Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

বরিশালই চ্যাম্পিয়ন চিটাগংয়ের স্বপ্নভঙ্গ

Icon

জ্যোতির্ময় মন্ডল

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বরিশালই চ্যাম্পিয়ন চিটাগংয়ের স্বপ্নভঙ্গ

শেষ ওভারে জয়ের জন্য ফরচুন বরিশালের প্রয়োজন ছিল আট রান। শেষ রোমাঞ্চের অপেক্ষা, অনেকটা সময় নিয়ে চিটাগং কিংসের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন বল তুলে দেন হুসাইন তালাতের হাতে। প্রথম বলেই ছক্কা মেরে চিটাগংকে হতাশায় ডুবিয়ে ভরা গ্যালারিতে লাল ঢেউ তোলেন রিশাদ হোসেন। পরের বলে এক রান। তৃতীয় বল ডট হওয়ার পর ওয়াইডে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে তামিম ইকবালের বরিশাল। বাঁধভাঙা উল্লাসে স্রোতের মতো মাঠে ঢুকে পড়েন বরিশালের খেলোয়াড়রা। শুক্রবার রাতে মিরপুরে বিপিএলের একাদশ আসরের ফাইনালে রেকর্ড ১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে তিন বল হাতে রেখে তিন উইকেটের জয়ে চিটাগং কিংসের স্বপ্ন ভেঙে শিরোপা নিজেদের কাছেই রাখল বরিশাল। ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পর তৃতীয় দল হিসাবে টানা দ্বিতীয়বার বিপিএলের শিরোপা ঘরে তুলল বরিশাল। ম্যাচ শেষে স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট নিভিয়ে শুরু হয় লেজার শো। চ্যাম্পিয়ন হলে এবার ট্রফি নিয়ে লঞ্চে বরিশালে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন তামিম। ফাইনালে ঝড়ো ফিফটিতে নিজের চাওয়া নিজেই পূরণ করলেন বরিশাল অধিনায়ক। চ্যাম্পিয়নরা পেল আড়াই কোটি টাকা। রানার্সআপ চিটাগংয়ের প্রাপ্তি দেড় কোটি টাকা।

পারিশ্রমিক নিয়ে বিড়ম্বনা, স্পট-ফিক্সিংয়ের অভিযোগসহ সব বিতর্ক পেছনে ফেলে জমজমাট এক ফাইনাল দিয়ে পর্দা নামল বিপিএলের এবারের আসরের। টানা দ্বিতীয় শিরোপা জিততে হলে বরিশালকে গড়তে হতো সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। সঙ্গে উপচে পড়া গ্যালারির দর্শকদের প্রত্যাশার চাপ। সব বাধা সামলে উদ্বোধনী জুটিতে তামিম ও তাওহিদ নান্দনিক ব্যাটিংয়ের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন। হাফ সেঞ্চুরি করে আউট হওয়া তামিমের (২৯ বলে ৫৪) ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর কাইল মায়ার্স (৪৬) আরও এগিয়ে দেন দলকে। তবুও নাটকীয় কিছুর আভাস দেখা যাচ্ছিল। শেষের দিকে দ্রুত উইকেট পড়তে থাকলেও চিটাগংয়ের বাজে ফিল্ডিংয়ে হতাশায় পুড়তে হয়নি বরিশালকে। সঙ্গে রিশাদের দারুণ ফিনিশিং শেষ হাসি ফোটায় বরিশালের মুখে। ছয় বলে দুই ছক্কায় রিশাদ করেন ১৮ রান। ৩৪ রানে শরীফুল ইসলামের চার উইকেট বৃথা গেল।

এর আগে পারভেজ হোসেন ও খাজা নাফির উদ্বোধনী জুটিতে ১২১ রান স্কোর বোর্ডে জমা করেও ২০০ স্পর্শ করতে পারেনি চিটাগং কিংস। সাত উইকেট হাতে রেখেও ১৯৪ রানে ইনিংসের ইতি টানে মোহাম্মদ মিঠুনের দল। ওপেনার পারভেজ হোসেনের ক্যারি থ্রু দ্য ইনিংস এবং তার উদ্বোধনী জুটি ডান-হাতি পাকিস্তানি ব্যাটার খাজা মুহাম্মদ নাফির দুরন্ত ব্যাটিংয়ে চিটাগংয়ের ২০০ পার করার ইঙ্গিত ছিল। কিন্তু শেষ অবধি তা হয়নি। এ দুজনের পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংসই চিটাগংয়ের মোট সংগ্রহের ভিত্তি। ১২.৪ ওভারে নাফির প্রথম প্রস্থান ঘটে ৪৪ বলে ৬৬ রানের পুঁজি নিয়ে। তার ইনিংসে সাতটি চার ও তিনটি ছয়। ইবাদতের বলে উইকেটের পেছনে মুশফিককে ক্যাচ দেন নাফি।

তবে তার চেয়েও চিত্তাকর্ষক ইনিংস খেলেছেন বাঁ-হাতি ওপেনার মোহাম্মদ পারভেজ হোসেন। মাত্র ৩০ বলে ৫০* পূর্ণ করেন পারভেজ। এবারের বিপিএলে তার দ্বিতীয় ফিফটি এবং চিটাগংয়ের ১০০ রান আসে হাত ধরাধরি করে। ছয়টি চার ও চারটি ছয়ের সহায়তায় ৪৯ বলে ৭৮ রান করে শেষাবধি অপরাজিত থাকেন পারভেজ। ওয়ানডাউনে নামা ডান-হাতি ব্যাটার ইংল্যান্ডের গ্রাহাম ক্লার্কের অবদান ২৩ বলে ৪৪ রান। তার ইনিংসে দুটি চার ও তিনটি ছয়। শেষ ওভারে চিটাগং তিন বলের ব্যবধানে দুই উইকেট হারায় ক্লার্ক ও শামীম হোসেনের (২)। একটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ আলী ও ইবাদত হোসেন।

প্রথম পাঁচ ওভারে ৫১ রান করা চিটাগং ১০ ওভারে ৯৩ রান করে। এভাবে তাদের ইনিংস এগোয় ১৫ ওভারে ১৪১/১ এবং ২০ ওভারে ১৯৪/৩। হাতে সাত উইকেট থাকার পরও তাদের ২০০ পার করতে না পারার জন্য চিটাগং দায়ী করতে পারে শুধু নিজেদের। আরেকটু ঝুঁকি নিয়ে তাদের ব্যাটাররা যদি সাহসী ব্যাটিং করতেন, তাহলে কাজটা অসম্ভব ছিল না।

 (স্কোর কার্ড খেলার পাতায়)


বিপিএল

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম