‘গাজার ঘটনা আমার পুরো শরীরকে ব্যথা দেয়’ – গার্দিওলার কণ্ঠে মানবতার বার্তা

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৫, ০৪:০৬ পিএম

ম্যানচেস্টার সিটি ম্যানেজার পেপ গার্দিওলা এবার বিরল এক সম্মান পেলেন। ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক একটি ডিগ্রি দিয়েছে। মাঠের বাইরে ও শহরের জন্য তার অবদান বিবেচনায় নিয়ে তাকে এই সম্মান দেওয়া হয়।
এই অনুষ্ঠানে গার্দিওলা আলোচনায় চলে এসেছেন গাজা নিয়ে আবেগঘন এক বক্তৃতা দিয়ে। ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধের মধ্যে গাজার মানুষের কষ্ট নিয়ে তিনি কথা বলেন কোনো রাখঢাক না রেখেই।
তিনি বলেন, ‘গাজায় যা হচ্ছে, তা দেখতে অনেক কষ্ট হয়। এটা আমার পুরো শরীরকে ব্যথা দেয়। এটা কোনো আদর্শ বা রাজনৈতিক মতাদর্শের বিষয় নয়। এটা কারো সঠিক বা ভুল হওয়ারও বিষয় নয়। আসুন একটু ভাবি। এটা জীবনের প্রতি ভালোবাসা, পাশের মানুষটির জন্য যত্ন নেওয়া। চার-পাঁচ বছর বয়সী শিশু যখন বোমায় মারা যায় কিংবা হাসপাতাল আর হাসপাতাল থাকে না, তখন আমরা ভাবি এটা তো আমাদের বিষয় নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ভাবতে পারি এটা আমাদের বিষয় না। কিন্তু সাবধান, পরবর্তীটা আমাদেরই হবে। পরবর্তী চার-পাঁচ বছরের শিশুটি আমাদেরই হবে। দুঃখিত, কিন্তু যখন থেকে গাজায় শিশুদের দুঃস্বপ্ন শুরু হয়েছে, আমি তখন থেকে প্রতিদিন সকালে নিজের সন্তানদের মুখ দেখে ভয় পাই। হয়তো এই দৃশ্যটা আমাদের জীবন থেকে অনেক দূরে মনে হতে পারে। আমরা ভাবি, আমরা কিছুই করতে পারি না। কিন্তু আমি বলি, এটা নিয়ে ভাবা উচিত।’
গার্দিওলা আরও বলেন, ‘একটা গল্প মনে পড়ে। এক জঙ্গল পুড়ছে। সব প্রাণী ভয়ে পালাচ্ছে। কিন্তু একটা ছোট পাখি বারবার সমুদ্র থেকে পানি এনে আগুনে ঢালে। একটা সাপ তাকে দেখে হেসে বলে, ভাই, তুই এই আগুন নেভাতে পারবি না। পাখিটি বলে, হ্যাঁ আমি জানি। সাপ আবার জিজ্ঞেস করে, তাহলে এতবার কেন করছিস? পাখিটি জবাব দেয়, আমি শুধু আমার অংশটুকু করছি।’
তিনি বলেন, ‘পাখিটা জানে সে আগুন নেভাতে পারবে না, কিন্তু কিছু না করে বসে থাকতে রাজি নয়। একটা পৃথিবী যেখানে সবাই ভাবে আমরা খুব ছোট, কিছু করতে পারি না – সেই জায়গায় এই গল্প শেখায়, আসল ক্ষমতা হলো ইচ্ছার। শেখায় সময় হলে চুপ করে বসে না থেকে উঠে দাঁড়াতে হয়।’
গার্দিওলার এই বক্তব্যের সময় পুরো হল ছিল নীরব। অনেকে আবেগে চোখ মুছেছেন। গাজায় যুদ্ধ আবার শুরু হয়েছে মার্চ ২০২৫-এ, যখন ইসরায়েল অতর্কিত হামলা চালায়। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এই হামলায় চারশর বেশি মানুষ মারা যায়।