ইকবাল, যিনি নির্ধারিত দিনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। একই দিনে আরও ১৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র তুলে নিলেও পরে সরে দাঁড়িয়েছেন ২০ জনের বেশি। নির্বাচন ঘিরে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতার আমেজ তাই থাকছে না।
