৮৯ বছরে না ফেরার দেশে অস্ট্রেলিয়ার পুনর্জাগরণের ‘মাস্টারমাইন্ড’
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১১:৫০ এএম
বব সিম্পসনের (বাঁ থেকে দ্বিতীয়) অধীনেই অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল তাদের প্রথম বিশ্বকাপ/ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক বব সিম্পসন আর নেই। শনিবার ৮৯ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। খেলোয়াড় ও কোচ— দুই ভূমিকাতেই অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে তার অবদান ছিল অনন্য।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চেয়ারম্যান মাইক বেয়ার্ড শোকবার্তায় বলেন, ‘বব সিম্পসন ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের অন্যতম সেরা। যারা তাকে খেলতে দেখেছেন বা তার জ্ঞান থেকে উপকৃত হয়েছেন, তাদের সবার জন্য আজকের দিনটি খুব দুঃখজনক।’
১৯৫৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় সিম্পসনের। ক্যারিয়ারে তিনি খেলেছেন ৬২ টেস্ট, করেছেন ৪৮৬৯ রান। গড় ছিল ৪৬.৮১। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১০টি সেঞ্চুরি ও ২৭টি অর্ধশতক।
প্রথমদিকে অলরাউন্ডার হলেও ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন নির্ভরযোগ্য ওপেনার। ১৯৬৪ সালে এক মৌসুমে ১৩৮১ রান করে গড়েছিলেন রেকর্ড। সেবার ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলেন ক্যারিয়ারসেরা ৩১১ রানের ইনিংস। এরপর আরও কয়েকটি ডাবল সেঞ্চুরি করেন তিনি।
শুধু ব্যাটার নন, ছিলেন কার্যকর লেগস্পিনারও। টেস্টে নিয়েছেন ৭১ উইকেট। ভারতের বিপক্ষে শেষ টেস্টে নিয়েছিলেন ৮ উইকেট, যা তার সেরা বোলিং ফিগার। ওই ম্যাচেই পেয়েছিলেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় পাঁচ উইকেট। স্লিপে ছিলেন দারুণ নির্ভরযোগ্য ফিল্ডারও।
১৯৬৮ সালে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের পর প্রথমবার অবসর নেন তিনি। তবে ১৯৭৭ সালে আবার মাঠে ফেরেন। কারণটা অবশ্য বেশ মহৎ ছিল। কেরি প্যাকারের ‘বিদ্রোহী লিগ’ ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেটে খেলতে অস্ট্রেলিয়ার অধিকাংশ ক্রিকেটার চলে যান, ফলে উপায়ান্তর না দেখে তাকেই ফেরায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। তিনি ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দলকে নেতৃত্ব দেন। এরপর আবারও সরে দাঁড়ান।
খেলোয়াড়ি জীবনের পর প্রথম পূর্ণকালীন কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন অস্ট্রেলিয়া দলের। ১৯৮০-৯০ দশকে অ্যালান বর্ডার ও মার্ক টেলরের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ার পুনর্জাগরণের ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিলেন তিনি।
তার কোচ হওয়ার আগে ১৪ টেস্টে জেতেনি অস্ট্রেলিয়া। ৩ বছর ধরে ছিল না কোনো সিরিজ জয়ও। দলটার মানসিক দৃঢ়তাও ছিল একেবারে তলানিতে। বিশ্বকাপের ঠিক এক বছর আগে ১৯৮৬ সালে তাই তার দ্বারস্থ হয় অজি ক্রিকেট বোর্ড। সেই দলটাকেই তিনি অপ্রতিরোধ্য করে তোলেন। তার কোচিংয়েই পরের বছর অস্ট্রেলিয়া জেতে তাদের প্রথম বিশ্বকাপ। নব্বইয়ের দশকে অস্ট্রেলিয়ার অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠার পেছনেও তার ভূমিকা ছিল অসামান্য।
