|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বিশ্ব ফুটবলে খেলোয়াড়দের উপর অতিরিক্ত ম্যাচ খেলার চাপ নিয়ে মুখ খুলেছে আন্তর্জাতিক ফুটবলারদের সংগঠন ফিফপ্রো। সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক আলেক্স ফিলিপস বলেন, শীর্ষস্থানীয় অনেক ফুটবলার এই বিষয়ে কিছু বলতে ভয় পান, কারণ তারা মনে করেন এতে তাদের ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
শুক্রবার আমস্টারডামে ৫৮টি দেশের খেলোয়াড় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক করে ফিফপ্রো। সেখানে মূল আলোচনার বিষয় ছিল, কীভাবে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা খেলোয়াড়দের মতামত উপেক্ষা করে যাচ্ছে।
এই বৈঠক হয় মাত্র দুই সপ্তাহ আগে শেষ হওয়া যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত ৩২ দল নিয়ে প্রথম ক্লাব বিশ্বকাপের পর। এই টুর্নামেন্টকে বড় সাফল্য হিসেবে দাবি করেছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। কিন্তু ফিফপ্রো বলছে, এই টুর্নামেন্ট খেলোয়াড়দের উপর আরও বাড়তি চাপ তৈরি করেছে।
আলেক্স ফিলিপস বলেন, ‘ক্লাব বিশ্বকাপের আগেই আমি কিছু তারকার সঙ্গে কথা বলি। তারা বলছিল, কতদিন ধরে তারা কোনো বিশ্রাম পাননি। একজন তো বলল, ‘‘আমি কেবল চোট পেলে বিশ্রাম পাব’’। অনেকেই হতাশ ছিল, কথা বলার ইচ্ছা থাকলেও তারা আর কিছু বলতে চায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরপর দেখা যায়, সেই একই খেলোয়াড়দের দুই সপ্তাহ পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও বার্তা দিতে হচ্ছে। বলছে, ‘‘আমরা মনে করি ক্লাব বিশ্বকাপ চমৎকার’’। কারণ তাদের ক্লাব বা মালিক পক্ষ তা বলাচ্ছে। খেলোয়াড়রা এখন এমন এক পরিস্থিতিতে আছে, তারা চাইলে কথা বলতে পারে, কিন্তু তার জন্য মূল্য দিতে হতে পারে।’
ফিফপ্রো এক বিবৃতিতে জানায়, খেলোয়াড়দের মৌলিক চাহিদা উপেক্ষা করে কেবল ক্লাব বিশ্বকাপ নিয়েই ব্যস্ত ফিফা। তারা বলেছে, ‘যে সংস্থা নিজেকে বিশ্ব ফুটবলের নেতা দাবি করে, সেই সংস্থার পক্ষে খেলোয়াড়দের প্রয়োজনকে এড়িয়ে যাওয়া একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
ফিফপ্রো আরও জানিয়েছে, অতিরিক্ত ম্যাচের চাপ, গরমের মধ্যে খেলার ঝুঁকি এবং খেলোয়াড়দের সামাজিক অধিকার নিয়ে অবহেলার মতো বিষয়ে ফিফা কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না। এই কারণে গত বছর ফিফপ্রো ইউরোপীয় কমিশনের কাছে একটি অভিযোগও করেছিল। অভিযোগে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ম্যাচ সূচি পরিচালনায় ফিফা একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
ফিফপ্রো এর প্রেসিডেন্ট, আর্জেন্টিনার সার্জিও মার্চিও বলেন, ‘ফিফার নেতৃত্বে ইনফান্তিনো এক ধরনের স্বৈরতান্ত্রিক শাসন চালাচ্ছেন।’
তবে ফিফপ্রো-র এই সমালোচনার জবাবে ফিফাও পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে। তারা বলেছে, ‘ফিফপ্রো নেতৃত্ব এখন এমন ভাষা ব্যবহার করছে, যা বিভেদ সৃষ্টি করে। তারা গঠনমূলক সংলাপ নয়, বরং জনসম্মুখে বিরোধ তৈরি করছে।’
ফিফার বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ফিফপ্রো এখন এমন একটি পথ বেছে নিয়েছে, যা কেবল তাদের নিজস্ব স্বার্থ ও অবস্থান রক্ষা করে। অথচ আমরা সংলাপ চেয়েছিলাম, তাদের নিউ ইয়র্কের বৈঠকে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছিল, কিন্তু তারা আসেনি।’
