মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন পান্তকে রক্ষা করা সেই তরুণ
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:৪০ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
টিম ইন্ডিয়ার তারকা ক্রিকেটার ঋষভ পান্তকে গাড়ি দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করা তরুণ রজত এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন পান্ত। সেই সময় দুই তরুণ, রজত কুমার ও নিশু, প্রাণপণ চেষ্টা করে উল্টে যাওয়া গাড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন তাকে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, দুর্ঘটনার সময় রজত ও নিশু জানতেন না যে যাকে তারা সাহায্য করছেন, তিনি ভারতের এক ক্রিকেট তারকা। তারা পুলিশকে খবর দেন এবং দ্রুত পান্তকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন।
হাসপাতালে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর পান্ত বলেন, রজত ও নিশু তার জন্য যেন ‘দেবদূত’ হয়ে এসেছিলেন। তিনি কৃতজ্ঞচিত্তে জানান, এই দুই তরুণের প্রতি তিনি চির ঋণী থাকবেন। পরবর্তীতে তাদের সাহসিকতার স্বীকৃতি হিসেবে পান্ত দুইজনকে দুটি স্কুটার উপহার দেন।
কিন্তু দুই বছর পর সেই রজতই এখন মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। রবিবার খবর আসে, ২৫ বছর বয়সী রজত ও তার বান্ধবী মনু কাশ্যপ একসঙ্গে বিষ পান করেছেন। মনু, যার বয়স ২১, তার সঙ্গে রজতের সম্পর্ক পরিবারের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সম্পর্ক ভাঙনের হতাশা থেকেই তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাদের গ্রাম বুছা বস্তির এক বাসিন্দা মাটিতে ছটফট করতে দেখেন দু'জনকে এবং দ্রুত অন্যদের খবর দেন। পরিবারের সদস্যরা পৌঁছানোর আগেই পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে ওঠে। দু'জনকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মনুর পরিবার তাকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে, সেখানেই মঙ্গলবার ভোররাতে তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে, রজতের অবস্থাও সংকটজনক ছিল, তবে ধীরে ধীরে কিছুটা উন্নতি দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মনুর মৃত্যুর পর, তার পরিবারের পক্ষ থেকে রজতের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। মনুর মা অভিযোগ করেন, রজত তার মেয়েকে বিষ খাইয়ে হত্যা করেছে। রজত ও মনু সামাজিক বৈষম্যের শিকার হয়েছেন কি না, তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, যে গ্রাম একসময় রজতের সাহসিকতা নিয়ে গর্ব করত, এখন সেই গ্রামেই তাকে নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।
মুজাফফরনগরের এসপি সত্যনারায়ণ জানান, মনুর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করার আগে পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ছিল না। পরে তারা একটি লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেন।
হাসপাতালের সূত্র অনুযায়ী, রজত ও মনু অত্যন্ত বিষাক্ত একটি কীটনাশক পান করেছিলেন। যদিও রজতের শারীরিক অবস্থার ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। প্রজ্ঞা হাসপাতালের চিকিৎসক দীনেশ ত্রিপাঠী বলেন, ‘আমরা তড়িঘড়ি চিকিৎসা শুরু করি। মনুর পরিবার তাকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়, তবে রজত আমাদের পর্যবেক্ষণে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।’
