Logo
Logo
×

খেলা

লাওতারোর গোলে বায়ার্নকে স্তব্ধ করে শেষ চারে ইন্টার মিলান

Icon

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৮ এএম

লাওতারোর গোলে বায়ার্নকে স্তব্ধ করে শেষ চারে ইন্টার মিলান

শেষ বাঁশি একটু আগে সান সিরো যেন থমকে গেল। শেষ মুহূর্তে কিংসলে কোমান একটা ভলি করেছিলেন বটে, তবে তা গোলপোস্টের ওপর দিয়ে চলে গেল। সঙ্গে সঙ্গে যেন প্রাণ ফিরে এলো স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে। পুরো সান সিরো তখন আবারও গর্জে উঠল। বায়ার্নকে ২-২ গোলে রুখে দেওয়া গেছে, সামগ্রিক লড়াইয়ে ৪-৩ গোলে জয় নিয়ে শেষ চারে উঠে গেছে ইন্টার মিলান।

নেরাজ্জুরিরা চলতি মৌসুমের শুরু থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যেভাবে এগিয়ে গেছে, তাতে তাদের কেউ সহজভাবে নেওয়ার ভুল করেনি, করবেও না। তবে কোয়ার্টার ফাইনালের দুই লেগের লড়াইয়ে ইন্টার অনেক সময় ভাগ্যকেও পাশে পেয়েছে। ভাগ্য অবশ্য সাহসীদেরই সঙ্গ দেয়, ইন্টারও ওই সাহসীদের দলেই ছিল। প্রতিটি কঠিন মুহূর্তে তারা নিজেদের প্রমাণ করেছে। গত রাতে যেমন করল!

আর তাতেই ইউরোপকে একটা বার্তা দিয়ে রাখল দলটা। লাওতারো মার্তিনেজের ভাষাতেই শুনুন, ‘এ এক মহাকাব্যিক ম্যাচ। ইন্টার কখনো মরে না। ইন্টারের ব্যক্তিত্ব আছে, হৃদয় আর মস্তিষ্কও আছে। ইন্টার এবার বড় কিছুর জন্য তৈরি।’

মার্তিনেজের এমন উল্লাস, এমন দম্ভের কারণ ছিল বৈকি। হ্যারি কেইন ম্যাচে এগিয়ে দিয়েছিলেন বায়ার্নকে, তাতে দুই লেগের লড়াইয়ে ২-২ সমতা চলে এসেছিল। তবে সে মুহূর্তে দলকে আবার এগিয়ে দেন লাওতারো। তার দারুণ হেডার ইয়োশুয়া কিমিখের গায়ে লেগে ফিরে এলে মার্তিনেজ দারুণভাবে জালে জড়ান। তারপর এডভারটাইজিং বোর্ড টপকে উদযাপনে মাতেন তিনি।

এর কিছুক্ষণ পর হাকান চালানওগলুর কর্নার থেকে বেনজামিন পাভার্ড হেডে গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। পুরো সান সিরো তখন উৎসবে মাতোয়ারা। লড়াইয়ে ফিরতে হলে ২৯ মিনিটে নিদেনপক্ষে ২ গোল করতে হতো বায়ার্নকে, ইন্টারের ঘরের মাঠে কাজটা যে সহজ নয়!  

বায়ার্ন অবশ্য হাল ছাড়েনি। এরিক ডায়ার ৭৬ মিনিটে গোল করে বসেন। ম্যাচটা সমতায় ফিরিয়ে অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যাওয়া থেকে এক গোলের দূরত্বে চলে এসেছিল বাভারিয়ানরা। এরপরও হলো না। তাই আফসোসই সঙ্গী হয় দলটার। বায়ার্ন কোচ ভিনসেন্ট কোম্পানি বলেন, ‘আজকে অনেক কিছু ঠিকঠাক লেগে গিয়েছিল।’ তবুও শেষ পর্যন্ত আফসোসটা আরও বাড়ে দলটার, যখন মনে পড়ে ফাইনালটা তাদেরই মাঠে! তিনি আরও বলেন, ‘বাস্তবতা খুব কঠিন যে আমরা এবার ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল খেলতে পারবো না।’  

বায়ার্ন প্রথম লেগে অনেক সুযোগ নষ্ট করেছিল, বিশেষ করে হ্যারি কেইন। এবারও তারাই সুযোগ বেশি তৈরি করেছিল। প্রথমার্ধে মাইকেল ওলিসের সঙ্গে টমাস মুলারের সমন্বয়ে ইন্টার রক্ষণ অন্তত তিনবার কাঁপেছিল। তবে শেষ মুহূর্তে আলেসান্দ্রো বাস্তোনির দুর্দান্ত ট্যাকল ইন্টারকে বাঁচায়।  

ম্যাচে গোল করে বায়ার্নকে এগিয়ে দিয়েছিলেন হ্যারি কেইন। ফেদেরিকো দিমারকো একটু পেছাতে পেছাতে তার শট আটকাতে পারেননি। তারপরেই মার্তিনেজ ইন্টারকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন। এরপর পাভার্ডের গোল ইন্টারের ইতিহাসের নতুন অধ্যায় লিখে দেয়।  

বায়ার্নের হয়ে মুলারও আরেকটি সুযোগ নষ্ট করেন। সেটা কাজে লাগাতে পারলে হয়তো ম্যাচের মোড়টাই ঘুরে যেত । এই ম্যাচেই চ্যাম্পিয়নস লিগের সর্বকালের সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলা তালিকায় মুলার মেসির পাশে চলে এলেন। তবে মৌসুম শেষে মুলার বায়ার্ন ছাড়বেন, আর হয়তো এমন বড় মঞ্চে তাকে দেখা যাবে না।  

ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ঝড়ো বাতাস আর বৃষ্টিতে খেলা কঠিন হয়ে গিয়েছিল। নিকোলো বারেল্লা ও হেনরিখ মখিতারিয়ানেরা তাদের সেরা ফুটবল খেলতে পারেননি। তবুও ইন্টার খেলোয়াড়রা সহজ কাজগুলো নিখুঁতভাবে করেছেন, যেখানে বায়ার্ন ব্যর্থ।  

অতিরিক্ত সময়ের শেষদিকে হ্যারি কেইনের একটি দুর্দান্ত সুযোগ এসেছিল। গোলমুখ ফাঁকা ছিল, কিন্তু কোনাকুনি শটে তিনি বল বাইরে মারেন। ফলে বায়ার্ন আর সমতা ফেরাতে পারেনি। ইন্টার মিলান চলে যায় সেমিফাইনালে।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বায়ার্ন মিউনিখ ইন্টার মিলান

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম