নওগাঁ-৪: শিক্ষক-ছাত্রের ভোটযুদ্ধ
নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে নির্বাচনের প্রচারণা। প্রতীক বরাদ্দের পর নওগাঁ-৪ আসনে (মান্দা) আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন দল ও জোটের প্রার্থীরা নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগ করে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রার্থীরা উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রচারণার মাঠে নেমেছেন। চলছে লিফলেট বিতরণ আর ভোটারদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়। নিজ নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন কর্মী-সমর্থকরা।
সাদা-কালো পোস্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট ও হাট-বাজারগুলো। এ আসনে লড়াই হবে মূলত আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক এবং বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক এমপি সামসুল আলম প্রামাণিকের মধ্যে। তাদের দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক শিক্ষক-ছাত্র। এ আসনে ১৯৯১ সালে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মাওলানা নাসির উদ্দিন জিহাদির কাছে পরাজিত হন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত পরপর তিনবার নির্বাচিত হন বিএনপির সামসুল আলম প্রামাণিক। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল লতিফ শেখ।
স্বতন্ত্র থেকে মনোনয়ন নেন মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক। সে সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রায় ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী বিএনপির মনোনীত সামসুল আলম ও আওয়ামী লীগ মনোনীত আবদুল লতিফ শেখকে পরাজিত করে বিজয়ী হন মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক। ওই নির্বাচনে আবদুল লতিফ শেখ প্রায় ৩৬ হাজার ভোট পান। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আবার মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক নির্বাচিত হন। এর কিছুদিন পর তিনি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী পদে ভূষিত হন। মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক মন্ত্রী হয়েও গত ১০ বছরে এলাকার কাক্সিক্ষত তেমন উন্নয়ন করতে পারেননি। জেলার অন্য উপজেলা থেকে উন্নয়নের দিকে এ উপজেলাটি অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তাই এলাকাবাসী এবার দেখেশুনে ও বুঝে ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা প্রার্থী পরিবর্তন করে নতুন মুখের বিজয়ী দেখতে চাইছেন। এবার নির্বাচনে দেখেশুনে যোগ্য প্রার্থীকে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে জানিয়েছেন সাধারণ ভোটাররা। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে এলাকার উন্নয়নসহ বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন আ’লীগের মনোনীত প্রার্থী। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও নৌকাকে জয়ী করার আহ্বান জানান তিনি। বিএনপির মনোনীত সাবেক এমপি সামসুল আলম প্রামাণিক বলেন, আমি বিশ্বাস করি মান্দার জনগণ ধানের শীষে ভোট দিয়ে আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন।
তার কারণ হিসেবে আমি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও তিনবার এমপি থাকাতে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। অতীতে কোনো এমপি, এমনকি বর্তমান মন্ত্রীও সে কাজ করতে পারেননি। জনগণ এলাকার উন্নয়ন দেখতে প্রার্থীর পরিবর্তন চাইছেন।
উল্লেখ্য, এ আসন থেকে আ’লীগ ও বিএনপি ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি (জেপি) ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ মোট ছয়জন প্রার্থী নির্বাচন করছেন।
