Logo
Logo
×

খেলা

তাওহিদরা পুরস্কার পাবেন কবে?

Icon

মোজাম্মেল হক চঞ্চল

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ০৯:৫৬ এএম

তাওহিদরা পুরস্কার পাবেন কবে?

ছবি: সংগৃহীত

প্রায় বছর পেরিয়ে গেছে। অপেক্ষার প্রহর গুণছেন ১২ ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েও পদক পাননি এই দেশবরেণ্য ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা। ২০২৪ সালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন ১২ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব।

গত বছরের ৫ আগস্ট মনোনীতদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার কথা ছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর। ওইদিন শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে যান। ফলে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি আর হয়নি।

আজীবন সম্মাননা পেয়েছিলেন বর্ষীয়ান ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব তানভীর মাজহারুল ইসলাম তান্না। ক্রীড়া সংগঠক বিভাগে কলাবাগান ক্লাবের বর্ষীয়ান সংগঠক আতিকুল হাবিব ও সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম, খেলোয়াড় ক্যাটাগরিতে শুটার শাকিল আহমেদ, ভারোত্তোলক ফিরোজা পারভীন ও সাঁতারু মাহফিজুর রহমান সাগর, উদীয়মান খেলোয়াড় ক্যাটাগরিতে ক্রিকেটার তাওহিদ হৃদয় ও অ্যাথলেট জহির রায়হান, ধারাভাষ্যকার বিভাগে কুমার কল্যাণ, ফেডারেশন শ্রেণিতে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশন এবং পৃষ্ঠপোষক বিভাগে হামিদ গ্রুপের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। ক্রীড়া সাংবাদিক বিভাগে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের দিলু খন্দকারের নাম অনুমোদন করে প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছিল।

বগুড়ার ছেলে তাওহিদ হৃদয়। বাংলাদেশের প্রথম অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সদস্য। ২০২৩ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় হৃদয়ের। স্প্রিন্টার জহির রায়হান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ২৪টি স্বর্ণ, চারটি রুপা ও তিনটি ব্রোঞ্জ জিতেছেন। এশিয়ান ইনডোর চ্যাম্পিয়নশিপে ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে রুপা জিতে আলোচনায় আসেন শেরপুরের এই কৃতী সন্তান।

খেলোয়াড় বিভাগে তিনজনের অন্যতম শুটার শাকিল। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি স্বর্ণ, চারটি রুপা ও পাঁচটি ব্রোঞ্জ এবং জাতীয় পর্যায়ে ১৩টি স্বর্ণের সঙ্গে পাঁচটি রুপা ও দুটি ব্রোঞ্জপদক জেতা শাকিলের জন্ম ১৯৯৫ সালে খুলনার ডুমুরিয়ায়। পাবনার ছেলে সাঁতারু মাহফিজুর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি স্বর্ণের সঙ্গে দুটি রুপা ও ১০টি ব্রোঞ্জ জয়ের পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ে ৬৮টি স্বর্ণ জিতেছেন। সেই সঙ্গে ২১টি রুপা ও ১০টি ব্রোঞ্জ রয়েছে তারা ঝুলিতে।

খেলোয়াড় বিভাগে পুরস্কার পাওয়া আরেক ক্রীড়াবিদ ভারোত্তোলক ফিরোজা খাতুন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাউথ এশিয়ান গেমসে দুটি ব্রোঞ্জপদক রয়েছে কেরানীগঞ্জের এই ভারোত্তোলকের। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ে ২২টি স্বর্ণ ও ছয়টি রুপা জেতেন তিনি।

সংগঠক হিসাবে সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনসহ (বাফুফে) বেশকটি ক্রীড়া সংস্থা ও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। তানভীর মাজহারুল সত্তর দশকের একজন তারকা ক্রিকেটার। তান্না পান আজীন সম্মাননা। তান্না ক্রিকেটার হলেও স্বাধীনবাংলা ফুটবল দলের ম্যানেজার ছিলেন। খেলোয়াড় হিসাবে ক্যারিয়ার শেষ করার পর সংগঠক হিসাবে কাজ করেন তিনি। ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব আবাহনী ক্রীড়া চক্রের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিসিবির সাধারণ সম্পাদক ও পরিচালকও ছিলেন তান্না।

পৃষ্ঠপোষক হিসাবে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে হামিদ গ্রুপকে। এই গ্রুপ ঢাকার কেরানীগঞ্জে প্রফেসর হামিদুর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠা করেছে। এছাড়া শুটিং ফেডারেশনে আন্তর্জাতিক জিমনেশিয়াম, হামিদুর রহমান জাতীয় ইয়ুথ শুটিং প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে।

আশির দশকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার দেওয়া শুরু হলেও নব্বইয়ের দশকের শুরুতে তা বন্ধ হয়ে যায়। শেখ কামালের নাম যুক্ত করে ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার আবার চালু হয় ২০২১ সালে। ওই বছর ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য সাত ক্যাটাগরিতে ১০ ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও দুই প্রতিষ্ঠান এবং ২০২২ সালে নয় ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও দুই প্রতিষ্ঠানকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

এছাড়া ২০২৩ সালে ১১ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও এক প্রতিষ্ঠানকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কার বিজয়ী প্রত্যেকে এক লাখ টাকা, একটি ক্রেস্ট ও সনদ পেয়ে থাকেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পুরস্কার আবার আগের নামকরণে ফিরে যায়। শেখ কামালের নাম বাদ দিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার নামকরণ হয়।

২০২৫ সালের পুরস্কারের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নাম চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। গত বছরের পুরস্কার দেওয়া হবে কি না এ নিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কেউ মুখ খুলতে চাচ্ছেন না। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া দেশের বাইরে থাকায় মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত জানা সম্ভব হয়নি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম