রকেট উৎক্ষেপণের সময় এত পরিমাণ পানি ছাড়ার কারণ কী
আইটি ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:০৫ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রকেট উৎক্ষেপণের দৃশ্য চোখের সামনে উঠলে সাধারণত দেখা যায় আগুন আর ধোঁয়ার বিশাল ছোঁয়া, যেখানে রকেটের ইঞ্জিন মহাকাশে রকেটের বিশাল ভরের ধাতব কাঠামো ঠেলে দেয়। তবে অনেকেই জানেন না, রকেট ছোড়ার ঠিক আগে নাসা লঞ্চপ্যাডে এক বিশাল ‘জলপ্রপাত’ ছেড়ে দেয়। উৎক্ষেপণের কয়েক সেকেন্ড আগে সংস্থা প্রায় সাড়ে চার লাখ গ্যালন পানি ব্যবহার করে, যা একটি অলিম্পিক সুইমিং পুলের দুই-তৃতীয়াংশের সমান।
রকেট উৎক্ষেপণের সময় উৎপন্ন শব্দ প্রায় দুইশো ডেসিবেল পর্যন্ত পৌঁছায়, যা জেট ইঞ্জিন বা বজ্রপাতের চেয়ে অনেক তীব্র। এই তীব্র শব্দ শুধু মানুষের কানে ব্যথা দেয় না, বরং রকেটের যন্ত্রপাতি ও কাঠামোকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই নাসা ‘সাউন্ড সাপ্রেশন সিস্টেম’ তৈরি করেছে, যা লঞ্চের আগে পানি ছড়িয়ে শব্দ ও তাপ শোষণ করে রকেট এবং লঞ্চপ্যাডকে সুরক্ষিত রাখে।
রকেট উৎক্ষেপণ ব্যয়বহুল। পানি ছোঁড়া এবং শব্দ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার খরচও এই ব্যয়ের অংশ। কিন্তু মিশনের নিরাপত্তার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নাসা প্রতিনিয়ত বড়, শক্তিশালী এবং শব্দময় রকেটের জন্য এই সিস্টেম উন্নত করছে। সম্প্রতি আয়োজিত আর্টেমিস মিশনের পরীক্ষাতেও এর কার্যকারিতা দেখা গেছে।
সিস্টেমটি কাজ করে এমনভাবে যে, উৎক্ষেপণের কয়েক সেকেন্ড আগে বিশাল ট্যাঙ্ক থেকে লঞ্চপ্যাডে বিপুল পানি ফেলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, নাসার ‘স্পেস লঞ্চ সিস্টেম’ (SLS) পরীক্ষায় এক মিনিটের কম সময়ে সাড়ে চার লাখ গ্যালন পানি ছোড়া হয়। রকেট ইঞ্জিনের উত্তাপ দ্রুত পানি বাষ্পে পরিণত করে, যা ঘন বাষ্পের মেঘের আকারে লঞ্চপ্যাডকে ঢেকে দেয়। এর ফলে শব্দ প্রায় ১৪০ ডেসিবেল পর্যন্ত কমে আসে এবং তাপও নিয়ন্ত্রিত হয়।
রকেটের বুস্টার তাপ উৎপাদন করে যা তিন হাজার তিনশ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছায়। সাধারণ গাড়ির তুলনায় রকেটের জ্বালানি খরচ ২০ লাখ গুণ বেশি। সঠিক ব্যবস্থা না নিলে এই তাপ লঞ্চপ্যাডে আগুন লাগাতে বা অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। পানি ছোঁড়ার ব্যবস্থা এই বিপদকে প্রতিরোধ করে।

