এনওসি না পেয়ে স্বপ্ন ভাঙছে বাংলাদেশি আয়রনম্যানের
আমরা মেধাবীদের মূল্যায়ন করি না- এ কথাটি প্রায়ই বিভিন্ন মাধ্যমে শুনি। আবার এটাও শুনি, যারা উপরে উঠে তাদের আমরা টেনে ধরতে চাই, সত্যি কি তাই?
গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশের একমাত্র আয়রনম্যান আরাফাতের একটা স্ট্যাটাস পড়ে তাই মনে হচ্ছে। ভাবছি আমরা কেমন জাতি? এ কেমন বাংলাদেশ?
২৬ আগস্ট থেকে ৭ অক্টোবর ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স ও জার্মানিতে আয়রনম্যান বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ হতে যাচ্ছে। এ প্রতিযোগিতায় একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন মোহাম্মদ সামছুজ্জামান আরাফাত। কিন্তু নিজ কর্মস্থল বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এনওসি (অনাপত্তিপত্র) না পাওয়ায় যেতে পারছেন না তিনি।
যদিও ২ আগস্ট যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে সরকারি আদেশ জারি করেন।
সরকারি চিঠির মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণরসহ সবাইকে জানোনো হয়; কিন্তু বাংলাদেশের আমলাতন্ত্রের জটিলতার কথা তো সবারই জানা। সরকারি নির্দেশনা জারির পরেও তাকে এনওসি দিচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক।
গতকাল রাতে আরাফাত ফেসবুকে লিখেছেন-
"আয়রনম্যান বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ ও আয়রনম্যান ৭০.৩ বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে ডিরেক্ট কোয়ালিফাই করেও অংশগ্রহণ করার জন্য অফিস থেকে এনওসি হলো না।
অনেক মানুষ চেষ্টা করেছেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সরকারি আদেশও জারি করেছিল। জানি না কেন অনুমতি হলো না। নিজের মধ্যে এত বড় অসহায় এবং হতাশবোধ এর আগে কখনো আসেনি।
ছোট একজন মানুষ আমি, অফিসের ডেস্কের বাহিরে কোনো স্বপ্ন দেখা উচিত না। সরাসরি নির্দেশনা পেয়েছি চাকরি করে স্পোর্টস করা যাবে না। কোনো আন্তর্জাতিক স্পোর্টসে যাওয়া যাবে না। অফিস এবং স্পোর্টস একসাথে চলবে না!
অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি ২টি বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে কোয়ালিফাই করে।
কতগুলো স্বপ্ন! মাত্রতো শুরু হয়েছিল যাত্রাটা। এই অল্প সময়ে থমকে যাবে!!
বাংলাদেশ ক্ষমা করো! আমি পারলাম না!"
তাকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়- চাকরি বা খেলাধুলা যে কোনো একটা বেছে নিতে হবে। অথচ দুনিয়ার যে কোনো প্রতিষ্ঠান তার সেইসব কর্মীদের আলাদা করে মূল্যায়ন করে, যারা শিক্ষা, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, সংস্কৃতি বা অন্য যে কোনোভাবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।
বিশ্বের বুকে যারা বাংলাদেশের পতাকা উঁচু করতে চায় তাদের আমরা টেনে ধরি কেন? এ ধরনের তরুণদের রাষ্ট্র পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া উচিত।
আফসোস! যে সময় দেশ তরুণদের মাদকাসক্তি নিয়ে ভাবছে, ঠিক সে সময়, এক তরুণ, উদ্যোমী, পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশের পতাকা উড়ানো আরাফাতকে টেনেহিঁচড়ে তার স্বপ্ন ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আয়রনম্যান হওয়াটা খুব সহজ নয়। আয়রনম্যান হতে হলে একজন মানুষকে ১৭ ঘণ্টার মধ্যে প্রথমে ৩.৮ কিমি সাঁতার, তারপর ১৮০ কিমি সাইক্লিং এবং শেষে ৪২.২ কিমি দৌড় শেষ করতে হয়।
তার এই আয়রনম্যান হওয়ার প্রতিবন্ধকতা শুরু হয় আরও আগে থেকেই। ৩০ জুলাইয়ের আরেকটি স্ট্যাটাস থেকে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়। ওই স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছিলেন- "গত বছর ২০২২ আয়রনম্যান বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে সাইক্লিং পার্ট শেষের দিকে ১৭০ কিলোমিটারের মাথায় ভয়াবহ সাইকেল দুর্ঘটনায় পড়েছিলাম। সাইকেল এবং আমি মারাত্মকভাবে আহত হই! কোনোরকম উঠে সাইকেল পার্টটা শেষ করে ডাক্তারের কাছে যাব যাব- এই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে দৌড়াতে বের হয়ে গিয়েছিলাম আরও ৪২.২ কিমি!
