ভারত-পাকিস্তানের সীমান্তে দুই পক্ষের উত্তেজনার ছায়া এবার পড়ল আইপিএলেও। বৃহস্পতিবার ধর্মশালায় পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের ম্যাচটি বাতিল হয়ে যায়। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, মাঠে ফ্লাডলাইট কাজ করছিল না। কিন্তু এই ধর্মশালা শহরটি জম্মু থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে। আর সেখানেই কয়েক ঘণ্টা আগেই বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
আগামী রবিবার পাঞ্জাব ও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল এই ধর্মশালাতেই। তবে সেটি এখন সরিয়ে নেওয়া হয়েছে অন্য ভেন্যুতে। ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজীব শুক্লা বৃহস্পতিবার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকাকে বলেছেন, ‘আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি, সরকারের সঙ্গে কথা বলছি। আইপিএলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামীকাল (শুক্রবার) জানানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি প্রতিদিনই বদলাচ্ছে। আমরা যা নির্দেশ পাব, তা-ই করব। সব পক্ষকে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। এই মুহূর্তে আমাদের প্রধান লক্ষ্য খেলোয়াড়, সমর্থক ও সংশ্লিষ্ট সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’
পত্রিকাটি আরও জানিয়েছে, বিসিসিআই এখনো সব দরজা খোলা রেখেছে। পুরো টুর্নামেন্ট স্থগিত করা হতে পারে, অথবা সূচিতে বড় পরিবর্তন আনা হতে পারে।
চলতি আইপিএল শুরু হয়েছিল ২২ মার্চ। ১০ দলের এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন বিশ্বের অনেক বড় ক্রিকেট তারকা। আইপিএলের ফাইনাল হওয়ার কথা ২৫ মে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে। এই ম্যাচ টিভিতে বিশ্বের কোটি কোটি দর্শক দেখবেন বলে আশা করা হয়।
অস্ট্রেলিয়ার পত্রিকা দ্য এজ জানিয়েছে, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ও দেশটির ক্রিকেটারদের অ্যাসোসিয়েশন নিয়মিতভাবে আইপিএলে খেলা খেলোয়াড়দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে।
এবারের আইপিএলে খেলছেন অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, জশ হেইজেলউড, ট্র্যাভিস হেড ও মিচ মার্শ। পাঞ্জাব দলের কোচও অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং।
পাকিস্তান ইতিমধ্যে নিজেদের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগ পিএসএলের বাকি ম্যাচগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নিয়েছে। কারণ তাদেরও মনে হয়েছে, খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন কঠিন।
ভারত ও পাকিস্তান এর আগেও তিনটি বড় যুদ্ধ করেছে। যার মধ্যে দুটি হয়েছে কাশ্মীর নিয়ে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হওয়ার পর থেকেই কাশ্মীর নিয়ে দুই দেশের বিরোধ চলছে।
সম্প্রতি কাশ্মীরে ভয়াবহ এক হামলার প্রতিশোধ নিতে ভারত বুধবার সকালে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে দুই দেশের মধ্যে আবার উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। পাকিস্তান অবশ্য এই হামলার দায় অস্বীকার করেছে।
বুধবার থেকে এখন পর্যন্ত সীমান্তের দুই পাশে নিহত হয়েছেন অন্তত ৪৮ জন। এটি সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা বলে মনে করা হচ্ছে।