শরীর থেকে অনেক রক্ত ঝরছিল। একবারো ওই রক্ত নিয়ে চিন্তা আসেনি মাথায়। শুধু একটা কথাই মাথায় ছিল, আমাদের পতাকা আয়রনম্যান বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবার। ফিনিশার তালিকায় যেন বাদ পড়ে না যায়! হয়তো ডাক্তার দেখানোর অনেক সময় পাব, কিন্তু টাইম ওভার হয়ে গেলে আমাদের পতাকাটা ফিনিশিং লাইনে উড়ানোর আর সময় পাব না।
হাল ছেড়ে দেওয়াতে আমি বিশ্বসী না। হাল ছেড়ে দেই নাই কখনই; কিন্তু আমার চেষ্টার সবটুকু দিয়েও আমি পারিনি। আমি ২টি বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণের অনুমতি পেলাম না। আমার জানা নেই, কেন আমি অনুমতি পাইনি। বরং অংশগ্রহণ না করে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশনা পেয়েছি। আমার খুব কষ্ট হয়, এত কষ্ট করে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে কোয়ালিফাই করেও দেশের পতাকাটা উড়বে না!
হতাশা আমাকে কখনো আক্রমণ করেনি। সবসময় কোন না কোনো উপায় হয়েছে। কথায় আছে ইচ্ছা থাকলে উপায় হয় কিন্তু আমার ইচ্ছার সর্বোচ্চ পরীক্ষা কী হতে পারে আমার জানা নেই। আমার নিজের হাতে আর কোনো উপায় নেই। এত হতাশ আমি কখনো হইনি। আমার বিশ্বাস হয় না, আমি এবারের ২০২৩ বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করতে পারব না!
হে আল্লাহ আমার এতদিনের কষ্ট এভাবে ধ্বংস হতে দিবেন না। যে কোনো মাধ্যমে একটা সহযোগিতা পাঠান! বাংলাদেশের পতাকাটা যেন ২টি বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ থেকে না নেমে যায়!"
স্ট্যাটাসের কমেন্টসে অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেছেন, লজ্জিত হয়েছেন, দেশের জন্য আফসোস করেছেন কেউ কেউ, তবে তাদের মধ্যেও একজন লিখেছেন- "দুঃখজনক, আশাহত হবেন না, কোনো না কোনো পথ বের হবেই।"
এনওসি না পেয়ে স্বপ্ন ভাঙছে বাংলাদেশি আয়রনম্যানের
স্পোর্টস ডেস্ক
০৮ আগস্ট ২০২৩, ২১:৩৯:৫১ | অনলাইন সংস্করণ
আমরা মেধাবীদের মূল্যায়ন করি না- এ কথাটি প্রায়ই বিভিন্ন মাধ্যমে শুনি। আবার এটাও শুনি, যারা উপরে উঠে তাদের আমরা টেনে ধরতে চাই, সত্যি কি তাই?
গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশের একমাত্র আয়রনম্যান আরাফাতের একটা স্ট্যাটাস পড়ে তাই মনে হচ্ছে। ভাবছি আমরা কেমন জাতি? এ কেমন বাংলাদেশ?
২৬ আগস্ট থেকে ৭ অক্টোবর ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স ও জার্মানিতে আয়রনম্যান বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ হতে যাচ্ছে। এ প্রতিযোগিতায় একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন মোহাম্মদ সামছুজ্জামান আরাফাত। কিন্তু নিজ কর্মস্থল বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এনওসি (অনাপত্তিপত্র) না পাওয়ায় যেতে পারছেন না তিনি।
যদিও ২ আগস্ট যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে সরকারি আদেশ জারি করেন।
সরকারি চিঠির মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণরসহ সবাইকে জানোনো হয়; কিন্তু বাংলাদেশের আমলাতন্ত্রের জটিলতার কথা তো সবারই জানা। সরকারি নির্দেশনা জারির পরেও তাকে এনওসি দিচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক।
গতকাল রাতে আরাফাত ফেসবুকে লিখেছেন-
"আয়রনম্যান বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ ও আয়রনম্যান ৭০.৩ বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে ডিরেক্ট কোয়ালিফাই করেও অংশগ্রহণ করার জন্য অফিস থেকে এনওসি হলো না।
অনেক মানুষ চেষ্টা করেছেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সরকারি আদেশও জারি করেছিল। জানি না কেন অনুমতি হলো না। নিজের মধ্যে এত বড় অসহায় এবং হতাশবোধ এর আগে কখনো আসেনি।
ছোট একজন মানুষ আমি, অফিসের ডেস্কের বাহিরে কোনো স্বপ্ন দেখা উচিত না। সরাসরি নির্দেশনা পেয়েছি চাকরি করে স্পোর্টস করা যাবে না। কোনো আন্তর্জাতিক স্পোর্টসে যাওয়া যাবে না। অফিস এবং স্পোর্টস একসাথে চলবে না!
অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি ২টি বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে কোয়ালিফাই করে।
কতগুলো স্বপ্ন! মাত্রতো শুরু হয়েছিল যাত্রাটা।এই অল্প সময়ে থমকে যাবে!!
বাংলাদেশ ক্ষমা করো! আমি পারলাম না!"
তাকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়- চাকরি বা খেলাধুলা যে কোনো একটা বেছে নিতে হবে। অথচ দুনিয়ার যে কোনো প্রতিষ্ঠান তার সেইসব কর্মীদের আলাদা করে মূল্যায়ন করে, যারা শিক্ষা, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, সংস্কৃতি বা অন্য যে কোনোভাবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।
বিশ্বের বুকে যারা বাংলাদেশের পতাকা উঁচু করতে চায় তাদের আমরা টেনে ধরি কেন? এ ধরনের তরুণদের রাষ্ট্র পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া উচিত।
আফসোস! যে সময় দেশ তরুণদের মাদকাসক্তি নিয়ে ভাবছে, ঠিক সে সময়, এক তরুণ, উদ্যোমী, পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশের পতাকা উড়ানো আরাফাতকে টেনেহিঁচড়ে তার স্বপ্ন ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আয়রনম্যান হওয়াটা খুব সহজ নয়। আয়রনম্যান হতে হলে একজন মানুষকে ১৭ ঘণ্টার মধ্যে প্রথমে ৩.৮ কিমি সাঁতার, তারপর ১৮০ কিমি সাইক্লিং এবং শেষে ৪২.২ কিমি দৌড় শেষ করতে হয়।
তার এই আয়রনম্যান হওয়ার প্রতিবন্ধকতা শুরু হয় আরও আগে থেকেই। ৩০ জুলাইয়ের আরেকটি স্ট্যাটাস থেকে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়। ওই স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছিলেন- "গত বছর ২০২২ আয়রনম্যান বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে সাইক্লিং পার্ট শেষের দিকে ১৭০ কিলোমিটারের মাথায় ভয়াবহ সাইকেল দুর্ঘটনায় পড়েছিলাম। সাইকেল এবং আমি মারাত্মকভাবে আহত হই! কোনোরকম উঠে সাইকেল পার্টটা শেষ করে ডাক্তারের কাছে যাব যাব- এই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে দৌড়াতে বের হয়ে গিয়েছিলাম আরও ৪২.২ কিমি!
শরীর থেকে অনেক রক্ত ঝরছিল। একবারো ওই রক্ত নিয়ে চিন্তা আসেনি মাথায়। শুধু একটা কথাই মাথায় ছিল, আমাদের পতাকা আয়রনম্যান বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবার। ফিনিশার তালিকায় যেন বাদ পড়ে না যায়! হয়তো ডাক্তার দেখানোর অনেক সময় পাব, কিন্তু টাইম ওভার হয়ে গেলে আমাদের পতাকাটা ফিনিশিং লাইনে উড়ানোর আর সময় পাব না।
হাল ছেড়ে দেওয়াতে আমি বিশ্বসী না। হাল ছেড়ে দেই নাই কখনই; কিন্তু আমার চেষ্টার সবটুকু দিয়েও আমি পারিনি। আমি ২টি বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণের অনুমতি পেলাম না। আমার জানা নেই, কেন আমি অনুমতি পাইনি। বরং অংশগ্রহণ না করে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশনা পেয়েছি। আমার খুব কষ্ট হয়, এত কষ্ট করে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে কোয়ালিফাই করেও দেশের পতাকাটা উড়বে না!
হতাশা আমাকে কখনো আক্রমণ করেনি। সবসময় কোন না কোনো উপায় হয়েছে। কথায় আছে ইচ্ছা থাকলে উপায় হয় কিন্তু আমার ইচ্ছার সর্বোচ্চ পরীক্ষা কী হতে পারে আমার জানা নেই। আমার নিজের হাতে আর কোনো উপায় নেই। এত হতাশ আমি কখনো হইনি। আমার বিশ্বাস হয় না, আমি এবারের ২০২৩ বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করতে পারব না!
হে আল্লাহ আমার এতদিনের কষ্ট এভাবে ধ্বংস হতে দিবেন না। যে কোনো মাধ্যমে একটা সহযোগিতা পাঠান! বাংলাদেশের পতাকাটা যেন ২টি বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ থেকে না নেমে যায়!"
স্ট্যাটাসের কমেন্টসে অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেছেন, লজ্জিত হয়েছেন, দেশের জন্য আফসোস করেছেন কেউ কেউ, তবে তাদের মধ্যেও একজন লিখেছেন- "দুঃখজনক, আশাহত হবেন না, কোনো না কোনো পথ বের হবেই।"
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023